
তিন গোয়েন্দার কিশোর, রবিন, মূসাকে চেনেন না এমন বাংলাদেশি পাঠক হয়তো খুবই কম আছেন। কোটি কোটি পাঠকের শৈশব রাঙিয়ে দিয়েছে এই তিন গোয়েন্দা উপন্যাস। কিশোর, রবিন, মূসা কত সময় যে উত্তেজনায় রেখেছে তা যারা বইয়ের পাতায় পাতায় ঘুরেছেন তারাই জানেন। সেই তিন গোয়েন্দার লেখক রকিব হাসান এখন হাসপাতালের বিছানায়।
তার দুটি কিডনি বিকল। রয়েছে শারীরিক বার্ধক্যজনিত অসুখ। বয়স ৭৫ এর ওপরে। ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে মাসে ৪টা।
প্রায় ৪০০ বইয়ের লেখক রাকিবের এখন চিকিৎসা করতে গিয়ে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়তে হয়েছে। যদিও সেবা প্রকাশনী রকিব হাসানের পাশে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু সেটা যথেষ্ট না বলে জানাচ্ছে পরিবার। কেননা প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
রকিব হাসানের ছেলে রাহিদ হাসান বলেন, ‘বাবার দুটো কিডনিই নষ্ট। মাসে ৪টা করে ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে। অর্থনৈতিক সংকটে যেমন পড়েছি তেমনই পড়েছি রক্তের সংকটে। বাবা যেহেতু সারাজীবন সেবা প্রকাশনীর জন্য লেখালেখি করে গেছেন, তাই সেবা প্রকাশনী আমাদের পেছনে আছে। কিন্তু সেটা যথেষ্ট না, এ অবস্থায় কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী আমাদের পাশে দাঁড়ালে ভালো হয়।’
রাহিদ হাসান আরো বলেন, ‘বাবার বয়স তো অনেক ৭৫ এর ওপরে।
বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা তো রয়েছে। নানা অসুখ রয়েছে, কিন্তু এর মাঝে দুটো কিডনিই বিকল হয়ে পড়েছে এটাই বড় সমস্যা। আর মাসে যেহেতু ৪টা ডায়ালাইসিস, সেহেতু রক্ত ম্যানেজ করতে ঝামেলা হচ্ছে। বাবার রক্তের গ্রুপ এ নেগেটিভ, এটাও পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের রক্তও দরকার।’
রকিব হাসান এখন ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দেশের জনপ্রিয় এই লেখকের পাশে দাঁড়াতে চাইলে, নিচের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে—
Name: ABUL QUASHEM MD. ABDUR RAKIB
Account No: 0921101228036
PUBALI BANK LIMITED, BASHABOO Branch, Dhaka
Bkash No. 01771-203343 রাহিদ হাসান (ছেলে)
বাংলাদেশের বইপড়ুয়াদের একটি বড় অংশের কৈশোরের নিত্যসঙ্গী তিন গোয়েন্দা। জননন্দিত এ সিরিজের স্রষ্টা রকিব হাসান। তাঁর জন্ম ১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর; কুমিল্লায়। তবে বাবার বদলির চাকরির সুবাদে ছেলেবেলা কেটেছে ফেনীতে। ফেনী থেকেই স্কুলজীবন শেষ করে তিনি ভর্তি হন কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনার পাট চুকিয়ে নিয়মমতো যোগ দিয়েছিলেন চাকরিতেই।
কিন্তু কোথাও মন টেকেনি বেশি দিন। তাই একে একে বদলেছেন বেশ কটা চাকরি। অনেক চেষ্টার পরও অফিসের বাঁধাধরা নয়টা-ছয়টার ঘড়ির কাঁটায় আটকে থাকতে পারেননি। অবশেষে সব ছেড়েছুড়ে লেখালেখি শুরু করলেন একদিন। লেখক সত্তার সঙ্গেই নিজের অচ্ছেদ্য বন্ধন টের পেলেন। তারপর তো লেখালেখিকে বেছে নিলেন পেশা হিসেবে।
হলেন পুরোদস্তুর লেখক। আজ কয়েক প্রজন্মের পাঠকের কাছে জনপ্রিয় তিনি। লেখালেখির শুরুটা সেবা প্রকাশনীতে। নামে-বেনামে লিখেছেন চার শতাধিক বই। বিশ্বসেরা ক্লাসিক বইয়ের অনুবাদ দিয়ে শুরু করেছিলেন তিনি। একে একে লিখেছেন টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ অসংখ্য জনপ্রিয় বই। তারপরও শুধু তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা হিসেবেই অসংখ্য পাঠকের হৃদয়ের মণিকোঠায় ঠাঁই পেয়েছেন এই ভীষণ প্রচারবিমুখ মানুষটি।
আজকালের খবর/আতে