বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের বাসায় গিয়ে দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছেন অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চার নেতা।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা এবং যুগ্ম সদস্যসচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ সোমবার বিকালে জ্যাকবসনের বাসায় যান।
জ্যাকবসন ছাড়াও দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর এরিক গিলান ও শীর্ষ দুজন কর্মকর্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে কক্সবাজারে গিয়ে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে এনসিপির পাঁচ শীর্ষ নেতার বৈঠকের গুঞ্জন ছড়ানোর ছয় দিনের মাথায় ঢাকায় এ বৈঠক হল।
এনসিপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
“জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ ও এনসিপির জুলাই পদযাত্রাও আলোচনায় স্থান পায়। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন রাষ্ট্রদূত জ্যাকবসন। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচন নিয়ে এনসিপির পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চান তিনি।”
এনসিপি নেতা আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে এনসিপির সঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বৈঠকটি হয়েছে। আমাদের কার্যালয় একটি কমার্শিয়াল বিল্ডিংয়ে হওয়ায় এবং নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বাসভবনে গিয়ে বৈঠকটি করেছি।
“সেখানে আমাদের চলমান রাজনীতি, ২৪ দফা কর্মসূচি ও ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।”
ওই বৈঠক নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি।
গত ৫ অগাস্ট দুপুরে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে যখন জুলাই অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় উদযাপন চলছিল, তখন খবর আসে এনসিপির পাঁচ শীর্ষ নেতা কক্সবাজারে গেছেন।
তারা হলেন, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, তার স্ত্রী এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী।
সেখানে একটি হোটেলে তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এনসিপি নেতারা তা অস্বীকার করেন। পিটার হাস সেদিন কক্সবাজারে ছিলেন, এমন কোনো প্রমাণও পরে পাওয়া যায়নি।
কাউকে না জানিয়ে কক্সবাজারে চলে যাওয়ায় পাঁচ নেতাকে শোকজ করে এনসিপি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তার জবাবে লেখেন, রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে একান্তে চিন্তা-ভাবনা করতে’ কক্সবাজারে গিয়েছিলেন।
আর হাসনাত আবদুল্লাহ তার ব্যাখ্যায়ে বলেন, ‘অসম্পূর্ণ জুলাই ঘোষণাপত্রের’ প্রতি তার ‘নীরব প্রতিবাদ’ হিসেবে তিনি কক্সবাজারে গিয়েছিলেন।
আজকালের খবর/ এমকে