প্রকাশ: শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ৪:৪৮ পিএম

নীলফামারীর ডিমলার ঝারসিংশ্বরে তিস্তার ভাঙ্গন রোধে ব্যবহারের জন্য সরবরাহকৃত পাউবোর খোয়া যাওয়া জিও ব্যাগ পাচারকালে জনতার হাতে আটককে কেন্দ্র করে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, নীলফামারীর ডিমলায় সাম্প্রতিক বন্যায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। তিস্তার উজান ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানির স্রোতের কারণে পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিহেশ্বর বাঁধসহ অনেক এলাকায় ভাঙ্গনের সৃষ্টির হয়ে ঝুকিতে পড়ে।
উপজেলা প্রশাসন, ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ বন্যা মোকাবেলায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এ সময় ডালিয়া পাউবোর কর্মকর্তারা পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের একাধিক স্থানে ভাঙ্গন রোধে তাদের সরবরাহকৃত প্রায় দুই হাজার জিও ব্যাগ সরবরাহ করেন। জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে তা ভাঙ্গন রোধের জন্য পিচিং কাজে ব্যাবহার করার জন্য। ভাঙ্গল রোধে জরুরি কাজের সরবরাহকৃত জিও ব্যাগের মধ্যে প্রায় এক হাজার বস্তা খোয়া গিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। পাউবো কর্তৃপক্ষ খোয়া যাওয়া জিও ব্যাগের মধ্যে একশ’ দশটি জিও ব্যাগ উদ্ধার করতে সম্ভব হয়ে। বাকিগুলো উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পউবো কর্তৃপক্ষ।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় খোয়া যাওয়া ব্যাগের মধ্যে ৩১০টি জিও ব্যাগ ডিমলা সদর থেকে আাটক করে জনতা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আটক জিও ব্যাগগুলো ডালিয়া পাউবোর খোয়া যাওয়া সরকারী। জিও ব্যাগগুলি পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মো. মনির হোসেন অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে বিক্রির জন্য জলঢাকা উপজেলায় ভ্যান গাড়িযোগে নিয়ে যাচ্ছিলেন। জনতার হাতে আটক জিও ব্যাগগুলি শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামানের নির্দেশে ডিমলা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবু তালেবের হেফাজতে রাখা হয়েছে। আটক জিও ব্যাগ নিজ হেফাজতে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু তালেব।
এ ব্যাপারে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সালামত ফকির জানান, পূর্ব ছাতনাইয়ের ঝাড়সিংহেশ্বরে সম্প্রতি বন্যায় ভাঙ্গন রোধের জরুরি কাজ করার সময় ব্যবহৃত বেশ কিছু জিও ব্যাগ খোয়া যায় সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আটক হওয়া জিও ব্যাগ সেগুলো কিনা যাচাই করে দেখা হচ্ছে ।
অভিযুক্ত মনির হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, ডালিয়া পানি উন্নয়ন বর্ডের কর্মকর্তাদের পরামর্শে সম্প্রতি তিস্তার ভাঙ্গন রোধে জরুরি কজে ব্যবহারের জন্য আমি জলঢাকা থেকে একজন ঠিকাদারের নিকট থেকে জিও ব্যাগগুলি কিনে নিয়েছি। কাজে না লাগায় সেগুলি শুক্রবার ফেরত দেয়ার জন্য জলঢাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান জানান, তিস্তার ভাঙ্গন রোধের কাজে ব্যবহৃত জিও ব্যাগ লোকজন কর্তৃক আটকের বিষয়টি শুনেছি । আটক জিও ব্যাগগুলি সদর ইউপি চেয়াসম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে মালিকানার সঠিক কাগজ পত্র যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আজকালের খবর/ওআর