
ফ্যাসিস্টমুক্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। এর আগে একই দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। নিয়োগ বোর্ডে ফ্যাসিস্ট রাখার অভিযোগে ‘অবৈধ’ আখ্যা দেন তারা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি দেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। সাক্ষাতকালে ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিনিধি সহ সাবেক সমন্বয়ক এস.এম সুইট উপস্থিত ছিলেন। এতে ১০ টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ১১টার দিকে পরীক্ষা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সাক্ষাতের পর সাড়ে ১০টার দিকে পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন নেতাকর্মীরা। এ সময় ‘ছাত্রলীগের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না; ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা, ইবি ক্যাম্পাসে হবে না; অবৈধ নিয়োগ বোর্ড, মানি না মানবো না; নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ কর, করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, সাব্বির, সদস্য রাফিজ, নুর উদ্দিন ও সাক্ষর-সহ প্রমুখ।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘গতকাল নিয়োগ বোর্ড পরীক্ষায় রাকিবুল নামের ছাত্রলীগের একজন চিহ্নিত কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের অর্থ এবং অস্ত্রের যোগানদাতা ছিলেন। আমরা গতকাল রাতে তার উত্তীর্ণ হওয়ার রেজাল্ট দেখেছি এবং আমার মনে হয় শিগগির ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করা হবে। ছাত্রলীগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই তা নিশ্চিত করা হবে। এদিকে ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাতেও ছাত্রলীগ রয়েছে আমরা তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি তারপরও প্রশাসন পরীক্ষা নিচ্ছে। প্রশাসন ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করছে এবং ফ্যাসিজম কায়েম করছে। যাদের ইতোপূর্বে শোকজ দেয়া হয়েছে তাদের কোনো তদারকি ছাড়াই নিয়োগ-কার্ড দেয়া হয়েছে, বিভাগের চেয়ারম্যানও ফ্যাসিস্টের সাথে জড়িত।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এখানে ছাত্র হিসেবে মেধার ভিত্তিতে যারা পরীক্ষা দিতে পারে, তারা পরীক্ষা দিচ্ছে। এখানে ছাত্রলীগ বা কে কোন দল করে এটা তারা অভিযোগ করেছে। বরং পরীক্ষার দেয়ার সুযোগ সবাই পাবে। আমি কালকে বলেছি। ইনশা-আল্লাহ এবারের শিক্ষক নিয়োগে অতীতের যত বদনাম ছিলো— মেধার ভিত্তিতে হয় নাই বা যোগ্যতা নাই— আমি বিশ্বাস করি সেসব বদনাম গোছাবে। নিয়োগের বৈধতা-অবৈধতা তোমরাই বিবেচনা করতে পারবে।
নিয়োগ বোর্ড নিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য উপাচার্য বলছিলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষা, ভাইবা এবং একাডেমিক রেজাল্ট তিনটি সমন্বয়ে সর্বোচ্চ মেধায় যে আসবে তাকে আমরা সিলেক্ট করবো। এখানে মেধা এবং যোগ্যতাই হবে মাপকাঠি। এছাড়া কোনো ধরনের মাপকাঠি এখানে নাই।
তিনি বলেন, আমি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই প্রথম নিয়োগ বোর্ড এবং প্রথমেই ফ্রেশ নিয়োগ হতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে না।
ফ্যাসিস্টের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি মনে করি বোর্ড সম্পূর্ণ ভাবে যে মানসিকভাবে প্রস্তুত। আমাদের এখানে এক্সপার্ট আছে, সিন্ডিকেট সদস্য আছে এবং উপাচার্য আছে, সুতরাং চেয়ারম্যান যে মানসিকতার হোক না কেন এখানে কোনো ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে না। এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
আজকালের খবর/ওআর