
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিয়ে প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যুব প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) চিলমারী উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভায় উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের যুব প্ল্যাটফর্মের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সমন্বয় সভার আয়োজন করে 'চাইল্ড নট ব্রাইড (সিএনবি)' প্রকল্প, যা বাস্তবায়ন করছে আরডিআরএস বাংলাদেশ। এই প্রকল্পে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
সভায় জানানো হয়, চিলমারী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা মোট ৪৭৬ জন কিশোর-কিশোরীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ শিশু রয়েছে রানীগঞ্জ ইউনিয়নে, যেখানে ১৬৩ জন শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে এবং এরই মধ্যে ৯৮ জনের বিয়ে হয়ে গেছে। চিলমারী ইউনিয়নে ঝুঁকিতে রয়েছে ১০১ জন, বিয়ে হয়েছে ৫০ জনের। রমনা ইউনিয়নে ৮৮ জন শিশু ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ জনের বিয়ে হয়ে গেছে। থানাহাট ইউনিয়নে ৬৩ জন ঝুঁকিপূর্ণ, বিয়ে হয়েছে ৪৫ জনের। নয়ারহাট ইউনিয়নে ৭৬ জন ঝুঁকিপূর্ণ শিশু রয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৫ জনের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অষ্টমীর চর ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুর সংখ্যা ৪০ হলেও বিয়ে হয়ে গেছে ৪৫ জনের, যা নিয়ে সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
উপজেলা যুব প্ল্যাটফর্মের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন,উপজেরা প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নাসিম উদ্দিন, সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো.হৃদয় মাহমুদ, আর ডি আর এস বাস্তবায়িত (সিএনবি) প্রকল্পের টৈকনিক্যাল অফিসার মো.আবদুল মমিন হোসেন।
বক্তারা বলেন, শুধুমাত্র আইন দিয়ে বাল্যবিবাহ ঠেকানো সম্ভব নয়। এই সমস্যার সমাধানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে সমাজের তরুণ প্রজন্ম। তাদের সচেতনতা, দায়িত্বশীলতা ও উদ্যোগই পারে একটি সহনশীল এবং শিশু-বান্ধব সমাজ গড়তে।
সভায় আরও জানানো হয়, চিলমারী উপজেলায় গঠিত ৬টি ইউনিয়নের যুব প্ল্যাটফর্ম ইতোমধ্যে ইউনিয়নভিত্তিক ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের তালিকা প্রস্তুত করেছে এবং উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে।
সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন যুব সংগঠনের প্রতিনিধি, আরডিআরএস প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আজকালের খবর/বিএস