
একটি সুর কখনো শুধু গান হয়ে থেমে থাকে না। কোনো কোনো সুর হয়ে ওঠে মানুষের আত্মার ভাষা, সমাজের কথা, সময়ের প্রতিচ্ছবি। সেই সুর যদি কোনো শিল্পীর ভেতরে বাস করে, তখন তিনি কেবল একজন গায়ক নন, হয়ে ওঠেন সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তেমন একজন শিল্পী হলেন সাইফ উদ্দিন-সিলেটের গোপালগঞ্জ থেকে উঠে আসা এক নিবেদিতপ্রাণ কণ্ঠশিল্পী।
১৯৯৪ সালের ১৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন সাইফ উদ্দিন। সংগীতের প্রতি তার প্রেম জন্মসূত্রেই পাওয়া-পিতা লুৎফর রহমান একজন প্রশিক্ষিত ওস্তাদ, আর মা নাজমা বেগম ছিলেন একজন সংগীতানুরাগী নারী। ছোটবেলাতেই সংগীতের হাতে খড়ি হয় বাবার হাত ধরে। কিশোর বয়সেই স্থানীয় মঞ্চ ও মাহফিলে গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
তিনি বিশ্বাস করেন-সংগীত শুধু বিনোদন নয়, এটি আত্মিক সাধনার পথ। সেই সাধনার ফলস্বরূপ একে একে তিনি অর্জন করেন স্বীকৃতি ও সুনাম। ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০-এই তিন বছর ধরে “শ্রেষ্ঠ গায়ক” হিসেবে লুনা গ্রুপের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও সাংবাদিক সংগঠন ‘জার্নালিস্ট পোরান’ থেকে সম্মাননা অর্জন করেন, যা তার জনপ্রিয়তার স্বীকৃতি।
তার প্রকাশিত জনপ্রিয় অ্যালবামগুলো হলো: ভ্রমরা, মালা কার, বসন্ত কাল, প্রেমে কেন ব্যাথা, জালা সহেনা।
প্রতিটি অ্যালবামেই ফুটে উঠেছে প্রেম, প্রকৃতি, ব্যথা আর বিশ্বাসের এক অন্তর্লীন সুর। লোকজ ধারায় প্রশিক্ষিত হলেও তিনি আধুনিক সংগীতেও তার স্বকীয়তা রেখে চলেছেন। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও তাঁর গান পৌঁছেছে প্রবাসী বাঙালির মনকেও নাড়া দিয়েছে।
শিল্পী সাইফ উদ্দিন শুধু গানেই থেমে থাকেননি। নতুন শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো, স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করাও তার নিয়মিত কাজের অংশ। তিনি চান, সংগীত হোক সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যম-ভাষাহীন অনুভূতির প্রকাশ।
বর্তমানে তিনি নতুন কিছু মৌলিক গান নিয়ে কাজ করছেন এবং আশা করছেন খুব শিগগিরই আরও একটি অ্যালবাম প্রকাশ করবেন, যা সংগীতপ্রেমীদের জন্য হবে এক নতুন অভিজ্ঞতা।
শিল্পী সাইফ উদ্দিনের এই যাত্রা যেন আরও সুদূর প্রসারী হয়-এটাই তার শ্রোতা, অনুরাগী এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রত্যাশা।
আজকালের খবর/বিএস