
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল খেলার মারামারির ভিডিও করায় ক্যাম্পাসের তিন সাংবাদিককে সম্প্রতি মারধর এবং এক সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা, ছাত্রীকে ধাক্কা ও লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ আনেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বিচার চেয়ে গত রবিবার (১৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তারা।
তবে এর পরেরদিনই (১৪ জুলাই) সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জোর করে ‘মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে’ উল্লেখ করে অভিযোগপত্র প্রত্যাহার করেছেন বিভাগটির ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। তারা এটিকে প্রত্যারণামূলক দাবি করে বলেন, ‘আমাদেরকে দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, আমরা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, অর্থনীতি বিভাগের ফুটবল খেলা চলাকালীন এক সাংবাদিক ভিডিও করছিল। এ সময় আফসানা পারভিন তিনা (২০২০-২১) তাকে বাধা দেন। ওই সাংবাদিক বলেন- আমি ভিডিও করবই। পরে তিনি তিনাকে ধাক্কা দেন। পরে সাংবাদিক সমিতিতে অভিযোগ করতে গেলে তেড়ে এসে অর্থনীতির সৌরভ দত্ত, নাহিদ, রিয়াজের ওপর আক্রমণ করেন।
পরে প্রক্টর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘উভয়পক্ষ অফিসে আস।’ অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবে রাজি হন এবং তখনো কিছু সাংবাদিক ভিডিও করতেই থাকে এবং নারী শিক্ষার্থীকে তুই তোকারি করে। পরে সাংবাদিক সমিতির রিফাতসহ অনেকেই নাহিদ, দত্ত, সোহাগ, রিওন, রিদয়, রিয়াজদের ওপর প্রক্টর স্যারের উপস্থিতিতে হামলা করে। পরে তিনা তার বন্ধুদের রক্ষা করতে গেলে তাকে ধাক্কা দেওয়া হয়। প্রক্টর এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। পরে সে প্যানিক এটাকের শিকার হলে মেডিকেলে পাঠান এবং কর্মরত ডাক্তার সাহেদ তাকে ইমার্জেন্সি চিকিৎসা দেন।
অন্যদিকে প্রত্যাহারপত্রে প্রত্যাহারকারী শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, আফসানা পারভিন তিনা ও তার বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিওকারী সাংবাদিকের মোবাইলটি নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়, ফলে সেটি মাটিতে পড়ে যায়। পরে ফোনটি পান্নার (২০২০-২১) কাছে যায়। পরে সাংবাদিক রবিউল আসলে নাহিদ হাসান (২০২০-২১) দৌঁড়ে এসে পেটে লাথি দেয়। পরে প্রক্টর এসে উভয়পক্ষকে অফিসে নিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেন। তখন সাংবাদিক রিফাত নাহিদের দিকে তেড়ে এলে, সেখানে সৌরভ দত্ত, রিয়াজ মোর্শেদ, জুনায়েদ সোহাগ, সৌরভ, নাহিদ, ঝলকদের সঙ্গে সাংবাদিকদের হাতাহাতি হয়। এরপর প্রক্টর আমাদের টিনের ছাউনিতে নিয়ে গেলে তিনা প্যানিক অ্যাটাক করে। পরে তাকে মেডিকেলে নেওয়া হয়।
প্রত্যাহারপত্রে তারা আরও দাবি করেন, আমরা খেলায় আহত হওয়ায় ডা. সাহেদ স্যার ওষুধের প্রেসক্রিপশন দেন। কিন্তু, পরবর্তীতে সেই আঘাতকে মারামারির আঘাত হিসেবে প্রমাণ করতে প্রেসক্রিপশনের ছবি প্রক্টর স্যারকে দেওয়া অভিযোগপত্রে যোগ করা হয়। এদিকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইলটি পান্না (২০২০-২১) ভাইয়ের কাছে ছিল। ফিরিয়ে দিতে বললে তিনি বলেন, ভিডিও ডিলিট না করে ফোন দেবেন না। পরে ফোনটি নাহিদ হাসান (২০২০-২১) ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয় এবং সারারাত তার কাছেই ছিল।
প্রত্যাহারপত্রে তারা আরো দাবি করেন, মেডিকেলে নাহিদ হাসান (২০২০-২১) ভাই আমাদের বলেন, ‘ভয় কিসের? আমরাও সাংবাদিক ডেকে নিউজ করাব।’ এরপর ডেইলি ক্যাম্পাসের ইবি প্রধিনিধি ওয়াসিফ আল-আবরার ও আরেক সাংবাদিককে (রানা আহম্মেদ অভি) ডেকে এনে তিনা আপু ও আমাদের ভিডিও বক্তব্য নেন। তখন নাহিদ ভাই আমাদের যে মিথ্যা বক্তব্য শিখিয়ে দিয়েছিলেন, সেটাই আমরা দিয়েছি।
আজকালের খবর/ওআর