
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচন ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও শেষ মুহূর্তে এসে তা স্থগিত হয়েছে। আজ শনিবার এফডিসিতে হওয়ার কথা ছিল চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ২০২৫-২৬ মেয়াদের নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আবদুল লতিফ বাচ্চু।
নির্বাচন স্থগিত হওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, “এফডিসিতে নির্বাচন করার অনুমতি মিলছে না, কেপিআইভুক্ত এরিয়া হওয়ায় এখানে নির্বাচনের অনুমতি দিচ্ছেন না এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।”
এর আগেও এফডিসিতে নির্বাচন হয়েছে, এখন অনুমতি না দেওয়ার কারণ কী এই প্রশ্নে বাচ্চু বলেন, “নির্বাচন ঘিরে অনেক মানুষজনের যাতায়াত হবে, কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে সেই নিরাপত্তা এখন প্রশাসন দিতে পারবে না।
“আর এফডিসি যেহেতু আমাদের সম্পত্তি না, আমরা তাদের আওতাভুক্ত তাই এফডিসি যদি চায় আমাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিতে পারে। আমাদের বলা হয়েছে নির্বাচন এখন স্থগিত করতে, পরবর্তীতে অনুমতি দেওয়া হবে। আমরা সেটা মেনে স্থগিত করেছি।”
এই বিষয়ে জানতে এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারাহ শাম্মীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
এছাড়া এফডিসির প্রশাসন ও অর্থ পরিচালক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তারা ধরেননি।
দুই বছর মেয়াদের লড়াইয়ে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে দুটি প্যানেল। একটি প্যানেলের সভাপতি ও মহাসচিব পদে নির্বাচন করছেন শাহীন সুমন ও শাহীন কবির টুটুল। অপর প্যানেল থেকে সভাপতি ও মহাসচিব পদে আছেন মুশফিকুর রহমান গুলজার ও সাফি উদ্দীন সাফি।
নির্বাচনের স্থগিত হওয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ কী এই প্রশ্নে বর্তমান কমিটির মহাসচিব শাহীন সুমন বলেন, “আমরা নির্বাচন বন্ধ রেখেছি আপাতত, এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে যখন দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে তখন নির্বাচন হবে। এর মধ্যে আমাদের পরিচালকদের সমস্ত কার্যক্রম চলতে থাকবে, আগের কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরাই থাকবে।”
অপরদিকে বিশেষ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত সরকারের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে এমন অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিষয়টি সরকারের কাছে আপত্তিজনক মনে হয়েছে। যে কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত এক সমন্বয়ক জানিয়েছেন, এফডিসিতে আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার এরপর পরিচালক সমিতির নির্বাচন। সবার দাবিই ছিলো এফডিসি উন্নয়নে সংস্কার। আমরা সেই সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করছি। যে কারণে পরিচালকদের মধ্যেও সংস্কার করার আহ্বান জানাবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পরিচালক জানিয়েছেন- আমাদের নির্বাচন কিভাবে হবে কারা করবে এটা সবকিছুর সাথে মিলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। তাছাড়া, অনেকদিন ধরেই নির্বাচনী ডামাডোল বাজছে, তখনই তারা নির্দেশনা দিতে পারতেন। সত্যি বলতে অনেকগুলো টাকা আর মানসিক প্রস্তুতি সবই এখন বৃথা গেলো। তারপরও আমরা চাই বৃহৎ স্বার্থে প্রয়োজনীয় সংস্কার এনে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবরে জড়ো হন শতাধিক পরিচালক। এ নিয়ে মৃদু উত্তেজনা থাকলেও পরিচালক সমিতির নেতৃত্ব সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
আজকালের খবর/আতে