শেখ মুজিব থেকে জাতির পিতা
তপন দেবনাথ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫:২৯ পিএম
বাংলা ভাষায় কত ভ্রমণকাহিনী রচিত হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান বলতে পারব না। তবে অন্য যে কোনো ভ্রমণকাহিনীর চেয়ে বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়াচীন’ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। একে নেহায়েত ভ্রমণকাহিনী বললে কমই বলা হবে। বাড়িয়ে বললে ঠিক কী বলা উচিত, সেটাও বলতে পারছি না। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর সরল স্বীকারোক্তি এ রকম- ‘আমি লেখক নই, তাই সৌন্দর্যটা অনুভব করতে পারছি কিন্তু গোছাইয়া লেখতে পারিনা। পাঠকবৃন্দ আমায় ক্ষমা করবেন।’ আমিও বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে বলতে পারি, আমি লেখাটি পড়ে মুগ্ধ তবে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। 

একজন পাঠক হিসেবে ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইয়ের সমালোচনা লেখার যোগ্যতা আমার নেই। কেননা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, বহু গ্রন্থের প্রণেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ভূমিকার পর আর কিছু বলার থাকে না। কিন্তু তাতেই থেমে থাকব কেন? বই পাঠে নিজের প্রতিক্রিয়া তো ব্যক্ত করতেই পারি। ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটি কীভাবে আমাকে কয়েকদিন মোহিত করে রেখেছিল তার প্রেক্ষাপট সামান্য আলোকপাত করা সমীচীন মনে করছি। 

বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার অগাধ ভালোবাসা এবং পর্বতসম শ্রদ্ধাবোধ হয়তো একটু বেশি-ই। এই অগাধ শ্রদ্ধা জন্মেছে তার দোষ-ত্রুটি খুঁজতে গিয়ে। এটা উদ্দেশ্যমূলক ছিল না। ছিল অনুসন্ধানমূলক। সাম্প্রতিককালে কিছু রাজনীতিবিদ, কিছু আওয়ামী লীগের ঘরের লোক, কিছু বিধ্বংসী রাজনীতিক বঙ্গবন্ধুর বেশ কয়েকটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আত্মঘাতী মন্তব্য করেন। যা আমাকে আহত করে, কষ্ট দেয়। সেই মন্তব্যগুলোর যদি সত্যতা থাকতো তাহলে বঙ্গবন্ধু বীর পুরুষের পরিবর্তে কাপুরুষ বলেই পরিচিতি লাভ করতেন। যেমন- কেন তিনি ৭ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন না? কেন তিনি ২৫ মার্চ আত্মগোপনে গেলেন না? কেন পাকিস্তানি আর্মির কাছে ধরা দিলেন? কেন মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্যপটে থাকলেন না? এসব মন্তব্যে বিভ্রান্ত না হয়ে আমি এর কারণ অনুসন্ধান করতে থাকি। বেশকিছু বইপুস্তক, তথ্য ঘাটাঘাটি করার পর, আমার উপলব্ধি হয় বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি সিদ্ধান্ত ছিল নির্ভুল এবং অত্যন্ত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। সিদ্ধান্তে সামান্য ভুল হলে আমাদের স্বাধীনতা অধরাই থেকে যেত। যারা এসব মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধুর চেয়ে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে চান- তারা এই অতীব গুরত্বপূর্ণ মুহূর্তে কী ভূমিকা রেখেছেন তা পর্যালোচনা  করলেই তাদের মন্তব্য অন্তঃসারশূন্য হয়ে যায়। এ ব্যপারে বড়সড় গবেষক হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার কোনো ধৃষ্টতা আমার ছিল না বরং পথভ্রষ্টদের মন্তব্যকে পুঁজি করেই আমি আবিষ্কার করি এক অনন্য বঙ্গবন্ধুকে। যাকে কারো সাথেই তুলনা করা চলে না একমাত্র তাকে ছাড়া। পাঠক হয়তো এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার অগাধ ভালোবাসার পরিমাণটা একটু বেশি কেন? সে বিষয়ে আর বেশি আলোকপাত করব না। তাহলে ‘আমার দেখা নয়াচীন’ নিয়ে আমার পাণ্ডিত্য প্রকাশের জায়গা কমে আসবে। 

মহামারী করোনা যখন গোটা বিশ্বকে টাল-মাটাল করে তুলছিল তখনও আমরা ছিলাম বলতে গেলে বেশ খোশ মেজাজে। কারণ আমাদের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটা ধমক দিলেই চীনের করোনা চীনে ফিরে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু ১৯ মার্চ ২০২০ আমার ম্যানেজার রাতে আমার কর্মস্থলে এসে যখন বলল- সব বন্ধ করে বাসায় চলে যাও। তখন আমি কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাই। কেননা This is Marica (America)। করোনা নামক এক অদৃশ্য বস্তুর ভয়ে কাজ বন্ধ করে বাসায় চলে যাব? যুদ্ধ বাঁধতে আর কিছুক্ষণ বাকি- এমন একটি গতিতে সবকিছু বন্ধ করে আমরা বাসায় চলে যাই। আগামী দিন কী হবে কেউ জানে না। ২০ বছর ধরে এই শহরে আছি। আমি মাঝে মাঝে থামলেও এই লস অ্যাঞ্জেলেস নগরীকে কখনো থামতে দেখিনি। 

ঘরে ঢুকে যাওয়া মানে কিন্তু যেনতেন ব্যাপার নয়। একেবারে অবরুদ্ধ যাকে বলে। বিশ বছরের চেনা শহর চোখের পলকে কেমন অচেনা হয়ে গেল। টানা সতের দিন বিল্ডিং থেকে বের হইনি। মৃত্যুদূত যেন দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে আছে। দরজা খুললেই ঘাড়ে করে নিয়ে যাবে। আমার চাকরি চলে গেল। আমার, আমার সহধর্মিনীর এবং আমাদের বড় মেয়ের মেডিকেল ক্যানসেল হয়ে গেল। কেননা মেডিকেল প্রিমিয়াম আমার কোম্পানি পে করত। মার্চ ২০২০, আমার জীবনের এক চরম হতাশার মাস। 

সার্বিক সর্বগ্রাসী ভাবনায় আমি শয্যাশায়ী হয়ে গেলাম। এমনিতেই তো অবরুদ্ধ, গৃহবন্দি, কর্মহীন। তার ওপর অসুস্থ হলে যা হতে পারে, আমি তাই। সার্বিক পরিস্থিতিতে আমি যতটা নার্ভাস হয়েছিলাম বাস্তব অবস্থা আসলে ততটা ঘোলাটে ছিল না। কিছুদিন পর জানা গেল আমার কাজ যায়নি। একমাসের মধ্যে নিজে পে করে আমাদের তিনজনের মেডিকেল চালু করে নিলাম। ভাবনার জগতটা কেমন যেন প্রসারিত হয়ে গেল। কীভাবে কীভাবে যেন ভাবুক হয়ে গেলাম। শুধু ভাবতেই ভালো লাগছে। কেন এমন হলো? সারা পৃথিবী যেন একই সমস্যায় জর্জরিত। আমার ডাক্তার বলে দিয়েছেন- টিভির খবর না দেখতে, পত্রিকা না পড়তে। তাহলে আবার অসুস্থ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকবে। নিজেকে সামলে নিলাম। ধীরে ধীরে বাইরে বের হতে লাগলাম। থমথমে ভাবটা একটু একটু করে কেটে গেল। আসলে সকল ভয় ছিল আমার মনে।

এমনি সময় ঢাকা থেকে বড় ভাইয়ের পাঠানো এক প্যাকেট বই হাতে এসে পৌঁছাল যার মধ্যে ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটিও ছিল। অন্যসব বই বাদ দিয়ে বইটি প্রথমেই পড়তে শুরু করলাম। সবুর করার মতো ফুরসত আর নেই। এটি বঙ্গবন্ধুর তৃতীয় বই। পর্বতসম ভালোবাসার প্রিয় মানুষের বই।

এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের গভীর রাতে সহধর্মিনী এবং মেয়ে যখন নিশ্চিন্ত ঘুমে বিভোর তখন সোফার উপর চিৎ হয়ে শুয়ে বঙ্গবন্ধুর বই পড়তে শুরু করলাম। এক সময় নিজের অজান্তে হো হো করে হেসে উঠলাম। ঠিক কতদিন পর শব্দ করে হাসলাম মনে করতে পারলাম না। একা একা সে হাসি গভীর রাতের নিস্তব্ধতা আর আমি ছাড়া কেউ শুনলো না। হাসির কারণ সংবাদপত্রের পথিকৃত তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর রসিকতা। শুনুন বঙ্গবন্ধুর লেখনিতে- ‘আমরা ট্রেনে কিছু খেয়ে নিলাম। ফলের জোগাড় যথেষ্ট তারা করেছে। এই সময় মানিক ভাইয়ের কথা সামান্য লেখা দরকার। মানিক ভাই ভালো লেখতে পারেন, কিন্তু এত যে খেতে পারেন তা আগে জানতাম না। সমানে খেতে শুরু করলেন, মনে হলো প্রায় ২-৩ ঘণ্টা খেয়েই চললেন। জিজ্ঞাসা করলাম, মানিক ভাই পেটে হলো কী? বললেন, দুর্ভিক্ষ হয়েছে।’ মানিক ভাই দোভাষীকে নিয়ে বসলেন। প্রশ্নের পর প্রশ্ন, আর খাওয়ার পরে খাওয়া চলল। মানিক ভাইয়ের স্মরণশক্তি অস্বাভাবিক, নোট করতে হয় না। কেমন করে সবকিছু মনে রাখেন বুঝতে পারি না। যা হোক, আমিও একটি মাস্টারকে নিয়ে পড়লাম। ভদ্রলোক ইংরেজি জানেন না, দোভাষী তার কথা আমাকে বুঝাইয়া দেয়, আমার কথা তাঁকে। আলোচনাটা পরে উল্লেখ করব।’ (পৃষ্ঠা-৩০)

বইখানা টানা পড়ে যাচ্ছি। কাজ নেই। মেয়ের স্কুল নেই, সকালে ওঠার তাড়া নেই। এ এক ভিন্ন জগতে আছি আর কি। আবার একবার হাসলাম। এবারও বঙ্গবন্ধুর মানিক মিয়াকে নিয়ে খাওয়ার রসিকতা। শুনুন লেখকের জবানিতে- ‘মানিক ভাইয়ের কথা কিছু না বললে অন্যায় হবে। মানিক ভাই যে এত খেতে পারেন সে ধারণা আগে আমার কোনোদিন ছিল না। হয়তো কোনোদিন একটা মুরগিই খেয়ে ফেলে, সাথে সাথে ডিম, মাছ, ফলফলারি, বসে বসে শুধু খায় আর খায়। মানিক ভাই বলেন, বেশি কথার কাম নাই। খাবার সময় গোলমাল করো না। চুপচাপ খাও, সময় পাওয়া গেছে। দেশে লীগ আমলে কী খেতে পাই মনে নাই। রুমে ফিরে এসে আমি, আতাউর রহমান সাহেব ও মানিক ভাই খুব হাসাহাসি করতাম, মানিক ভাইয়ের খাওয়া নিয়া। আমি আর আতাউর রহমান সাহেব মানিক ভাইয়ের পিছনে লেগেই থাকতাম।’ (পৃষ্ঠা-৩৮)

বঙ্গবন্ধু যখন নয়াচীন সরকারের আমন্ত্রণে পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের সদস্য হয়ে ভ্রমণে যান তখন তার বয়স ৩২ বছর। তখন তিনি বঙ্গবন্ধুও নন, জাতির পিতাও নন। পূর্ববাংলার একজন আওয়ামী লীগ নেতা মাত্র। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশপ্রেম এবং দেশের প্রতি সম্মানবোধ আমাকে কেন, যে কাউকে প্রভাবিত করবে। আজকের দিনে আমরা দেখতে পাই, যে কোনো বিরোধী দল বিদেশের কাছে  নিজ দেশের বদনাম করার সুযোগ পেলে দেশের মান-সম্মানের কোনো তোয়াক্কা করেন না। পারলে নিজের দেশকে বিদেশের কাছে বিক্রি করে দিতেও কারো কারো গায়ে বাধবে না। সে সময় মুসলিম লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুকে যখন তখন জেলে পুরত। সেই ৩২ বছরের যুবক যখন বিদেশ ভ্রমণে যান তখন দেশের মান সম্মানের বিষয়টি তাকে কীভাবে জাগ্রত রেখেছিল শুনুন লেখকের লেখায়- ‘একটা কথা এখানে বলে রাখা ভালো। আমরা হংকং থাকতে সভা করে ঠিক করে নিয়েছিলাম, আমাদের দেশের ভিতরের খবর কেহ সভায় বলবো না এবং আলোচনা করবো না। আমাদের দেশের মুসলিম লীগের শাসনের কথা যদি বলি তবে দুনিয়া হাসবে। কারণ, মুসলিম লীগের গণতন্ত্রের যে রূপ তা কোনো সভ্য সমাজে না বললেই ভালো হয়। কারণ, তাতে পাকিস্তানের ইজ্জত যাবে।’ (পৃষ্ঠা-৩৪)

পাঠকদের খেয়াল আছে যে বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ সালের অক্টোবর মাসে পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে চীন সফরে যান। তার সফরসঙ্গী ছিলেন কিংবদন্তি সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আতাউর রহমান খান, খন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস প্রমুখ। উক্ত সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা নিজ নিজ দেশের ভাষায় বক্তৃতা করেন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে কয়েকবার কারাবরণ করেন শেখ মুজিব। ১৯৫২ সালে একবার মহিউদ্দিনকে সাথে নিয়ে কারাগারে অনশন করতে গিয়ে প্রায় মরতে বসেছিলেন। ১৯৫২ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েই চীন সফরে যান তিনি। সফরে যাবার আগে টানা ৩ থেকে ৪ বছর কারাবরণ করার ফলে তার ব্যবহৃত পোশাকগুলো ছোট হয়ে যায় এবং চীন সফরে যাবার সময় তার পোশাকের অভাব দেখা দেয়। সে সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষায় বক্তৃতা করে বাংলা ভাষাকে গৌরবান্বিত করেছিলেন। পাঠককে মনে করিয়ে দিতে চাই যে বঙ্গবন্ধু ছিলেন পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের সদস্য। তখন ‘বাংলাদেশ’ নামে কোনো দেশ ছিল না। ছিল পাকিদের ভাষায় ‘পূর্বপাকিস্তান’ আর আমাদের ভাষায় ‘পূর্ববাংলা’। কিন্তু উক্ত বিশ^ সম্মেলনে তিনি বাংলায় বক্তৃতা করে এসেছেন যা পাকিরা বুঝতেই পারেনি। কেন তিনি বাংলায় বক্তৃতা করেছেন তার বেশ খানিকটা আলোচনা করেছেন বইয়ের ৪৩-৪৪ পৃষ্ঠায়। উক্ত সম্মেলনে ভারতের পক্ষ থেকে মনোজ বসুও বাংলায় বক্তৃতা করেন। কেউ একজন বঙ্গবন্ধুকে দু’জন কেন বাংলায় বক্তৃতা দিলেন তা জানতে চান। বঙ্গবন্ধু তার কারণ বর্ণনা করেন। আমার জানা মতে বঙ্গবন্ধুই প্রথম ব্যক্তি যিনি পূর্ববঙ্গ থেকে কোনো বিশ্ব সম্মেলনে প্রথম বাংলায় বক্তৃতা করেন। জাতিসংঘে ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রথম তিনিই বাংলায় বক্তৃতা করেন- সেটা প্রায় সকলেই জানেন।

চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং বাঙালির আপ্যায়ণের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন কিন্তু তিনি সম্ভবত বাঙালির লৌকিকতা সম্পর্কে তেমন কিছু খেয়াল করেননি। ঠিক হিউয়েন সাং-এর দেশেই তেমন এক লৌকিকতার বিরল নজির রেখে এসেছেন যুবক শেখ মুজিব। শেখ মুজিব তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে চীনের এক শ্রমিক পরিবারের বাসায় যান। উদ্দেশ্য শ্রমিকরা কীভাবে জীবনযাপন করে তা অবলোকন করা। দোভাষীর মাধ্যমে জানতে পারেন যে এই শ্রমিক পরিবারটির সদ্য বিয়ে হয়েছে। স্বামী কাজে গেছে। স্ত্রী একা বাড়িতে। এমন সময় কিছু বিদেশি মেহমান এসেছে। সদ্য বিবাহিত মহিলা কী করবেন কিছু বুঝতে পারছেন না। তিনি মেহমানদের বসতে দেন। চা দিয়ে আপ্যায়ন করেন। এ যেন আমাদের গ্রামবাংলারই এক খণ্ড চিত্র। আসার সময় বঙ্গবন্ধু তার পকেটের দিকে তাকিয়ে দেখেন পকেটের অবস্থা খারাপ। এরপর তিনি তার হাতের আংটি খুলে চীনা নববধূকে উপহার দিয়ে আসেন। ঘটনাটি খুব ছোট মনে হলেও লৌকিকতার এমন নজির খুব একটা দেখা যায় না। সেই চীনা পরিবারটিও বঙ্গবন্ধুর হোটেলে গিয়ে তাকে কিছু উপহার দিয়ে আসেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেই চীনা শ্রমিক পরিবারটি কি আদৌ জানতো যে এই যুবকই একদিন হবেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা? মুক্তির কন্ডারি?

চীনা প্রেসিডেন্ট মাও সেতুং-এর দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা বলয় দেখে শেখ মুজিবের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছিল। তিনি মনে করতেন গণমানুষের নেতার এত নিরাপত্তার দরকার নেই। আমাদের স্বাধীনতার পরেও তাকে যদি প্রশ্ন করা হতো আপনার শক্তির উৎস কী? তিনি অকপটে উত্তর দিতেন- আমার জনগণ। বাংলার জনগণের প্রতি তার বিশ্বাস এবং ভালোবাসা ছিল প্রশ্নাতীত। একাধিক সূত্র তার নিরাপত্তার ব্যাপারে তাকে সতর্ক করলেও তিনি গায়ে মাখতেন না। তিনি জবাব দিতেন আমাকে কেউ মারবে না। আমাকে উৎখাত করলে বড়জোর ভোলায় বা মনপুরায় পাঠিয়ে দিতে পারে। বুলেটের নির্মম আঘাত তাকেসহ সবংশে নিপাত করে দেওয়ার পরেও কি বঙ্গবন্ধু ওপারে বসে বলছেন- কেবলমাত্র আমাকে হত্যাই করেছ, আর কী করতে পেরেছ? বাঙালির ওপর আমার বিশ্বাস ও ভালোবাসাকে কি হত্যা করতে পারবে কোনোদিন?

ভ্রমণযাত্রার শুরতেই বিভ্রাটে পড়েন লেখক বঙ্গবন্ধু। পাসপোর্ট নেই। বিমান ছাড়ার মাত্র আধাঘণ্টা আগে পাসপোর্ট পান। পরে জানা গেল বিমান ২৪ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়বে। বিমান ছাড়তে দেরি হলো বলেই বঙ্গবন্ধু চীন সফরে যেতে পারলেন এবং বাঙালি জাতি পেল এক ভ্রমণকাহিনী ‘আমার দেখা নয়াচীন’। আগেও বলেছি এ কেবল ভ্রমণকাহিনীই নয়, আরো অনেক কিছু। লেখক নিজেই সরল উক্তি করেছেন যে তিনি লেখক নন। তাকে লেখক না হলেও হবে কিন্তু তিনি যে অনুসন্ধানী দৃষ্টিকোন দিয়ে চীন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন তার তুলনা হয় না।

নয়াচীন সরকার মাত্র তিন বছরে চীনকে কীভাবে বদলে ফেলেছে তা খুব গভীর পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে অনুসন্ধান করেছেন তরুণ মুজিব। তিনি সেলুনের মালিকের সাথে কথা বলছেন চিয়াং শাইকের আমলে কেমন ছিলেন এখন মাও সে তুং-এর আমলে কেমন আছেন। বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ^বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থা বিশেষ করে শিশুদের আগামী দিনের নাগরিক করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা তরুণ মুজিবকে মোহিত করেছে। বেইজিং-এর বেশ্যাবৃত্তি নয়া সরকার কীভাবে দূর করল জেনে মুজিব চমৎকৃত হলেন। বলতে গেলে ১১ দিন চীন ভ্রমণে মুজিব পুরো দেশটাকে ‘ডায়গনসিস’ করে ফেলেছেন। তার জানার আগ্রহ ছিল অদম্য। এ কথা বললে হয়তো খুব বেশি বাড়িয়ে বলা হবে না যে ১৯৫২ সনের চীন সফরের অভিজ্ঞতা মুজিবের মনে এক চীনের আদলে বাংলা চীনের স্বপ্ন অংকুরিত হয়েছিল।

মুজিব চীনের সবকিছু দেখে মুগ্ধ ছিলেন কিন্তু কমিউনিষ্টরা একমাত্র কমিউনিষ্ট ছাড়া আর কারো মতবাদ প্রকাশ করতে দেয় না- এই একটি ব্যাপারই মুজিবকে ব্যথাতুর করে। তিনি সকলের মতামত সমানভাবে প্রকাশের অধিকার থাকার পক্ষপাতি। লেখকের সফরসঙ্গীরা ঘোর কমিউনিষ্টবিরোধী হলেও মাও সে তুং-এর কমিউনিষ্ট সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ অন্ধকারে ডুবে থাকা নয়াচীনকে আলোর পথে নিয়ে যাচ্ছে দেখে মুগ্ধ।

বইয়ের শেষাংশে লেখক বিশাল একটি আত্মসমালোচনা লিখেছেন যা থেকে আজকের পাঠক তরুণ মুজিবের দেখে আসা নয়াচীন ও পাকিস্তানের একটি তুলনামূলক চিত্র দেখতে পাবেন। সেই সময়ই মুজিব যে বাংলাকে তার বুকে ধারণ করে আছেন এবং একে মুক্তির পথে নিয়ে যেতে হবে এমন একটি আভাস আমরা পাই।

লেখার শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর রসবোধের কথা খানিকটা বলেছিলাম। তিনি যে কেবল রাজনীতিবিদই ছিলেন না-রসিকও ছিলেন, তার আরো একটি প্রমাণ পাই ঢাকা, মিয়ানমার, থাইল্যাণ্ড, হংকং হয়ে চীন যাবার পথে হংকং যাত্রা বিরতিকালে। হংকং এ সবাই দল বেঁধে হাঁটার সময় একজন তরুণী খান আতাউর রহমান সাহেবকে ফুল নিবেদন করলে। হংকং-এর সেই ফুল নিবেদন করার মানে হল প্রেম নিবেদন করা। লেখকের লেখনিতে সে রসবোধের নমুনা দেখুন- আতাউর রহমান সাহেব, মানিক ভাই, ইলিয়াস ও আমি রাস্তায় বেড়াতে বেরিয়েছি। হঠাৎ ১৬-১৭ বৎসরের একটা মেয়ে আতাউর রহমান সাহেবের কোটে একটা গোলাপ ফুল লাগাইয়া দিতে অগ্রসর হয়। মেয়েটি কলারে হাতও দিয়েছে, খান সাহেব হঠাৎ যেন চমকাইয়া উঠলেন। পরে ধাক্কা দিয়া ফুল ছুঁড়ে ফেলে রাগে ঘোঁত ঘোঁত করতে করতে এগিয়ে চললেন। মেয়েটি আশ্চর্য হয়ে দূরে দাঁড়িয়ে রইলো। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আমাদের মতো যুবকদের দিকে নজর না পড়ে আপনার ওপর পড়ার কারণ কী? আতাউর রহমান সাহেব তো রাগে অস্থির, আর মানিক ভাই তো তার ‘রাজনৈতিক মঞ্চের’ মতো ঘুরাইয়া ফিরাইয়া উনার পিছনে লাগলেন। আমরা খুব হাসাহাসি শুরু করলাম। বেচারা ভদ্রলোক রাগে শোকে দুঃখে কথা বলেই যেতে লাগলেন। উল্লেখ্য হংকংয়ে ফুল দেওয়াটা হলো ‘প্রেম নিবেদন’।

বঙ্গবন্ধুর আরো কিছু রসবোধের নমুনা পাওয়া যায় চীন থেকে দুটি হাতপাখা কেনা নিয়ে। তিনি লিখেছেন- ‘২টি হাতপাখা কিনেছি। ১টি আমার বন্ধুর স্ত্রীর জন্য, অন্যটি আমার একমাত্র সহধর্মিনীর জন্য।’

আজকের দিনের রাজনৈতিক নেতা বা মন্ত্রী মিনিস্টারদের সাথে বঙ্গবন্ধুর তুলনা করলে অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হতে পারে। একটি গোল্ডফিসের দোকানে সবাই গোল্ডফিস কিনলেও বঙ্গবন্ধু পয়সার অভাবে তা কিনতে পারেননি এবং সেটা অকপটে স্বীকার করতেও দ্বিধা করেননি। তিনি যে মাটি ও মানুষের নেতা। অর্থ বৃত্ত তাকে আকর্ষণ করেনি। বাপের গোলার ধান বিক্রি করে রাজনৈতিক খরচ চালানোর কথা কে না জানে?

জেল জীবন কারো কারো জন্য কষ্টকর জীবন হলেও কারো কারো জীবনে তা আশির্বাদও হতে পারে। যেমন বঙ্গবন্ধু জেলে না গেলে কর্ম ব্যস্ততার কারণে কোনোদিনই হয়তো ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ বা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ নামক অনবদ্য গ্রন্থগুলো রচনার সুযোগ পেতেন না। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে যিনি সহায়তা করতেন তিনি হলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা। এই মহীয়সী নারী কী করে অনুমান করলেন যে বঙ্গবন্ধুর জীবনের ঘটনাগুলো জাতির জন্য লিখে রাখা প্রয়োজন? তিনি বঙ্গবন্ধুকে জেলখানায় খাতা কিনে দিয়ে আসতেন এবং বঙ্গবন্ধু জেল থেকে বের হলে খাতাগুলো সযতনে রাখতেন। যা বঙ্গবন্ধু তার লেখনিতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সম্পাদকীয়তে একাধিকবার স্বীকার করেছেন। সেই মহীয়সী নারীর সে দিনের নয় পয়সা-ছয় পয়সার রুল করা খাতাগুলো কীভাবে একটি জাতির মহাসম্পদে পরিণত হল তা তিনি দেখে যেতে পারেননি সত্য কিন্তু সেদিন তিনি যা অনুভব করেছিলেন আজ তা সত্য হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালে জেলে বসে ‘আমার দেখা নয়াচীন’ রচনা করেন যা প্রধানমন্ত্রীর বয়ান থেকে আমরা জানতে পারি। রচনার ৬৬ বছর পর তা বই আকারে প্রকাশিত হয়ে জাতীয় সম্পদে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক চেষ্টা এবং বাংলা একাডেমির সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। ‘আমার দেখা নয়াচীন’ প্রকাশে যে সর্বাধিক জাতীয় চেতনার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে তা বইটির শেষাংশে বঙ্গবন্ধু যে সব ব্যক্তি বা যেসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানের নাম লিখেছেন তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে। আজকের প্রজন্ম ওইসব ব্যক্তিদের সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। বইটি আরো গুরুত্ব পেয়েছে শান্তি সম্মেলনের ছবি সংযুক্ত করার কারণে। প্রধানমন্ত্রী সচেষ্ট না হলে সেই সব দুর্লভ ছবি হয়ত সংগ্রহ করা সম্ভব হতো না।

১৯৫৭ সনে বঙ্গবন্ধু শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও ভিলেজ এইড এর মন্ত্রী থাকাকালীন চীন সরকারের আমন্ত্রণে পাকিস্তান সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে আরো একবার চীন ভ্রমণ করেন। সেই চীন ভ্রমণের ছবি বর্তমানে চীনের রাষ্ট্রপতি শী জিনপিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সফরের সময় উপহার দেন। সেই ছবিগুলোও বর্তমান বইয়ে সংযুক্ত করায় বইখানার গুরুত্ব বেড়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধু তার দেশ ভ্রমণের ছবি বের করে বাংলাদেশকে উপহার দেওয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে চীন কতটা গুরুত্ব দেয় তা প্রমাণ করে। 

বঙ্গবন্ধু চীন ভ্রমণকালীন চীনের প্রতিটি জিনিস দেখেছেন অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে। চীন সফরের ১৭ বছর পর তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন হন। তরুণ বয়সে চীন ভ্রমণের সে অভিজ্ঞতা ১৯৭২ সালে ক্ষমতাসীন হয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজে লাগিয়েছিলেন কিনা বঙ্গবন্ধু গবেষকেরা পরীক্ষা করে দেখবেন। আমি শুধু বলব- শুধু ভ্রমণকাহিনী মনে করেই ‘আমার দেখা নয়াচীন’ না পড়লেও চলবে। কেননা স্বাধীনতা লাভের ৭২ বছর পর চীন এখন বিশে^র কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা আমরা সবাই জানি। বিদায় বেলা বঙ্গবন্ধু চীনের সমৃদ্ধির জন্য দোয়া করেছিলেন। সেই সাথে বাংলাদেশকেও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার বাসনা করেছিলেন। সৃষ্টিকর্তা তার প্রত্যাশার চেয়েও চীনকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং তার নিজ দেশ, তিনি নিজে না পারলেও তার সুযোগ্য কন্যা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

শুরুতেই বলেছিলাম যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ হাতের ভূমিকা লেখার পর আর কিছুই বলার থাকে না। তারপরও কী করে যেন এই পর্যন্ত এসেছি। বইটির ফ্ল্যাপে যা লেখা হয়েছে তারপর আর বলার কিছু পাচ্ছি না বলে থামলাম।

১৯৫২ সালের ২ থেকে ১২ অক্টোবর চীনের পিকিংয়ে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে এ সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে নয়াচীন সফর করেন। ‘আমার দেখা নয়াচীন’ স্মৃতিনির্ভর এ ভ্রমণকাহিনী রচনা করেন ১৯৫৪ সালে কারাগারে রাজবন্দি থাকাকালে। শিল্পিত মন ও সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণে সদ্য বিপ্লবোত্তর গণচীনের শাসনব্যবস্থা ও জীবনচিত্র তুলে ধরেছেন প্রাঞ্জল ভাষায়। এ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মনোভাব, অসাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার গভীর পরিচয় মেলে। একজন তরুণ রাজনীতিকের মনন-পরিচয়, গভীর দেশপ্রেম এবং নিজ দেশকে গড়ে তোলার সংগ্রামী প্রত্যয় ফুটে উঠেছে রচনার পরতে পরতে। অপার সৌন্দর্যপ্রিয়তা, জীবন-সমাজ-সংস্কৃতির প্রতি মুগ্ধদৃষ্টি এবং সঞ্জীবণ-তৃষ্ণা এ গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য। এ ভ্রমণকাহিনী রচনার পটভূমি, বহু ঘাত-প্রতিঘাতে পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ, বর্তমান গ্রন্থ প্রকাশের ইতিবৃত্ত এবং দুর্লভ আলোকচিত্র গ্রন্থটিকে আকর্ষণীয় করেছে। বঙ্গবন্ধুর এ অমিয় ভ্রমণকাহিনী তার অন্য বইগুলোর মতো পাঠকপ্রিয়তা লাভ করবে- এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। 

লেখক : যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসি সাহিত্যিক।
আজকালের খবর/আরইউ








সর্বশেষ সংবাদ
নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিজ্ঞানী ও কৃষি শ্রমিকদের অবদান রয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
ভোটের প্রচারণায় এগিয়ে মনোজ বৈদ্য
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগে সমতা চায় টিআইবি
স্বাগতম ২০২২, বিদায় ২০২১
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি সুন্দরবন
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সুবাহর শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন
তাদের মাখো মাখো ‘প্রেমের প্রাসাদ’!
‘আমাকে জায়গা দিন, এটা আমার প্রাপ্য’ : লালকেল্লার দাবিদার মোগল সম্রাজ্ঞী
চা দোকানিকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা
আমি অনেকটাই ভেঙে পড়েছি : শামীম ওসমান
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft