শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫
নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিজ্ঞানী ও কৃষি শ্রমিকদের অবদান রয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:২৩ PM
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আমাদের কৃষির উন্নয়ন যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তা অব্যহত থাকলে ইনশাল্লাহ আমরা সারা বিশ্বে প্রতিযোগীতায় যেতে পারবো। আমরা মনেকরি কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি করে শুধু স্বয়ংসম্পন্ন নয়, উদ্বৃত্ত হবো। উদ্বৃত্ত বিভিন্ন ফসল, বিশেষ করে যেগুলোকে হাই ভ্যালু ক্রপ বা অর্থকরী ফসল বলা হয়, সেইসব বিভিন্ন ফসল, শাকসব্জি, ফলমূল, প্রক্রিয়াজাত করে আমরা বিদেশে রপ্তানী করবো। এ ব্যাপারে কৃষি মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ক্যাম্পাসে আধুনিক শ্রমিক কলোনী বহুতল বিশিষ্ট ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব (বিদায়ী) মো. মেজবাহুল ইসলাম, নবনিযুক্ত কৃষি সচিব মো. সাইদুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম. তরিকুল ইসলাম, ব্রি’র মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবিরসহ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপসচিব এবং ব্রি’র বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি কৃষি শ্রমিকদের গুরুত্বপুর্ণ অবদান রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মেধা ও মনন আর কৃষি শ্রমিকদের শ্রম ও ঘামে দেশে শতাধিক উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। যা দেশের খাদ্য নিরপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত একটি সমৃদ্ধশালী উন্নত বাংলাদেশ গড়ার। এটা সম্ভব হলে জাতিকে নিয়ে আমরা পৃথিবীতে গর্ব করে ও অহংকার করে কথা বলতে পারবো। ইনশাল্লাহ এই লক্ষ্য অর্জনে কৃষি সবসময়ই ভূমিকা রেখেছে। আরো অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল কৃষিকে আধুনিকীকরণ, কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ এবং কৃষি থেকে কৃষকের আয় বৃদ্ধি করে তাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করা। এর প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেলে আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানী করে আরো আয় বৃদ্ধি করবো। এতে কৃষক লাভবান হবে, দেশ ও জাতি লাভবান হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষা ইনস্টিটিউট একটি গর্বের প্রতিষ্ঠান। ব্রি’র বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করে বাংলাদেশের জন্য উপযোগী একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার অর্থাৎ ধান কাটার মেশিন নিজেরাই উদ্ভাবন করেছে। এ মেশিন দিয়ে স্বল্প জমির ধান অল্প সময়ে কাটা সম্ভব। এটির ইঞ্জিন শুধু দেশের বাহির থেকে আনা হয়েছে। বাকি সকল যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়েছে। এটি তৈরিতে ইতোমধ্যে আমাদের দেশের ৭/৮ ম্যানুফেকচারিং কোম্পানির সহযোগীতা নেওয়া হয়েছে। এ মেশিনের মাধ্যমে ৩ থেকে ৪ বিঘা জমির ফসল প্রতি ঘন্টায় কাটা সম্ভব। আমরা যদি ব্রি’র বিজ্ঞানীদের এ প্রযুক্তি তথা যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারি তবে এটি হবে ব্রি‘র বিজ্ঞানীদের জন্য অসাধারণ সাফল্য। বাংলাদেশের যান্ত্রিকীকরণে এটি একটি বিপ্লব ঘটাবে। 

এরআগে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ব্রি ক্যাম্পাসে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যূরালে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। তিনি ব্রি কর্তৃক সম্প্রতি উদ্ভাবিত নতুন (ধান কাটার মেশিন) কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার প্রযুক্তি পরিদর্শন করেন। এ সময় ব্রি মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবির মন্ত্রীকে ব্রি উদ্ভাবিত ধান কাটা ও মাড়াই যন্ত্র ‘ব্রি হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টার’ সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন। পরে মন্ত্রী বেলুন উড়িয়ে এবং ফিতা কেটে শ্রমিক কলোনীর নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। এরপর কৃষিমন্ত্রী ব্রি ক্যাম্পাসে আয়োজিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

একে