
চট্টগ্রাম বন্দরের ভারি গাড়ি প্রবেশ ফি বা ট্যারিফ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম ট্রেইলর মালিক সমিতি লাগাতার কর্মবিরতি ও ধর্মঘটের মুখে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন চট্টগ্রাম ট্রেইলর মালিক সমিতির নেতারা। তারা ফি প্রত্যাহারের আবেদন জানালে চেয়ারম্যান মৌখিকভাবে ফি আগের ৫৭ টাকা রাখার আশ্বাস দেন। তবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের হালকা যানবাহনের ফি বৃদ্ধি এবং বৃহত্তর পরিসরে নতুন ৪১ শতাংশ বাড়তি ট্যারিফ বহাল থাকায় পরিস্থিতি এখনো ঘোলাটে।
বন্দর ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে ট্যারিফ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন, অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
গত ১৪ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে বন্দরের প্রবেশমূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর ১৫ অক্টোবর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি চালিয়ে আসছিল চট্টগ্রাম ট্রেইলর মালিক সমিতি। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে বন্দরের পণ্য পরিবহনে যুক্ত বিভিন্ন যানবাহনের মালিক-শ্রমিকদের মোট ১৮টি সংগঠন, যারা পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে মোর্চা গড়ে তুলেছে।
গত ১৫ অক্টোবর থেকে ভারি গাড়ি (প্রাইম মুভার, ট্রেইলার, লং ভেহিকল) প্রবেশের ফি ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করা হয়েছিল, যার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি খান মোহাম্মদ সেলিম জানান, গেট ফি বাড়ানোর কারণে আন্ত জেলা রুটে তাদের লাইন খরচ (ফি, টোল, বকশিশ) বেড়ে যাচ্ছিল, যা অযৌক্তিক। মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে তারা সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করলেও লিখিত আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত ফের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ভারী যানবাহনের ফি কমানোর আশ্বাস মিললেও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের প্রবেশ ফি বৃদ্ধি বহাল আছে।
বন্দরে মোটরসাইকেল এবং অটোরিকশার মতো হালকা যানবাহনের প্রবেশ ফি আগের ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৫ টাকা করা হয়েছে, যা প্রায় ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি। এর প্রতিবাদে রবিবার সকালে চার ঘণ্টা (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা) কর্মবিরতি পালন করেছেন কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট কর্মীরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া জানান, সিঅ্যান্ডএফ কর্মীরা সাধারণত কম বেতন পান এবং দিনে তাদের কয়েকবার বন্দরে প্রবেশ করতে হয়। বাড়তি ফির কারণে তাদের দৈনন্দিন ব্যয় বেড়েছে। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে তারা আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
আজকালের খবর/ওআর