
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নিবন্ধন যদি আমাদের দিতে হয় সেটা শাপলা প্রতীক দিয়েই হবে। শাপলা ছাড়া এনসিপির নিবন্ধন হবে না এবং এনসিপিও শাপলা ছাড়া নিবন্ধন মানবে না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, শাপলা না দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কোনো আইনি প্রতিবন্ধকতা দেখি নাই। প্রতিবন্ধকতা অন্য জায়গা থেকে দেখেছিলাম। অদৃশ্য শক্তির এখানে হাত রয়েছে। আমরা সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনেও এই কথাই বলেছিলাম। আপনারা দেখেছেন যে নির্বাচন কমিশনের অনেক সিদ্ধান্ত তাদের মুখ দিয়ে বের না হলেও আমরা বিভিন্ন পত্রিকার প্রথম পেজের মাধ্যমে সেগুলো জানতে পারি। আমরা সে বিষয়গুলো নিয়ে তাদের প্রশ্ন করেছি।
আজ আড়াই ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আড়াই ঘণ্টার মধ্যে প্রথম ৩০ মিনিট আমরা ১৮ বছরের যে ভোটাধিকারের বয়স সেটা নিয়ে কথা বলেছি, প্রবাসী ভোটার নিয়ে কথা বলেছি। দুই ঘণ্টা আমরা তাদের প্রশ্ন করেছিলাম যে প্রতীক প্রশ্নে শাপলা না দিতে চাওয়ার ব্যাখ্যা কী। দুই ঘণ্টা তারা নিশ্চুপ ছিলেন।
কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। কিন্তু আমরা সর্বশেষ তাদের বলে এসেছি যে আপনারা যদি শাপলা না দেন তাহলে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
শাপলা না দিলে ধানের শীষ, তারা ও সোনালি আঁশ বাতিলের দাবি জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, যদি রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতীকের দায়িত্ব তারা নেন যে এ প্রতীক রক্ষা করবেন তাহলে ধানের শীষ এবং শাপলা সবগুলোকে রক্ষা করে ওই ধরনের আইন সংশোধন করতে হবে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের সামনে দুটি পথ রয়েছে। একটি হলো ধান, তারা, সোনালি আঁশ বাতিল করা।
আরেকটি হলো শাপলা দেওয়া। আমরা আশা করি যে কারো প্রতীকই বাতিল না হোক। সুতরাং আমরা শাপলা পেতে আইনি বাধা এবং রাজনৈতিক বাধা কোথাও দেখছি না। এ জন্য আমরা আশাবাদী শাপলা পাব। সে বিষয়টা আমরা তাদের বলে এসেছি। তারা এ বিষয়ে নিশ্চুপ ছিলেন। উত্তর দিতে পারেননি। আমরা ধরে নেব যে তারা এটাতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন।
শাপলার ক্ষেত্রে এনসিপি অনড় রয়েছে জানিয়ে এই মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, আমরা শাপলার ক্ষেত্রে অনড় আছি এবং অনড় থাকব। কারণ, এটা আমাদের অধিকার। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, যেটার আইনি প্রতিবন্ধকতা নেই, রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা নেই, কোথাও প্রতিবন্ধকতা নেই তাহলে এটার সমস্যা কোথায়। আমরা তাদের আজ বলেছি, আপনারা যদি কোথাও থেকে পেশার ফিল করে থাকেন বা কেউ আপনাদের চাপ দিয়ে থাকে আপনারা আমাদের জানান। আমরা আপনাদের কোনো কিছু বলব না, আমরা তাদের সঙ্গে রাজপথে মোকাবেলা করব। কোন প্রভাব বা শক্তি তাদের ওপর বিরাজ করছে অথবা প্রতীক প্রশ্ন রেখে অন্য কোনো নির্বাচনকেন্দ্রিক নতুন কোনো ষড়যন্ত্র তারা করছে। এই মাসের মধ্যেই এটা জাতির সামনে স্পষ্ট হবে এবং এই মাস পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।
শাপলা প্রতীকের দাবিতে গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই চালিয়ে যাবেন উল্লেখ করে নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, লড়াই চালিয়ে যাব গণতান্ত্রিকভাবে এবং আমাদের নিবন্ধনটা যদি প্রতীক প্রশ্ন আসে সেটা শাপলার মাধ্যমে হবে। অন্য কোনো প্রতীকে এনসিপির নিবন্ধন হবে না।
তিনি বলেন, প্রতীক প্রশ্নে নির্বাচন থামবে না। কিন্তু এই প্রতীকের মধ্য দিয়ে যদি নির্বাচন থামানোর কেউ পরিকল্পনা করে যে প্রতীক দেব না, অধিকারটা দেব না; সেই অধিকারের প্রশ্ন আমরা কম্প্রোমাইজ করব না।
বৈঠক শেষে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার নিবন্ধন চলবে। জেন-জি ও তরুণ ভোটারদের কথা ভেবে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ভোটার হওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা।
প্রবাসী ভোটারদের অ্যাপস চালু হতে দেরি হচ্ছে জানিয়ে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, প্রবাসীরা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। আমরা তাগাদা দিয়েছি, চালু হতে দেরি হচ্ছে কেন? এই অ্যাপের ট্রায়াল ও এসবের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, যে প্রক্রিয়ার দিকে ইসি যাচ্ছে, যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসীকে ভোটের বাইরে রাখার একটা পাঁয়তারা চলছে। কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, অ্যাপটি অক্টোবরের মধ্যে তারা চালু করবেন।
আজকালের খবর/বিএস