
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড অংশের ঢাকা-সিলেট মহাসসড়কটি আগামী বুধবার পরিদর্শনে আসবেন সড়ক ও পরিবহন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। স্থানীয়দের দাবি, উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষ্যে এই সড়কে তোড়জোড় করে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্র জানায়, গত শনিবার থেকে অস্থায়ী সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্বরোড গোলচত্বরে কয়েক স্তরে ইট ও বালু বিছানো হয়েছে।
৬০০ থেকে ৭০০ মিটার এলাকা জুড়ে এ কাজ হবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে গোলচত্বর অংশে ১২ মিটার প্রস্থ ও ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য, আর গোলচত্বর থেকে সিলেটমুখী সরাইল কুট্টাপাড়া খেলার মাঠ পর্যন্ত ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে তিন স্তরে ইট ও বালু বিছানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
এরই মধ্যে এ কাজের তদারকি করতে ১২ সদস্যের কমিটি গঠন ও সরাইল এলাকায় একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে কাজ করাচ্ছেন।
এদিকে, কাজের জন্য মূল মহাসড়কটি বর্তমানে অনেকটাই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে মহাসড়কে যানবাহনগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। এতে থেমে থেমে যানজট দেখা দিয়েছে। বিশ্বরোড থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখী পথে কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ রাখলে যানজট আরো বেড়ে যায়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, এক বছর ধরে সওজ বা প্রকল্পের লোকজনের মাথাব্যথা ছিল না। এখন উপদেষ্টা আসবেন বলে সড়ক মেরামত করা হচ্ছে। তাকে দেখানোর জন্য তোড়জোড়ে কাজ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, বৃষ্টির কারণে সড়কে গর্ত ভেসে ওঠে। এতে গাড়ি আটকে ও গাড়ি ধীরগতিতে চলতে গিয়ে যানজট দেখা দেয়। এবার একাধিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় বেশ মেরামতকাজ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এ সড়কটির নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কাজ শেষ হলে এখানে আর যানজটের সৃষ্টি হবে না।
সওজে'র কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মোহাম্মদ তারেক ইকবাল গণমাধ্যমকে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে জনদুর্ভোগ লাঘবে সওজে'র উদ্যোগে কাজ শুরু হয়েছে। তিন স্তরের ইট বিছানো হলে যানজট সৃষ্টি হবে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌ বন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড হয়ে আখাউড়া পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কের প্রাথমিক কাজ শুরু হয় প্রায় আট বছর আগে। পাঁচ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজটি করছে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রস্ট্রাকচার লিমিটেড। ভারতীয় ঋণ ও দেশীয় অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সম্প্রতি প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ১৬০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট তৎকালীন ক্ষমতাচ্যুত সরকার দেশ ত্যাগের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনও চলে যান। কয়েক মাস পর তারা ফিরে এলেও নির্মাণকাজের পণ্য চুরি হওয়ায় তারা ঠিকভাবে কাজ করতে পারছিলেন না।
আজকালের খবর/বিএস