
দেশব্যাপী টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিরোজপুর এর সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর রহমান।
সিভিল সার্জন জানান, মাসব্যাপী ক্যাম্পেইনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে বিনামূল্যে একটি করে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। এক ডোজ টাইফয়েড টিকাই জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) পিরোজপুর সিভিল সার্জন অফিসের সভাকক্ষে সিভিল সার্জন পিরোজপুর ডা. মো. মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও মেডিকেল অফিসার পিরোজপুর সদর অনিন্দিতা কর্মকারের সঞ্চালনায় পিরোজপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে এই প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন - সারভিল্যান্স এ্যান্ড ইস্যুনাইজেশন মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাজিয়া নওশীন, পিরোজপুর জেলা ব্র্যাকের সমন্বয়ক মো. হাসিবুল ইসলাম, জেলা প্রেস ক্লাব পিরোজপুর এর সভাপতি এম এ জলিল,সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু জাফর,সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম সোহেল বিল্লাহ,মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো:শাহীন ফকির, দপ্তর সম্পাদক,এম এ নকিব নাসরুল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ টি এম মনোয়ার হোসেন পলাশ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম শামীম রেজা সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
এসময় টাইফয়েড জ্বর শিশুদের জন্য এক নীরব ঘাতক। প্রতি বছর শত শত শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, অনেকে স্থায়ী জটিলতায় ভুগছে। অথচ একটি মাত্র টিকা এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে।তাই সরকার আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনে ৫ কোটি শিশুকে নিরাপদ ও কার্যকর টিকা বিনামূল্যে প্রদান করতে যাচ্ছে।
দূষিত পানি,খাবার এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এ রোগ বিস্তারে ভূমিকা রাখে জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অনেক অ্যান্টিবায়োটিক এখন আর কাজ করছে না। ওষুধ প্রতিরোধী টাইফয়েড একটি বৈশ্বিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই টিকাই এখন সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি (মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমসহ) শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিদ্যালয়ে টিকা পাবে। স্কুলবহির্ভূত শিশুদের দেওয়া হবে কমিউনিটি পর্যায়ে ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের (যেমন পথশিশু, বেদে পল্লী, চা বাগান, যৌনপল্লী, এতিমখানা, উন্নয়ন কেন্দ্রের শিশু) জন্য থাকবে বিশেষ টিকাদান ব্যবস্থা।অন্যান্য টাইফয়েড টিকার তুলনায় এটি উন্নততর, অধিক কার্যকর ও নিরাপদ বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার পর হালকা জ্বর, ক্লান্তি, বা ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা হতে পারে। তবে এটি অস্বাভাবিক নয় এবং দ্রুত সেরে যায়।” রহমান বলেন, টিকার কারণে বাংলাদেশ পোলিও মুক্ত হয়েছে, হাম-রুবেলা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ধনুষ্টংকার নির্মূল হয়েছে। কিছু গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। তাই গুজবে কান না দিয়ে, টিকা সম্পর্কে তথ্য পেতে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শিশুদের টিকা দেওয়ার আহ্বান জানিযে তিনি বলেন, আসুন, শিশুদের সুরক্ষায় এক ডোজ টাইফয়েড টিকা নিশ্চিত করি। গড়ে তুলি একটি সুস্থ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
উক্ত প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দরা টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরেন এবং সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যাসহ উত্তর দেন পিরোজপুরের সিভিল সার্জন।
উল্লেখ্য পিরোজপুর জেলায় সর্বমোট ৩,২৯,৮৬৯ জনকে টিকা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছে জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আজকালের খবর/বিএস