
কুমিল্লায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার দুলাল (৪৮) সহ ১৪ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি মডেল মসজিদ সংলগ্নে ডাকাতি সংগঠিত করার গোপন সংবাদে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার (এসপি) নজির আহমেদ খান এক প্রেসবিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মুরাদনগর উপজেলার উড়িরচর খা-বাড়ির মৃত. আবুল হাসেমের পুত্র মো. মনির হোসেন (৪০), দেবীদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নের নবিয়াবাদ গ্রামের মৃত. সোনামিয়ার পুত্র শাহ আলম দুলাল (৪৮), ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার সিদলাই গ্রামের ফরিদ মিয়ার পুত্র মো. মামুন মিয়া (২৪), একই উপজেলার মোখলেসুর রহমানের পুত্র মাহবুব আলম (৩৮), কুমিল্লা সদর দক্ষিন উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের বিজয়পুর গ্রামের ইলিয়াছের পুত্র আলমগীর হোসেন (৩০), বুড়িচং উপজেলার জুরাইন মাইকপাড়া গ্রামের মৃত. নসু মিয়ার পুত্র মো. আল আমিন (৩২), বরুড়া উপজেলার মহেশপুর কাজী বাড়ির মৃত. আব্দুর রবের পুত্র মো. কামাল হোসেন (৩২), একই উপজেলার খোশবাশ ইউনিয়নের বাশতলী নোয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুল করিমের পুত্র মো. খোকন (৪০), একই উপজেলার দক্ষিণ হোসেনপুর গ্রামের মুবিনের পুত্র আল আমিন (২৫), চান্দিনা উপজেলার গল্লারই ইউনিয়নের কংগাই গ্রামের তাজুল ইসলামের পুত্র শরীফ মোশারফ শরীফ (৩২), একই উপজেলার বারেরা ইউনিয়নের চিলোড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র মো. সুমন (৩৩), একই উপজেলার চিলোড়া উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র মো. সোহেল (২৬), বাঙ্গরা বাজার থানার আকবপুর ইউনিয়নের হিরাকাশি গ্রামের কালা মিয়ার পুত্র মো. আব্দুল আউয়াল (৫০) এবং চাদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার সন্তোপুর গ্রামের নির্মল বিশ্বাসের পুত্র নিহার বিশ্বাস(৪৮)। এ সকল আসামিদের বিরুদ্ধে কম বেশি করে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর লালমাই উপজেলায় দু’টি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এরপর জেলা পুলিশ সমগ্র জেলায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন বাঙ্গরা থানা এলাকায় ডাকাত দল সঙ্গবদ্ধভাবে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ টহল জোরদার করায় ওই এলাকায় ডাকাতি করতে ব্যর্থ হয় তারা। গোপন গোয়েন্দা সূত্র এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর সহযোগীতায়এই নিরাপত্তা কার্যক্রম চলে। জেলা পুলিশ সন্ধীগ্ধ স্পটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করে।
তিনি আরো জানান, এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে দেবীদ্বার থানায় ডাকাতির সিদ্ধান্ত নিলে পুলিশ জানতে পেরে উপজেলার ভিংলা বাড়ি এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করে। পুলিশের চেকপোস্ট দেখে ডাকাত দল দরজা খুলে ও জানলার গ্লাস ভেঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ধাওয়া করে পুলিশ ডাকাত দলের ১৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন। তাদের কাছ থাকা ৪ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, একটি স্বর্ণের চেইন, এক জোড়া নুপুর, নগদ ২০ হাজার টাকা এবং কলো রঙের একটি হাইএস মাইক্রোবাস (রেজিঃ ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৭১৯৭) গাড়িও জব্দ করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতের কাজে ব্যবহৃত দেশীয় কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর লালমাই এলাকায় ৩টি, বরুড়ায় ১টি ও নবীনগর উপজেলায় ১টি ডাকাতি করেছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা দায়ের শেষে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার- ব্রাহ্মনপাড়া সার্কেল’র সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. শাহীন ও দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, ডাকাতির ঘটনায় তথ্য-উপাত্য সংগ্রহে সংবাদ মাধ্যমকে বিলম্বে জানানো হয়েছে।
আজকালের খবর/ওআর