কুমিল্লার দেবীদ্বারে কলেজ শিক্ষক কতৃক একই কলেজের শিক্ষার্থীকে হোয়াটঅ্যাপে উত্যক্ত করায় ওই শিক্ষার্থীর প্রেমিকের নেতৃত্বে ৬ যুবক কলেজ শিক্ষকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, টাকা, মোবাইল ছিনতাই, স্থানীয়রা ৪ সন্ত্রাসীকে গণপিটুনি দিয়ে আটক করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হামলার শিকার ‘দি রয়েল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ’ শিক্ষক মো. কামাল হোসেন জানান, কলেজের প্রয়োজনে জনতা ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৪৪ জাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে আসার পথে কলেজ গেইটে ২টি মোটর সাইকেলযোগে আসা ৬ সন্ত্রাসী আমার পথ রোধ করে, সাথে থাকা টাকাগুলো তাদের দিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় আমি দিতে অপারগতা দেখালে ওরা আমাকে বেধরক মারধর করে বাম পকেটে থাকা ৫০ হাজার টাকার ২টি বান্ডেলের ১ লাখ টাকা ও একটি মোবাইল এবং আমার মানি ব্যাগে থাকা ৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে ডান পকেটে থাকা ৪৪ হাজার টাকা ও আরো একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে গ্রামবাসী দেখে ৪ জনকে আটক করলেও বাকি ২ জন মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়।
আটক ৪ সদস্য দেবীদ্বার পৌর এলাকার মীর্জানগর গ্রামের আব্দুর রহিমের পুত্র আবু কাউছার (২৮); মো. রিয়ান (২০), সে দেবীদ্বার উপজেলার শিবনগর গ্রামের প্রবাসী কবির হোসেনের পুত্র; পৌর এলাকার পান্নারপুল গ্রামের প্রবাসী রিপন মিয়ার পুত্র ছামিল (১৭) এবং মুরাদনগর উপজেলার ডালপাড় গ্রামের শামিম মিয়ার পুত্র রিপন (২০)।
রিয়ান, ছামিল, রিপন, কাউছার জানায়, তাদের আত্মীয় সর্ম্পকে অত্র কলেজের এক ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় ৭ বিষয়ে ফেল করে। এ বিষয়ে তার কলেজের শিক্ষক কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রাতে ফোন দিতে বলেন। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলে তিনি বিভিন্নভাবে অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকেন এবং কুমিল্লায় ঘুরতে যাবার কথা ও গোপনে দেখা করার কথা বলেন। এছাড়াও তার কথামত চললে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।
এ বিষয়ে জানতে কলেজে ওই শিক্ষক মো. কামাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজগুলো দেখালে সে দৌড়ে পালিয়ে যেতে চায়। এ সময় তার সাথে হাতাহাতি হয়। তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা এসে আমাদের মারধর করে কলেজের একটি কক্ষে আটক করে রাখে। তার সাথে থাকা টাকার বিষয় আমরা জানিনা। তবে আমাদের সাথের ২ জন মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যাওয়া সাজেদুল (২৩)- সে খলিলপুর গ্রামের কাজী জসিম উদ্দিনের ছেলে ও অপরজন অজ্ঞাত ৪০ হাজার টাকার একটি বান্ডেল নিয়ে যায় বলে ফোনে জানায়। আমরা টাকার বিষয় কিছুই জানতামনা।
দি রয়েল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজমুল হাসান জানান, আমার কলেজের শিক্ষক ও হিসাব রক্ষক কোনো ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কোনো কাজ বা আচরণ করলে তা কলেজ কর্তপক্ষকে জানাতে পারত। তা না করে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ও টাকা মোবাইল ছিনতাই করার কথা নয়। পরে জানতে পারি ওই ছাত্রীর প্রেমিক ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে আমার হিসাব রক্ষকের ওপর এ হামলা করে।
ভিক্টিম ছাত্রীর পিতা জানান, আমরা ও কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ও আমার মেয়ের সাথে অনাকাঙ্খীত বিষয়ে আজ সন্ধ্যায় কলেজ ক্যাম্পাসে বসে সমঝোতায় এসেছি।