
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে বলে জানিয়েছেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাত পৌনে ১০টার দিকে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এ সময় তিনি বলেন, গত ১ জুলাই থেকে আমরা সারা দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছি। সে হিসেবে আমরা ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ পদযাত্রা করব। গোপালগঞ্জের মানুষের কথা শুনব-এমন ঘোষণা দেওয়া ছিল। কিন্তু ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করে আজ জঙ্গি কায়দায় আমাদের ওপর হামলা করেছে। আজ আওয়ামী লীগ তার আসল রূপ দেখিয়েছে। তারা একটি জঙ্গিবাদীতে পরিণত হয়েছে। গোপালগঞ্জ ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের পদযাত্রা কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে ফরিদপুর, রাজবাড়ি হয়ে পদযাত্রা চলমান থাকবে। যত বাধাই আসুক যে কোনো মূল্যে আমরা আমাদের পদযাত্রা কর্মসূচি চলমান রাখব।
আওয়ামী লীগের এই জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে আজ সারা দেশে প্রতিবাদ জানিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো। আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে এনসিপি।
আমরা দেশের যেখানেই পদযাত্রায় অংশ নিয়েছি, সেখানেই সেখানকার পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছি। সে হিসেবে গোপালগঞ্জে আসার আগেও আমরা এখানকার প্রশাসন এবং পুলিশকে জানিয়েছি। তারা যেখানে ডিরেকশন দিয়েছে আমরা সেভাবে সে রুটেই গিয়েছি। কিন্তু তাদের তৎপরতা সন্তোষজনক ছিল না। আমরা আসার আগেও সেখানে একবার হামলা হয়েছে। প্রশাসন এবং পুলিশ আরও আগে থেকে তৎপর থাকলে এমন হামলা ঠেকানো যেত বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশের সব জায়গায় সভা-সমাবেশ করার অধিকার আমাদের আছে। গোপালগঞ্জ দেশের বাইরে না। সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব আমাদের সভা-সমাবেশের পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। আরও আগে ব্যবস্থা নিতে পারত। সরকারের মধ্য থেকে স্যাবোটাজ হয়েছে কি না তা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জঙ্গি সংগঠনের মতো আচরণ করেছে। শুধু গোপালগঞ্জ না তারা দেশের যে কোনো জায়গায় এমন জঙ্গি আচরণ করতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
তিনি বলেন, এনসিপির তিন নেতা গুরুতর আহত হয়েছে। ৬টি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। মুজিববাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে, চলবে।
এর আগে গোপালগঞ্জে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনার পর সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় সন্ধ্যায় খুলনায় পৌঁছান এনসিপির শীর্ষ নেতারা। সেখানে তারা খুলনা সার্কিট হাউসে অবস্থান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সারোয়ার তুষার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আজকালের খবর/বিএস