
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের সঙ্গে আজ বুধবার ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালন করেছে। দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, নাট্য মঞ্চায়ন এবং দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্যাপন করা হয়।
দিবসটির সূচনা হয় বুধবার (১৬ জুলাই) ভোরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মাধ্যমে। এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের পক্ষ থেকে শহীদ আবু সাঈদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রংপুর আঞ্চলিক কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক আবু হাফিজ মো. ফজলে নিজামী। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রংপুর আঞ্চলিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
দিবসের মূল আয়োজন হিসেবে বিকেলে বাউবির প্রধান অডিটোরিয়ামে মঞ্চস্থ হয় দর্শন ও ন্যায়বিচারের দর্শনে ভরপুর নাটক সক্রেটিসের জবানবন্দি। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে নির্মিত এ নাটক পরিবেশন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যসংগঠন দৃশ্যপট নাট্যগোষ্ঠী। নাটকটির নির্দেশনা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা, মুদ্রণ ও বিতরণ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আলী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত। এই দিনে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বীজ বপন করে গেছেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের এই ইতিহাস জানা জরুরি, এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হওয়াও জরুরি। বাউবি সত্য, ন্যায় ও মানবতাবোধ চর্চার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠবে-এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা. শামীম। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। তারা সকলে অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে দিনটিকে গভীরভাবে অর্থবহ করে তোলেন।
এছাড়ও শহীদদের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ বাউবির সকল আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ দোয়া মাহফিল। এতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের আরোগ্য কামনা করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উদ্যাপন কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি একটি জাতীয় চেতনা জাগরণের অনন্য উদ্যোগ। বাউবির এ আয়োজন তরুণ শিক্ষার্থীদের ইতিহাস চর্চা, দেশপ্রেম, ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আজকালের খবর/ওআর