
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেননি শুধু, সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে রেখে গেছেন অনন্য, অতুলনীয় দর্শন। ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া নতুন সংবিধানে দারিদ্র মুক্তির চমৎকার পথ নির্দেশনা দিয়েছেন। ধনী দরিদ্রের বৈষম্য দূর করতে বলিষ্ঠ কণ্ঠে ব্যক্ত মুক্ত করেছেন প্রতিশ্রæতি। গরিব-দুঃখী সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ গ্রামের পরিশ্রমী কৃষক যারা রোদেপুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে অনেক খেটে ফসল ফলায় তাদের সবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিজের দেয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ছিলেন নির্ভীক।
আজ এতো বছর পরও বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক মনে হয়। তার চিন্তাচেতনায় এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং স্বয়ম্ভরতা অর্জন ছিল মূল কেন্দ্রবিন্দু। অবহেলিত ভাগ্য বিড়ম্বিত নিপীড়িত, বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ভাগ্যোন্নয়নে তিনি সে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তা নিয়ে শুরুতে কারো কারো মনে সংশয়, শঙ্কা, সন্দেহ দেখা দিলেও একটি পর্যায়ে যখন বঙ্গবন্ধুর নেয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হতে শুরু করলো এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধির প্রকাশ ঘটাতে শুরু করলো তখন সবাই এই অসাধারণ মহান নেতার বিজ্ঞোচিত অর্থনৈতিক দর্শনের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু তার বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কাঠামোতে যে বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছিলেন তা হলো জনগণের উন্নয়নের মাধ্যমে সর্বোচ্চ জনকল্যাণ নিশ্চিত করা। যা আজকের সময়ের প্রেক্ষাপটে উন্নয়নশীল দেশের অভিযাত্রায় অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বঙ্গবন্ধু যে ধারণাটি পোষণ করতেন তা হলো, দেশের মানুষ যদি হতদরিদ্র থাকে তবে দেশও হতদরিদ্র থাকবে। কাজেই মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে যখন মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলা যাবে তখন দেশও সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। বঙ্গবন্ধু তার অর্থনীতির ধারণায় সম্পদের সুষম বণ্টন ও সম্পদ সৃষ্টির বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এ দু’টি উপাদানই মানবিক উন্নয়নের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস আলোচনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান ও ভূমিকা মূল্যায়ন করতে হাজার বছর ধরে আগত বাঙালি নেতাদের প্রসঙ্গ আলোচনা নিয়ে আসতে হয়। যুগের-পর-যুগ, শতাব্দীর-পর-শতাব্দী হাজারো বাঙালি সন্তান এ দেশ, এ জাতি, এ ভাষার বিকাশ ও শ্রীবৃদ্ধি সাধনে অবদান রেখেছেন। এদের প্রত্যেকেরই কোনো-না-কোনো বিশেষ ধারায় বাঙালির জাতিসত্তাকে বিশ্বে পরিচিত করে তুলতে বিশেষ ভ‚মিকা রয়েছে। পাকিস্তান আমলে এসব প্রশেড়ব বাঙালির আবেগের নেতা হয়ে এসেছিলেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক। কিন্তু নানারকম ষড়যন্ত্র, দ্ব›দ্ব এবং শাসকচক্রের ক‚টচালে শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সম্ভাবনা স্তিমিত হয়ে আসে। তবে তার সমসাময়িক রাজনীতিবিদ উর্দুভাষী বাঙালি নেতা হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীরই পাকিস্তানের জাতীয় নেতা হওয়ার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা ফুটে উঠেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের পাঞ্জাবি শাসক? সে সম্ভাবনাকে অঙ্কুরেই উপড়ে ফেলে। কিন্তু অঙ্কুরেই মূলোৎপাটনের এই পাকিস্তানি কর্মসূচি ব্যর্থ হয় তরুণ ও সম্ভাবনাময় নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বেলায়। শেখ মুজিব বাঙালির হৃদয়ের প্রাণটি যথার্থই ধরতে পেরেছিলেন। ফলে তার পরিকল্পনা ও কর্মসূচির সকল কিছুরই ভিত্তিমূল হয়ে দাঁড়ায় বাংলার ছাত্রসমাজ। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যেই তিনি পাঞ্জাবি শাসককুলের সমর্থকদের হাত থেকে বের করে এনে ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ছাত্রলীগকে পুনর্গঠিত করেন। বাঙালির স্বাধীনতার ও স্বাধিকার আন্দোলনের সকল কর্মসূচিরই প্রথম ভিত্তি রূপ লাভ করে ছাত্রলীগের পুনর্গঠনের মধ্যদিয়ে। এরপর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলার ও বাঙালির চেতনা বিনির্মাণে একের-পর- এক কর্মসূচি।
পূর্ববাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং চেতনাকে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম থেকেই নিজের পরিকল্পনাকে গুছিয়ে আনতে শুরু করেন। তিনি তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে ছিলেন সচেতন এবং অবিচল। তিনি জানতেন তিনি কী করতে যাচ্ছেন। এই সংগ্রাম যে সুকঠিন এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ তা তার জানা ছিল। তিনি এও জানতেন, পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে মহাসংগ্রামের ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো শক্ত বুকের পাটার অনেক বাঙালি নেতারও অভাব রয়েছে। ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সকল পরিকল্পনা ও কর্মসূচির প্রধান অবলম্বনই হয়ে ওঠে তৎকালীন পূর্ব বাংলার ছাত্রসমাজ এবং আওয়ামী লীগের তরুণ-নেতৃত্ব। সামরিক শাসকদের ফাঁদে বরাবরই পা দিয়েছেন কিছু কিছু বাঙালি রাজনৈতিক নেতা। এদের চক্রান্তের অংশ হিসেবেই ১৯৫৭ এবং ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পূর্ব বাংলায় বেশ কয়েকটি পরিকল্পিত দুর্ঘটনার জন্ম দেওয়া হয়। এর মধ্যে আদমজি পাটকলে নোয়াখালী বনাম অন্যান্য জেলা শ্রমিক- দাঙ্গা এবং প্রাদেশিক সংসদ ভবনে সদস্যদের আত্মঘাতী লড়াই ছিল অন্যতম।
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম সামরিক আইন জারির ক্ষেত্রে এই ঘটনাসমূহের সূত্রই ব্যবহার করা হয়েছিল। খুব সহজ ছিল না সামরিক শাসনের এই ভয়াবহ বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসা।
১৯৬২ সালের ৩১শে জানুয়ারি শাসক আইয়ুব খানের উপস্থিতিতেই ঢাকা শহরে ছাত্রলীগ ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ সামরিক শাসন বিরোধী মিছিল বের করে দিয়ে শেখ মুজিব বস্তুত প্রকাশ্যেই চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেন। এই সাহসের সূত্রেই ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ই ফেব্রæয়ারি লাহোরে পাকিস্তানের সকল রাজনৈতিক দলের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা ঘোষণা করে বাংলার অবিসংবাদিত নেতারূপে আবির্ভূত হন। বস্তুত ৬-দফা ছিল বাঙালির স্বাধীনতার ১-দফা কর্মসূচিরই প্রাথমিক ধাপ।
বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্যে প্রস্তুত করে তুলতে ৬-দফার প্রয়োজন ছিল। বঙ্গবন্ধু জাতির জন্যে কী করতে যাচ্ছেন, ছয়দফা ছিল দেশের মানুষের জন্য একটা বিশেষ ‘ম্যাসেজ’। এতে প্রাণ-সংশয়ের ঝুঁকি ছিল, কিন্তু বাঙালি জাতির হাজার বছরের স্বপ্ন ও গৌরবকে ফিরিয়ে দিতে তিনি সেই ঝুঁকি গ্রহণ করেছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানকে এই পরিকল্পনার ‘মূলনেতা’ বলে পাকিস্তান সরকারের অভিযোগে প্রকাশ পায় এবং তাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। শেখ মুজিব তখন কারাগারেই ছিলেন এবং ১৯৬৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি তাকে বেকসুর খালাস দিয়ে সামরিক বিধির আওতায় জেলগেটেই আবার ১৮ই জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্তে আগরতলা মামলার সত্যতার অনেক দলিল ও তথ্যাদি পাওয়া গিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ও বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যেও যেসব স্লোগান বেছে নিয়েছিলেন তাও তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭০ সালেই বঙ্গবন্ধু স্লোগান তোলেন : আমার দেশ-তোমার দেশ : বাংলাদেশ-বাংলাদেশ তোমার আমার ঠিকানা : পদ্মা-মেঘনা-যমুনা জাগো জাগো : বাঙালি জাগো জয় বাংলা। এর ভিত্তিতেই ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু এবং তার দল আওয়ামী লীগ জনগণের ‘ম্যান্ডেট’ লাভ করে। বঙ্গবন্ধু তার নিজের মধ্যেও প্রচÐ শক্তি অনুভব করেন, যে স্বপড়ব তাকে আজীবন লালন করে এসেছে তার বাস্তবায়নে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠেন। তিনি জানতেন পাকিস্তানিরা বাঙালিদের হাতে কোনোদিন ক্ষমতা তুলে দেবে না। ফলে পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের মুখে পয়লা মার্চ বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে ‘যে-কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে’ নির্দেশ দেন। ১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু যে উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগকে পুনর্গঠিত করেছিলেন, তার সেই ছাত্রলীগ ২রা মার্চ (১৯৭১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা প্রকাশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে উড়িয়ে দেয়। ৩রা মার্চ পল্টন ময়দানে লাখো মানুষের সমাবেশে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলা ঘোষণার সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্য লালিত একটি জাতির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকেও তিনি নিজ কূটনৈতিক প্রজ্ঞায় সম্পন্ন করে গিয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বাঙালি জাতিকে তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন জাতিসত্তার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে যান। আর এই তালিকাভুক্তির মাধ্যমে সর্বশেষ এবং পূর্ণাঙ্গ স্বপ্নপূরণ ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাঙালি জাতির। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পেয়ে নিজ জন্মভূমিতে ফিরে এসেছিলেন ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি। এটা ছিল মৃত্যুর মুখ থেকে তার দ্বিতীয়বার ফিরে আসা। জনগণের ভালোবাসায় তিনি সেদিন আবেগে ছিলেন উদ্বেলিত। তিনি জনগণকে খুব ভালোবাসতেন। জনগণের ওপর থেকে তিনি কখনো বিশ্বাস হারাননি। তাই প্রায়ই বলতেন, ‘মাই পিপল, আমার জনগণ’। দেশে-বিদেশে কোনো ব্যক্তি বা দেশকে তিনি কখনোই ভয় পেতেন না। তিনি বলতেন, ‘শেখ মুজিব কারো কেনা গোলাম না।’ আজীবন মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে এই বাঙালি বীর এভাবে এই জাতিকে তার শাহাদাতের মধ্যদিয়ে মহিমান্বিত করে গিয়েছেন। বাঙালির ইতিহাসে তার আগমন ছিল তাই অপেক্ষিক, তিনি জন্মগ্রহণ না করলে বাংলা ও বাঙালি জাতির মুক্তির প্রশড়বটি আজও হয়তো অপেক্ষমানই থেকে যেতো। বাঙালি জাতির হাজার শোকর, এই মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো আপোষহীন বাঙালি, যার অমরতার সোনার কাঠির ছোঁয়ায় এই জাতি জেগে উঠেছিল।
পৃথিবীর অন্যতম একটি পশুশক্তির বিরুদ্ধে তার নেতৃত্বে এবং তার নামের বরাতেই যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালে জয়লাভ করেছিল বাঙালি। তার অবদান ও দানের কথা তাই সোনার অক্ষরেই এই জাতির প্রজন্মের-পর-প্রজন্মের হৃদয়ে লেখা থাকবে। কারণ তার প্রিয় জনগণকে তিনি উপহার দিয়ে গেছেন একটি স্বাধীন আবাসভ‚মি। বাঙালি একটি অতি প্রাচীন ঐতিহ্যশালী জাতি হলেও বঙ্গবন্ধুর হাতেই তার প্রথম আন্তর্জাতিক ও বিশ্বজনীন স্বীকৃতি লাভ ঘটে।
স্বাধীনতার পর এই দেশ ও জাতির প্রতি ছিল তার অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি এর অনেক কিছুই করে যেতে পারেননি। যে যোগ্য নেতৃত্বে তিনি এই দেশ ও জাতিকে স্বাধীন করেছিলেন, সেই নেতৃত্ব দ্বারা তার এদেশকে পৃথিবীর এক সুন্দর বাসগৃহ হিসেবে গড়ে তুলে দিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। সেই লক্ষ্যে তার প্রচেষ্টা ও আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সার্বিক সাফল্য পেতে তার যে সময়ের প্রয়োজন ছিল, সে সময় ও সুযোগ দিতে শত্রুরা ছিল নারাজ। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে তার প্রশাসনের যাত্রা শুরুই হয়েছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি, বিধ্বস্ত অবকাঠামো এবং লাখো মানুষের স্বজন-হারানোর বেদনার কানড়বা ও রোলের মধ্যদিয়ে। এরপরও মাত্র দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যদের তিনি তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
দুনিয়ার সামরিক ইতিহাসে এত দ্রæত বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহারের ঘটনা এই প্রথম। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত এক কোটি মানুষের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনকে করেছিলেন তিনি নির্বিঘœ এবং তাদের পুনর্বাসনকে করেছিলেন সমাপ্ত। মাত্র একবছরে জাতিকে একটি পূর্ণাঙ্গ সংবিধানও তিনি উপহার দিতে পেরেছিলেন।
১৯৭৪ সালেই বঙ্গবন্ধু ‘বাংলাদেশ সাহায্যদাতা গোষ্ঠী’ গঠন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষকের জমির খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন তিনি এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন করার লক্ষ্যে জাতীয়করণ করেছিলেন শিক্ষার এই মাধ্যমকে। বিশ্বের কোনো দেশেই বিপ্লব বা মুক্তিযুদ্ধের পরপরই নির্বাচন বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের এক বছরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক সরকার কাজ শুরু করে।
রেজাউল করিম খোকন : সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা ও কলাম লেখক