
অফিসে অনিয়মিত উপস্থিতির অভিযোগ থাকলেও মহান বিজয় দিবসের মতো রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতেও অনুপস্থিত ছিলেন পীরগাছা উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা। এতে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।
অপরদিকে অসম্মানজনকভাবে পতাকা উত্তোলনের ছবি ধারণ করায় সাংবাদিকদের মাঠ থেকে বের হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে সাংবাদিকরা জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান বয়কট করে বের হয়ে যান।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রংপুরের পীরগাছা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ বসাকের নেতৃত্বে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা।
তবে জাতীয় দিবসের গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মসূচিতেও অনুপস্থিত ছিলেন- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানভীর হাসনাত রবিন, খাদ্য নিয়ন্ত্রক আকলিমা বেগম, সমাজসেবা কর্মকর্তা এনামুল হক, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলোয়ারা বেগম এবং সাব-রেজিস্ট্রার। শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পনের সময় সমাজ সেবা অফিসার এনামুল হক অনুপস্থিত থাকলেও পরবর্তীতে তাকে দেখা গিয়েছে, কিন্তু অন্য অফিসারদের পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক হলেও তারা কেউই অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। এদিকে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ রয়েছে, তিনি মাঝে মাঝে অফিসে এলেও দুপুরের পর উপস্থিত হন এবং অফিস সময়ে কাজের পরিবর্তে গল্পগুজবে সময় কাটান।
অন্যদিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এনামুল হকের বিরুদ্ধেও দেরিতে অফিসে আসার অভিযোগ রয়েছে। তিনি বর্তমানে ইটাকুমারি ইউনিয়নের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকলেও অভিযোগ রয়েছে, অফিসে অনুপস্থিত থাকলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বের কথা উল্লেখ করেন, আবার ইউনিয়ন পরিষদে না থাকলে উপজেলা অফিসে আছেন বলে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ ধরনের দায়িত্বহীনতা প্রশাসনিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে এবং সাধারণ মানুষের সেবাপ্রাপ্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তারা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তারা রিসিভ না করায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশণের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। যা সরাসরি জাতীয় পতাকাকে অসম্মান/অবমাননার শামিল। পরে কর্মচারীদের দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি জেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আছি, এ বলে ফোন কেটে দেওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ বসাককে একাধিকবরা ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি, ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি জবাব পাঠাননি।
আজকালের খবর/