প্রকাশ: রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:৫৯ পিএম

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা বাবুপাড়া ইউনিয়নের ভট্টাচার্যপাড়া এলাকার সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত আশরাফুজ্জামান আরিফ (৩৫) এর বিরুদ্ধে আপন ফুফুর পরিবারকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বেড় করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মোছা. শাবানা খাতুন (৪৭) এখন বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া করে স্বামী সন্তান নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী বিচার পেতে পাংশা মডেল থানা ও আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত আশরাফুজ্জামান আরিফ ওই এলাকার আব্দুল কাদের মোল্লা ওরফে তোতার ছেলে। অন্যদিকে ভুক্তভোগী মোছা. শাবানা খাতুন, আব্দুল কাদের মোল্লা ওরফে তোতার আপন বোন।
ভুক্তভোগী মোছা. শাবানা খাতুন বলেন, আমরা ৫ ভাই ৫ বোন। বাবার সম্পত্তির ২০ শতাংশ জমি আমি ভাগে পেয়েছি। আমার ভাইদের চিহ্ন জাইগাতেই বাড়ি করে বসবাস করতাম। আমার বড় ভাইয়ের ছেলে আরিফ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। তবে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত হওয়ায় তার চাকরি চলে যায়। সে একাধিক বার ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। এর আগে রাজবাড়ী জেলা ডিবি পুলিশের হাতে ৮০ হাজার পিস ইয়াবা টেবলেটসহ গ্রেপ্তার হয়। সে বাড়িতে আশার পর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, এর আগে মাদক কারবার বন্ধ করতে বলায় সে তার মা-বাবাকে পিটিয়ে আহত করে হসপিটালে পাঠিয়েছে। তারপর সে ইয়াবা সেবনের জন্য আমার বাড়িতে কয়েকবার গেলে আমি বাঁধা দেই। সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ও আমার স্বামী স্ত্রীদের হত্যার হুমকি দেয়। সর্বশেষ গত বছরের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে আমার স্বামী বাবুপাড়া মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে প্রাইভেট কারে বাড়ি আসার পথে আরিফ তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় প্রাইভেটকারের গ্লাস ভেঙে ফেলে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আরিফ কয়েকজন সহযোগী নিয়ে হসপিটালে এসে আমার স্বামীর শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। আমার চিৎকারে অন্যান্য রোগীর স্বজন ও নার্সরা এগিয়ে আসলে আরিফ ও তার সহযোগীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে আমি আমার স্বামীকে নিয়ে পাংশা শহরে বাসা ভাড়া করে থাকি। আমার একমাত্র ছেলে ঢাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকে। আরিফ আমার বাড়ি যেতে দেয় না। সে আমার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। পুকুরের মাছ, গাছের ফল, বাগানের বাঁশ কেটে নিচ্ছে। আমি অসহায়ের মতো দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।
তবে অভিযুক্ত আশরাফুজ্জামান আরিফ এর সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয় নাই।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, আশরাফুজ্জামান আরিফ এর অত্যাচারে গ্রামের প্রতিটি মানুষ অতিষ্ঠ। সে এলাকায় মাদকের স্বর্গরাজ্য করে তুলেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে তার কাছ থেকে ইয়াবা কিনতে। প্রশাসন কিছু বলে না। সে আওয়ামী লীগ আমলে জিল্লুল হাকিমের সহযোগিতা মজনুর ক্যাডার ছিলো। এখন বিএনপির বড় নেতা হয়েছে। এলাকার মানুষ কিছু বলতে সাহস পায় না।
এর আগে ২০২১ সালের ৬ আগষ্ট বিপুল পরিমাণ ইয়াবা টেবলেট ও বিদেশি পিস্তলসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় আরিফুজ্জামান আরিফ। র্যাবের চোখ ফাঁকি দিতে নিজেকে সেনাবাহিনী সদস্য পরিচয় দিয়েছিলো এই আরিফ।
আজকালের খবর/ওআর