
দক্ষিণ কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কটি (কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক) আজ পরিণত হয়েছে অবৈধ পার্কিং এবং ঝুপড়ি বাজারের আবাসস্থল। কোটবাজার ও কুতুপালং এলাকায় দুই পাশে দোকানপাট ও যানবাহনের দখলে জনদুর্ভোগ নিত্যদিনের নিয়ম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোটবাজারে এক পাশে সারি সারি সিএনজি, অটোরিকশা ও ইজিবাইক, অপর পাশে ঝুপড়ি দোকান। একই চিত্র কুতুপালং, মরিচ্যা, বালুখালী, থাইংখালী ও পালংখালী বাজারেও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট সড়কে দোকান বসিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে ১০০–২০০ টাকা এবং গাড়ি পার্কিং থেকে ২০–৫০ টাকা চাঁদা আদায় করছে। এই অর্থ দিয়ে প্রশাসনের একাংশকে ম্যানেজ করে তারা সড়ক দখল করছে। এর ফলে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যানবাহন, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এবং জরুরি রোগীবাহী গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে। অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে সময়মতো পৌঁছাতে পারছে না। দোকানদাররা সকাল-বিকেলের এই যানজটে তাদের ব্যবসা করতে পারছে না। ভোগান্তি আরও বেশি রাস্তায় দীর্ঘ সময় আটকে থাকা রোগী, বয়স্ক মানুষ ও সাধারণ যাত্রীদের জন্য।
কোটবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খুরশেদ বাবুল বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে আমরা দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকি। শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এবং রোগীবাহী যানবাহন সঠিক সময়ে চলাচল করতে পারছে না। ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল সময়মতো বাজারে পৌঁছাতে পারছে না। আমরা চাই অবৈধ দোকানগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করা হোক, সড়ক চালু হোক পূর্ণাঙ্গভাবে। মানুষ ও যানবাহন চলাচল করুক নির্বিঘ্নে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আরও জানান, ‘প্রতিটা বাজার সংলগ্ন মার্কেটে আমরা লাখ লাখ টাকা জামানত দিয়ে ঋণের টাকায় প্রতিষ্ঠান ও পুঁজি গড়েছি। কিন্তু, সড়কে বসা দোকানগুলোর কারণে আমাদের দোকানে কাস্টমারের ভীড় হয় না। দেখা গেছে মার্কেটের প্রবেশ পথ দখল করে দোকান বসিয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত জ্যামের কারণে দূরদূরান্ত থেকে আগের মতো কাস্টমার ভীড় করছে না, অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এই পরিস্থিতি আমাদের ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণ হচ্ছে।’
উখিয়া প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার বলেন, ‘এ সড়কের অবস্থা শুধু যানজটের কারণে নয়, এটি স্থানীয়দের জীবনের ওপর প্রভাব ফেলছে। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত উদ্যোগ নিক, যেন আরাকান সড়ক সম্পূর্ণরূপে দখলমুক্ত হয় এবং সকলের চলাচল স্বাভাবিক হয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘শীঘ্রই যৌথ অভিযান হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সড়ক দখলমুক্ত করা হবে।’
স্থানীয়রা আশাবাদী, ঘোষিত অভিযান কার্যকর হলে আরাকান সড়ক ফিরে পাবে তার গতির মর্যাদা এবং শেষ হবে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি।
আজকালের খবর/ওআর