ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহকে শ্বাসরোধে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি একই সময়ে ‘মিল্লাত পরিবার’ ব্যানারে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রশাসন ভবনরে সামনে অবস্থান নেন তারা। একই সময় ‘রাবিস্থ মিল্লাত পরিবার’ ব্যানারে প্যারিস রোডে এবং ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মিল্লাতিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ আহ্বানে ঢাকা রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ইবি শিক্ষার্থীরা বলেন, কখন কোন সময় কাকে উচ্চতর তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তা আজকের মধ্যে স্পষ্ট করতে হবে। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনিদের সনাক্ত করে বিচার করতে না পারেন তাহলে চেয়ার ছেড়ে দিন।
রাবিতে মানববন্ধন।
মানববন্ধনে রাবি শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘সাজিদ আবদুল্লাহ তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি কোরআনে হাফেজ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও জুলাই বিপ্লবের প্রথম সারির যোদ্ধা ছিলেন। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও ইবি প্রশাসন এখনও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি- এটা প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা। সাজিদ কখনো একা কোথাও যেতেন না, অথচ তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে রাখা হয়েছে। আমরা দ্রুত বিচার দাবি করছি। প্রয়োজনে ইবিতে গিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন।
রাজু ভাস্কর্যে ঢাবি শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এমন একটা জায়গা, যেখানে হলের পাশে পর্যাপ্ত আলো ও সিসি ক্যামেরা থাকার কথা। কিন্তু, দুর্ভাগ্য যে সেখানে সিসি ক্যামেরা ছিল না। উচ্চতর তদন্তের আওতায় নিয়ে এনে এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত খুনিদের বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘খুনিদের অবশ্যই বিচার হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যা যা সহযোগিতা করা দরকার প্রশাসন তা করবে। অভিভাবক এসে আজকের মধ্যে মামলা করবে। আজকে (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় জরুরি সিন্ডিকেট মিটিং ডেকেছি। আমি তোমাদের নিশ্চিত করছি— মিটিংয়ে তোমাদের দাবি অনুসারে সিদ্ধান্ত হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’ শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা-সহ একাডেমিক সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (৩ আগষ্ট) প্রকাশিত সাজিদে ফরেনসিক রিপোর্টে শ্বাসরোধজনিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করা হয়। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের সময় থেকে আনুমানিক ৩০ ঘণ্টা আগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। একইদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটি উচ্চতর তদন্তের সুপারিশ করে। এদিকে রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর রাত ৮ টার দিকে শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে ইবি শিক্ষার্থীরা।