তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ফের বন্যার শঙ্কা
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪৮ পিএম
ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীর ডিমলা ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আজ রবিবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৫২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এরপর সকাল ৯টায় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই। তবে তিন ঘণ্টার ব্যবধানে দুপুর ১২টায় বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘উজানে পানি বাড়লে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টেও পানি বাড়ে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।’  

তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন তীরবর্তী মানুষ। পাউবো সূত্র জানায়, বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট (জলকপাট) খুলে দেওয়া হয়েছে। সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পাউবোর পানি শাখা প্রকৌশল বিভাগ।

এদিকে, তিস্তার বন্যায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়বাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় চরগ্রামের ৮-১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও ব্যারাজের পূর্ব দিকে (ভাটি অঞ্চল) লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদীবেষ্টিত চর ও চরের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বাসিন্দারা। এলাকার বানভাসি লোকজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন। বাড়িঘরে হাঁটুসমান পানি প্রবেশ করেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু এলাকায় সরে যাচ্ছেন তারা।

উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, ১০টি চরগ্রামের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন। নিম্নাঞ্চল ও বিস্তীর্ণ এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে ধীরে ধীরে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। আজ সন্ধ্যা নাগাদ ব্যারাজ পয়েন্টে পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যে উপজেলার খগাখড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রামটি প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। 

এদিকে, পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ অন্যান্য চরগ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি ও ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে।’

অন্যদিকে, জেলার জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, গোপালঝাড় ও আলসিয়াপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদ-নদী বন্যার পানিতে থইথই করছে।

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) তহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উজানের ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির ফলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সন্ধ্যা নাগাদ পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যেই নিম্নাঞ্চলসহ চরগ্রামগুলো তলিয়ে গেছে।’

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি সামাল দিতে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট (জলকপাট) খুলে রাখা হয়েছে। আমরা সতর্কাবস্থায় আছি।’

আজকালের খবর/ওআর








http://ajkalerkhobor.net/ad/1751440178.gif
সর্বশেষ সংবাদ
বাস-সিএজি মুখোমুখি সংঘর্ষ: নিহত ১, আহত ৫
মোংলায় শিক্ষার আলো ছড়াতে কোস্ট গার্ডের শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ
তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ফের বন্যার শঙ্কা
৫ আগস্ট ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
এলাকায় এলাকায় এনসিপির কর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
৫ অথবা ৮ আগস্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা
ইবি শিক্ষার্থী সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে: ফরেনসিক রিপোর্ট
পৃথিবীর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মতো স্বৈরাচারের জন্ম হয়নি
গাজীপুর সিটির উন্নয়ন-পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করছেন বিএনপি নেতা এলিস
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজি-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ৪
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft