এ.এইচ.এম. শামিম রহমান জন, রাজবাড়ী

প্রথমে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেম, পরে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে। দেড় মাস স্বামী-স্ত্রী হিসেবে দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর জানা গেল নববধূ মূলত নারী নয়, সে পুরুষ। নববধূ পুরুষ, এমন খবর জানাজানি হলে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভালকা ইউনিয়নের হাউলি কেউটিল গ্রামে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাউলি কেউটিল গ্রামের মো. বাদল খানের ছেলে মাহমুদুল হাসান শান্তর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ‘সামিয়া’ নামের এক তরুণীর। পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ৭ জুন শান্তর বাড়িতে চলে আসে সামিয়া। পারিবারিক সম্মতিতে মৌলভী ডেকে তাদের বিয়েও সম্পূর্ণ হয়। তবে সামিয়ার জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় রেজিস্ট্রি করা সম্ভব হয়নি। প্রায় দেড় মাস স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করার পর সামিয়ার আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন পরিবারের সদস্যরা। নববধূ হিসেবে তার শারীরিক ও সামাজিক আচরণে সন্দেহ জাগে।
গত শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় স্থানীয়দের উপস্থিতিতে নিশ্চিত হওয়া যায় সামিয়া আসলে একজন পুরুষ। তার প্রকৃত নাম মো. শাহিনুর রহমান। তিনি চট্টগ্রামের আমতলা ঈদগাহ বৌবাজার এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।
এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসান শান্ত জানায়, ফেসবুকের মাধ্যমে কথিত সামিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর হঠাৎ গত ৭ জুন সে তাদের বাড়িতে চলে আসে। এ সময় তার অভিভাবক ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে হুজুর দিয়ে বিয়ে দেয়া হয়। সামিয়ার জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় কাবিন রেজিষ্ট্রি করা হয়নি।
তিনি আরো জানান, বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রীর আচরন রহস্যজনক ছিল। তার কাছে গেলেই সে বলত, আমি এখন অসুস্থ্য, ডাক্তার আপাতত কাছে আসতে নিষেধ করেছে।
শান্তর মা মোছা. সোহাগী বেগম জাননা, একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারে বৌ হয়েছিল, আমরা ঘুর্ণাক্ষরেও টের পাইনি। সে অভিনয় করে আমাদের সবার মন জয় করে নিয়েছিল। কিন্ত, সবই যে তার অভিনয় ছিল তা আমরা বুঝতে পারিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার সকালে তাকে আমরা তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেই।
এ বিষয়ে শাহিনুর রহমান ওরফে সামিয়া স্থানীয়দের কাছে বলেন, শান্তর সঙ্গে আমি যা করেছি, সেটা আমি অন্যায় করেছি। এটা করা আমার ঠিক হয়নি। তিনি আরো জানান, তার হরমন জাতীয় শারীরিক সমস্যা আছে, তাই নিজেকে মেয়ে ভাবতে ভালো লাগে।
গোয়ালন্দঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। লিখত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজকালের খবর/ওআর