ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা সহ-সমন্বয়ক গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বুরহান মিয়া। তবে, অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে গোলাম রব্বানী সম্মানহানির দায়ে পাল্টা অভিযোগ করেছে বুরহান মিয়ার বিরুদ্ধে। গোলাম রব্বানী ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ নিয়ে গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বুরহান। আজ রবিবার বিষয়টি জনসম্মুখে আসলে ‘মানসম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে’ মর্মে প্রক্টর বরাবর পাল্টা অভিযোগ দেন রব্বানী।
বুরহান মিয়ার অভিযোগপত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুলাই রাত ৮টা ৩ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপে এক মিনিটের একটি ভয়েস কলের মাধ্যমে বুরহানকে প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করা হয়। ফোন কলের সময় হুমকিদাতা নিজ পরিচয় গোপন রাখে এবং জানায় যে, ‘তুমি (বুরহান) ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি পাশ করে বের হতে পারবা না এবং তুমি তোমার পরিবারের সদস্য (আমার ভাবী এবং দেড় বছরের ভাতিজা) নিয়ে থাকো এসব আমি (রব্বানী) জানি।’
এছাড়াও, তিনি (রব্বানী) মিথ্যাচার করে বলেন যে, আমি (বুরহান) নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম, যা আমার (বুরহান) ব্যক্তিগত মর্যাদা ও সুনামের জন্য চরমভাবে অপমানজনক। তিনি আরও বলেন ‘তুমি (বুরহান) সাবধানে থাকো, কখন কী হয় বলা যায় না’ যা সরাসরি জীবননাশের হুমকি বলে মনে করছি।
এদিকে, পাল্টা অভিযোগপত্রে রব্বানী উল্লেখ করেন, আমার বিরুদ্ধে একটা হুমকির অভিযোগ দিয়েছে। এটি পুরোপুরি মিথ্যা যা আমার ব্যক্তিগত সম্মান ক্ষুণ্ন এবং হাজার হাজার শহীদকে ধারণ করা সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। আমি আমার পরিচয় দিয়ে এবং নিজ নম্বর থেকেই কল দিয়েছিলাম একটা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে। আমি যদি হুমকিই দিতাম তাহলে নিজ পরিচয় প্রকাশ করে এবং নিজ নম্বর থেকে তো দেওয়ার কথা না। এটা তো পুরোপুরি স্পষ্ট এবং তা তো কয়দিন আগের কথা। তারপর থেকে তার সঙ্গে এখন পর্যন্ত আমার আর কোনো কথা হয়নি। তার (বুরহান) অভিযোগ পত্রটিতে মিথ্যা দিয়ে ভরে আমার সম্মান নষ্ট করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী বুরহান বলেন, ‘আমি গত কয়েকদিন রব্বানী ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি সমঝোতায় আসার জন্য। হয়তো কোনো মিসইনফরমেশনের জন্য উনি এমনটা করেছেন। আমি সেটা ক্লিয়ার করার জন্যই উনার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু, বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হই, তখন আমি আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে লিগ্যাল অ্যাকশনে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, তারা এ বিষয়টি সমাধান করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে উনারা কেন কিভাবে টার্গেট করলো সেটা আমি জানতে চাই। আমি যদি ছাত্রলীগ হয়ে থাকি, তাহলে সেটা এতদিন পর কেন তাদের মনে পড়লো? আর এইসব ট্যাগিং-এর রাজনীতি বন্ধ করা উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহ-সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী জানান, ‘আমি কাউকে হুমকিধামকি দেইনি, এটা পুরোপুরি মিথ্যা। মিথ্যা প্রচার করে আমার সম্মানহানি করছে। এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘উভয়ের অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডেকে কথা বলে সুষ্ঠু তদন্ত-পূর্বক সমাধান করা হবে।’