
চাঁদাবাজি মামলার আসামিসহ একাধিক আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজন নিয়ে ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির ৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে লিফলেট বিতরণ করেছেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি সুলতানা আহমেদ। এমন দৃশ্য দেখার পর চলছে আলোচনা সমালোচনা ঝড়। ফ্যাসীবাদী সরকারের পতনের পর স্বার্থান্বেসী আওয়ামী লীগের কতিপয় লোকজনসহ চাঁদাবাজি মামলার আসামিরা আবার বিএনপির ছায়াতলে বসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুক্রবার(২৫ আগষ্ট) বিকেলে সূয়াপুর ইউনিয়নের রাজনগর, ঈশাননগর ও সূয়াপুর বাজারে আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিয়ে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করতে দেখা যায় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সুলতানা আহমেদকে।
উপজেলার সূয়াপুর ইউনিয়নের রাজনগর ও সূয়াপুর বাজারে বিএনপির ৩১ দফা সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতা আবু তালেব, সূয়াপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তারু মেম্বারের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম ও সম্প্রতি একটি চাঁদাবাজি মামলার ২নং আসামি মোতালেব মেম্বারকে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ এর সাথে দেখা যায়। কি করে সুলতানা আহমেদ আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মী ও চাঁদাবাজি মামলার আসামিদের নিয়ে বিএনপির ৩১ দফা দাবির লিফলেট বিতরণ করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেবকে সাবেক দুই এমপি, ছাত্র লীগ ও যুবলীগের সকল অনুষ্ঠানে তার ছবি দেখা যায়। এ বিষয়ে আবু তালেবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান সোহরাব আমার বন্ধু। তার সুবাদে আওয়ামী লীগের সকল অনুষ্ঠানে যেতে হয়েছে। তবে আমি আওয়ামী লীগের কোন পদে ছিলাম না।
কিন্তু সূয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য শামসুল হক বলেন, আবু তালেব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন।
ধামরাই থানা পুলিশের বাদি হয়ে চাঁদাবাজির মামলার আসামি জামিনে থাকা ইউপি সদস্য মোতালেব জানান, সুলতানা আহমেদের আগমনে পাঁচ শতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিল। আমি শুধু সূয়াপুর বাজারে উপস্থিত ছিলাম।
সূয়াপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তারু মেম্বারের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আওয়ামী লীগের স্বক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি বলেন, আমার বাবা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন কিন্তু আমি কোন পদে ছিলাম না। আমিনুল ইসলাম সূয়াপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কফিল উদ্দিনের নির্বাচনী মাঠে সরগরম ছিলেন।
তবে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাঁটিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা বাণিজ্য করে গেছেন আবু তালেব ও আমিনুল ইসলামরা।
লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী উপস্থিত থাকার বিষয়ে ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সহ- সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর ইসলাম শাহিন বলেন, আমরা কাউকে দাওয়াত করিনি। কেউ যদি এসে সামনে দাড়ায় কি করবো, তাদের দিয়ে কোন বক্তব্য দেওয়া হয় নি। আমরা বিএনপির লোকজন নিয়ে গণসংযোগ করেছি।
বিএনপির ৩১ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণকালে আওয়ামী লীগ ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি ছিলেন এমন বিষয়টি অস্বীকার করেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সুলতানা আহমেদ। তিনি বলেন, আমি কাউকে চিনি না, যদি এসব লোক এসে থাকে তাহলে সব শাহিন জানে। শাহিন কাকে দাওয়াত দিয়েছে তা আমি জানি না।
আজকালের খবর/বিএস