মানসিক অস্থিরতা দূর করবেন যেভাবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
মানসিক চাপ যখন আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, সেটা দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত করে। এই মানসিক চাপকে কবজা করার একমাত্র উপায় মনকে নিয়ন্ত্রণ করা।

মানসিক চাপ ও মানসিক-পীড়ন অস্থিরতা সৃষ্টি করে, তা থেকেই উদ্ভূত হতে পারে আমাদের বড় স্বাস্থ্য-বিপর্যয়। যে কোনো দুর্ঘটনা, সম্পর্কে টানাপোড়েন, হতাশা, অপ্রাপ্তিসহ নানান কারণে আমাদের মানসিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।

সেই সঙ্গে বর্তমান সময়ে যোগ হয়েছে মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপের অতিরিক্ত স্ক্রিন ব্যবহার। এ সবগুলোর সম্মিলিত প্রভাবেও দেখা দিতে পারে মানসিক অস্থিরতা।

ভারতের আমাহা মেন্টাল হেলথ্ কেয়ারের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দিব্যা জি নাল্লুর মতে, আমাদের প্রতিদিনের বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমাদের মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, যা আমরা প্রায়ই উপেক্ষা করি, অথবা সেই অস্থিরতার সঙ্গে জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু এই মানসিক অস্থিরতা দূর করতে আমাদের চেষ্টা করতে হবে।

সুস্থ্যতার জন্য মানসিক অস্থিরতা দূর করতে যা করবেন-

১. পর্যাপ্ত ঘুমানো

যেকোনো মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ঘুমের কোন বিকল্প নেই। মানসিক অস্থিরতার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না।
আবার পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মানসিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভুগলে চেষ্টা করুন পর্যাপ্ত ঘুম দিতে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ৭ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ঘুমানো উচিত। চেষ্টা করতে হবে রাতে কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুমাতে।

২. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

অনেক সময় শারীরিক দুর্বলতা থেকেও মানসিক অস্থিরতা হতে দেখা যায়। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে মুখরোচক অথচ ক্ষতিকর খবার পরিহার করে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর ও বিশেষ করে সুষম খাবার খেতে হবে।

বিভিন্ন ধরনের বাদাম, খেজুর, শসা, ডিম, কলা, দুগ্ধজাত খাবার ও ফলমূল খান। এছাড়া খাবারে নিয়মিত সবুজ শাক, বিভিন্ন ধরনের সবজি রাখুন। যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেজড খাবার পরিহার করে চলতে চেষ্টা করুন।

৩. নেতিবাচক মানুষ থেকে দূরে থাকুন

আপনি যদি নিয়মিত নেতিবাচক চিন্তা-ধারণা বহণকারী মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করেন, তাহলে আপনার তাদের মতোই হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সুতরাং মানসিক অস্থিরতা বা নেতিবাচক চিন্তা-চেতনা কাটিয়ে উঠতে নেতিবাচক মানুষের থেকে দূরে থাকুন।

৪. মেডিটেশন করুন

মানসিক অস্থিরতা কমাতে মেডিটেশন করতে পারেন। এটি যে শুধু মনের খেয়াল রাখে তা নয়, শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতেও সহায়তা করে। দিনে মাত্র কয়েক মিনিট মেডিটেশন করার মাধ্যমে আমাদের মনকে শান্ত ও স্থির রাখা সম্ভব। এটি আমাদের চিন্তা ও উদ্বেগ কমাতে ও কাজে ফোকাস ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৫. শারীরিক ব্যায়াম করুন

মনের অস্থিরতা দূর করতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কিছুক্ষণ শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন। এটি শরীরকে যেমন ভালো রাখবে তেমনি মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করবে।৬. আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন
মানসিক অস্থিরতা বোধ করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার প্রথম করণীয় হবে বাইরে চলে যাওয়া। এসময়ে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। একা একা যদি ঘরের এক কোণায় চুপটি করে বসে থাকেন বা নিজেকে বদ্ধ ঘরে আটকে ফেলেন তাহলে আপনার মানসিক অস্থিরতা বাড়বে। তাই মন কেমন করলে একবার বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসুন। আপনার মনের অস্থিরতা অনেকখানি কমে যাবে।

৭. পছন্দের কাজ করুন

মানসিক অস্থিরতা কমানোর সহজ ও সুন্দর উপায় হল নিজের ভালোলাগার কাজগুলো করা। পছন্দের কাজ হতে পারে বই পড়া, গান শোনা, বাগান করা বা আঁকাআঁকি বা প্রিয় মানুষটির সঙ্গে কথা বলা। এক কথায় আপনার যা করতে ভালো লাগে তাই করুন। আপনার ভালো লাগার কাজগুলো মনটাকে অন্য দিকে সরিয়ে দিয়ে অস্থিরতা কাটাতে সাহায্য করবে।

৮. সামাজিক হোন

অশান্তি, অস্থিরতা, মন খারাপ কমানোর অন্যতম উপায় হলো সামাজিক মেলামেশা বাড়ানো। ভালো মানুষের সঙ্গে মিশুন, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখুন, সৌজন্যমূলক আচরণ করুন। তাই মাঝেমধ্যে সপ্তাহের কাজের ভিড়ে কিছুটা সময় বন্ধু-আত্মীয়-প্রতিবেশীর সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন আড্ডা বা সময় কাটালে মানসিক অস্থিরতা কমবে।

৯. ধর্মীয় কাজে সময় দিন

ধর্মীয় কাজে মনোযোগী হওয়ার মাধ্যমে মানসিক অস্থিরতা দূর করতে পারেন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলে মন শীতল হয়। নিজ ধর্মীয় প্রার্থনা মাধ্যমে মানসিক স্থিরতা অনুভব করতে পারেন।

১০. ঘুরতে যান

মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে ঘুরতে চলে যান। ভ্রমণের মাধ্যমে নতুন মানুষ, নতুন সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় ঘটবে, যা আমাদের ভিন্ন আঙ্গিকে ভাবতে ও চিন্তা করতে সহযোগিতা করে। ভ্রমণ যে শুধু আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করা তা নয়, মানসিক অস্থিরতা দূর করতেও অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন

নিজে সমস্যা সমাধান করতে না পারেন, তাহলে একজন মনোচিকিৎসক বা মনোবিদের সাহায্য নিন। দীর্ঘদিন মানসিক অস্থিরতায় থাকলে সেটি আপনার কোনো গুরুতর মানসিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সূত্র: বেটার আপ, হিন্দুস্থান টাইমস

আজকালের খবর/ এমকে








http://ajkalerkhobor.net/ad/1751440178.gif
সর্বশেষ সংবাদ
প্রেমের টানে মাদারীপুরে চীনা যুবক
নির্বাচনের নির্দেশনা পেলে কাজ করতে প্রস্তুত সেনাবাহিনী
খুলনা মেডিকেলে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
মাদারীপুরে রাস্তার পাশ থেকে ইরান বেপারীর মরদেহ উদ্ধার
দর্শনা সীমান্তে দিয়ে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
চিকিৎসক সংকট সেবার মানোন্নয়নে জরুরি ব্যবস্থা দরকার তাজউদ্দিন মেডিকেল হাসপাতালে
পাংশায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন
ডাকসুতে স্বতন্ত্র প্যানেল দিচ্ছেন উমামা
বাড্ডায় রিয়াদের আরো একটি বাসার সন্ধান, সেখানে মিললো নগদ টাকা
যুদ্ধে নিজেকে শেষ করেছেন প্রায় ৫০ ইসরায়েলি সেনা
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft