আগের দিন সোমবার গণমাধ্যমসহ স্থানীয়দের স্কুলটির ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
মঙ্গলবার সকালে নিরাপত্তা কড়াকড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়। স্কুলের সেই বিধ্বস্ত ভবনটির সামনে অনেক অভিভাবক, সাবেক শিক্ষার্থী ও আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই দেখতে আসেন।
তখন পুড়ে যাওয়া ভবনটির বিভিন্ন কক্ষ থেকে আলামত সংগ্রহ করছিল সিআইডি পুলিশের টিম। ছিলেন বিমান বাহিনীরও কয়েকজন সদস্য।
দুপুর ১২টার দিকে সেখান থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সব সদস্য সরে যাওয়ার পর মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের স্বেচ্ছাসেবকরা ভবনটিতে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে রাখে।
বিধ্বস্ত ভবনটির যে জায়গাটিতে বিমানটি আসছে পড়ে সেটি ছিল একটি দোতলা ভবন। নিচতলার মাটি ঘেঁষেই আছড়ে পড়েছিল বিমানটি।
শিক্ষকরা জানান, দোতলা এই ভবনে ১২ থেকে ১২টি শ্রেণি কক্ষ ছিল। ওই শ্রেণি কক্ষে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাস অনুষ্ঠিত হতো। প্রতি ক্লাসে গড়ে ৩০ জন করে শিক্ষার্থী ক্লাস করতো বলেন জানান শিক্ষকরা।
সোমবার দুপুরে যখন বিমানটি স্কুল ভবনে আছড়ে পড়ে তখন ছিল টিফিনের বিরতি। কারো কারো ছুটিও হয়েছিল তখন। কেউ কেউ তখন বের হয়ে বাসায় রওনাও হয়েছিলেন।
মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের প্রভাষক মো. রেজাউল হক বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘দোতলা ভবনের প্রতিটি শ্রেণি কক্ষে ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থীদের ক্লাস হতো। যারা দোতলায় ছিলেন, তাদের উদ্ধার করা গেছে। আর যারা নীচতলায় ছিল তাদের অনেকেই দগ্ধ হয়েছে’।
বিমানটি একেবারেই ভবনের মাঝ বরাবর নিচের অংশে আঘাত করেছে। যে কারণে নিচতলার দুই পাশের কক্ষগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হক বলছিলেন, ‘দুইতলা মিলে ২০০ এর ওপরে শিক্ষার্থী ছিল। আর নিচতলায় ছিল ১০০-১২০ জন শিক্ষার্থী। তবে নিচতলার শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’।
তিনি জানান, ক্লাস চলাকালীন হলে সাধারণত ২০০ থেকে ২২০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা। যেহেতু বিরতি চলছিল এজন্য এই সংখ্যা কমবেশি হতে পারে।
যদিও স্কুলটির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আহত বা নিহতদের সঠিক সংখ্যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
এদিন স্কুলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এসেছিলেন অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। তারা আহত ও নিহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবিও জানান।
গত সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর জানায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা ৩১ জনের মৃত্যু ও ১৬৫ জন আহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে জাতীয় বার্ন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নাফি নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়।
আজকালের খবর/ এমকে