নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে জমি জবর দখল, ভয়ভীতি, হামলা ও মিথ্যা মামলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে তিস্তাপাড়ের ভুক্তভোগী টাবুর চড়বাসী।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে পূর্ব খড়িবাড়ি টাবুর চড়বাসী আয়োজিত এই মানববন্ধনে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কয় শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
এ সময় মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন, মুসা ভান্ডারী, সাইফুদ্দিন, চান মিয়া, খোরশেদ আলী, জরিনা বেগম, রমিচা বেগমসহ আরও অনেকে। বক্তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে মোতালেব হোসেন ওরফে পাঞ্চু মল্লিক নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তার অনুগত একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে চরের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি জবরদখল করে আসছে।
দলিল জালিয়াতি, হুমকি-ধামকি এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে রাখা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেন তারা।
বক্তারা আরও জানান, প্রভাবশালী হওয়ায় ওই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আবাদি জমি ও বসতবাড়ি জোরপূর্বক দখল করা হচ্ছে।
কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে ইতোমধ্যে অনেক পরিবারকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও এই ভূমিদস্যু চক্রের দৌরাত্ম্য কমেনি। বরং নির্বিঘ্নে তারা নিরীহ কৃষকদের শেষ সম্বল চাষাবাদের জমি ও বসতভিটা দখল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে পূর্ব খড়িবাড়ি গ্রামের মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে মইনুদ্দিন (৭৩) অভিযোগ করে বলেন, এলাকার প্রভাবশালী মোতালেব হোসেন পাঞ্চু তার পাঁচ একর আবাদি জমি সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে ।
একই গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে কাছের আলী (৬৯) জানান, তার ১২ একর জমি এবং আরফান আলীর ছেলে খোকন প্রামানিক জানান, তার পিতার ১৫ একর জমিও একইভাবে জবরদখল করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রশাসনের কাছে ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। এতে করে দখলবাজরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের ভাষায়, দিনের পর দিন হয়রানি, হুমকি ও চাপের মুখে আমরা নিজেদের জমিতেও কাজ করতে পারছি না। আইনের শাসন থাকলে এ ধরনের দুঃসাহস কেউ দেখাতে পারত না।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গৃহবধূ মালেকা বেগম বলেন, এই জমিই আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা। এটা কেড়ে নিলে আমরা পথে বসে যাবো। তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা অবিলম্বে প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ, দখল বাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা এবং চরের জমির সুনির্দিষ্ট মালিকানা নিশ্চিত করার দাবি জানান। দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আজকালের খবর/ এমকে