
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূবাইল থানার আওতাধীন এলাকায় সন্ত্রাস, গার্মেন্টস দখল, চাঁদাবাজি ও মাদক কারবার বিস্তারের অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র আলোচনা চলছে। সম্প্রতি ফেসবুকের একাধিক আইডি থেকে এ সংক্রান্ত নানা পোস্ট ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
'পূর্ণাইলের জনগণ সত্যের সন্ধানে বিএনপি' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দাবি করা হয়, পূবাইল থানা যুবদল সভাপতি মো. মজিবুর রহমান রাজিবের হাত ধরে ফ্যাসিস্ট ও মাদক ব্যবসায়ীরা গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপির ব্যানারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পোস্টে আরও অভিযোগ করা হয়, সাবেক যুবলীগ নেতা রাশেদ বিএনপির ছদ্মবেশে রাজনীতি করছেন এবং যুবদল সভাপতির ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।
একইভাবে 'শেক এম ডি রুবেল হোসেন' নামের ফেসবুক আইডি থেকেও পোস্ট দিয়ে অভিযোগ আনা হয় যে, পূবাইল যুবদল সভাপতির আশ্রয়ে আওয়ামী লীগের নেতা বসির একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ভেতরে বসে অন্ধকার জগত পরিচালনা করছেন।
অন্যদিকে, আরেকটি আইডি 'সত্যের সন্ধানে বিএনপি' থেকেও দাবি করা হয়, সাবেক যুবলীগ নেতা রাশেদ পূবাইল যুবদলের ব্যানারে নিজেকে পুনর্বাসন করে মাদক ব্যবসায় যুক্ত রয়েছেন।
পূবাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আমিরুল ইসলাম জানান, যুবদল সভাপতি মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে সাবেক যুবলীগ নেতা রাশেদুল আলম খানের স্ত্রীকে ১০৫ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। রাশেদ নিজেও মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পূবাইল থানা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন বকুল বলেন, আমরাও দেখেছি যুবদল সভাপতি মজিবুর রহমানের সঙ্গে রাশেদের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। তবে বাস্তবে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই। রাশেদের স্ত্রীকে মাদকসহ গ্রেফতারের বিষয়টি সত্য, আর যারা দলের ক্ষতি করবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর সদর মেট্রোপলিটন বিএনপির সভাপতি এঅ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এলিস বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে, তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কঠোর অবস্থানে আছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে ও জানান।
নগরীর স্থায়ী বাসিন্দা ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নুরুজ্জামান মৃধা বলেন, বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ অপরাধ করলে তাদের দল থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার করা উচিত। ত্যাগী নেতাদের দাবিও একই-দলের সুনাম ক্ষুণ্ণকারীদের কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
পূবাইল এলাকায় রাজনৈতিক ব্যানার ব্যবহার করে সন্ত্রাস, মাদক ও গার্মেন্টস দখলের অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত হয়ে উঠেছে। বিএনপি নেতাদের দাবি, যারা দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
আজকালের খবর/ এমকে