কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া বাজারে একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত কনস্টেবল রিটন দে। আগুনের তীব্রতা তার সাহস এবং মানবতার কাছে হার মেনেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে তার একাগ্রতা দেখে রীতিমত মুগ্ধ হয়েছেন স্থানীয়রা।
ইতিমধ্যে রিটন দে'র একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায় কনস্টেবল রিটন দে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। একজন পুলিশ কনস্টেবলের এমন মানবিকতা পুলিশের ভাবমুর্তি ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সচেতন মহল ।
জানা যায়, গত ২১ আগষ্ট সকালে হঠাৎ গর্জনিয়া বাজারে বিদ্যুৎ লাইনের শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে । তখন আগুন নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সাথে যোগ দেন গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ। এসময় আগুন নিয়ন্ত্রণে কনস্টেবল রিটনের ভূমিকা দেখে বিস্মিত হন স্থানীয়রা। কনস্টেবল রিটন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শাবল দিয়ে দোকানের সিলিং ভেঙ্গে উপরে উঠেন এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহসী ভূমিকা রাখেন। এতে জামান ট্রেডার্স নামের একটি বড় চালের দোকানের আংশিক পুড়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী, গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ ও নাইক্ষ্যংছড়ি ফায়ার সার্ভিস একযোগে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফলে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে পুরো গর্জনিয়া বাজার রক্ষা পায়।
জামান ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ জামান বলেন, হঠাৎ করে আগুন লেগে দোকানের ভেতরে থাকা বেশ কিছু মালামাল পুড়ে যায় । এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের দ্রুত প্রচেষ্টায় বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রেহাই মিলেছে । বিশেষ করে পুলিশ কনস্টেবল রিটন কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই, কারণ সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দোকানের ভিতর ঢুকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন। এমন পুলিশই আমরা গর্জনিয়াবাসি চাই।
এব্যাপারে পুলিশ কনস্টেবল রিটন দে বলেন, ঘটনার খবর শুনে আইসি স্যারের নির্দেশে আমরা একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যাই এবং স্থানীয় লোকজন ও ফায়ারসার্ভিসের সাথে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। তখন আমার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। আমি মনে করি একজন পুলিশ সদস্য হিসাবে এটা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। ভাইরাল হওয়া ভিডিও সংক্রান্তে তিনি বলেন- আমি আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ছিলাম। আমার অজান্তে কে বা কারা ভিডিওটি করেছে আমি জানিনা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সোহেল জানান, পুলিশ সদস্য রিটন দে অসীম সাহস ও মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রতিটি পুলিশকে রিটন দে'র মতো হওয়া উচিত। তাহলে দেশে আর কোনো অপরাধ থাকবেনা এবং সাধারণ মানুষের শতভাগ আস্থা ফিরতে পুলিশের উপর।
আজকালের খবর/ এমকে