রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের পূর্বঘোষিত সময়সূচি তিন দিন এগিয়ে আনা হয়েছে।
বুধবার সকালে সভা করে ২৮ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজার ষষ্ঠীর দিন নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করেছিল কমিশন। পরে, বিষয়টি নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো এবং সনাতন শিক্ষার্থীরা তীব্র সমালোচনা শুরু করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় জরুরি সভা ডেকে নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাত ৯টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, পূজার সময় বিবেচনা করে নির্বাচনের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করা হলো।
ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্ভাব্য ভিপি প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মিঠু বলেন, এই নির্বাচন কমিশন হচ্ছে একটি অপেশাদার নির্বাচন কমিশন। তারা সকালে এক সিদ্ধান্ত দেয়, বিকেলে আরেক সিদ্ধান্ত দেয়। তারা ভেবেচিন্তে কোনো কাজ করে না। তারপরও বিষয়টি স্বস্তিদায়ক যে, তারা হিন্দু শিক্ষার্থীদের কথাটি মাথায় রেখে নির্বাচন এগিয়ে এনেছে।
নির্বাচনের পরিবর্তিত তারিখ নিয়েও সন্তুষ্ট নয় ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, আমরা চাই পূর্বনির্ধারিত ১৫ সেপ্টেম্বরেই নির্বাচন হোক। নির্বাচন এক দিনও পেছানো যাবে না।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, হিন্দু শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে নির্বাচনের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে, এটি ঠিক আছে। কিন্তু নির্বাচন পূর্বনির্ধারিত তারিখ থেকে ১০ দিন পেছানো হয়েছে। এটা আমরা মেনে নিচ্ছি না। নির্বাচন কমিশনের যদি সময়ের প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা সর্বোচ্চ পাঁচদিন বাড়াতে পারতো, কিন্তু ১০ দিন কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচন নির্ধারিত দিনেই হতে হবে।
ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে প্রশাসন নির্বাচন তিনদিন এগিয়ে এনেছে। বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাই। আর প্রশাসনের যে কাজগুলো বাকি আছে, এগুলো আশাকরি তারা দশদিনের মধ্যে শেষ করে একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিবে।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তফসিল পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি জানানো হয়। এর পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম সে সময় বলেছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য পূর্বনির্ধারিত তফসিলের সময় যথেষ্ট হচ্ছে না। আবাসিক হল থেকে ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর, ভোটার তালিকায় ছবি সংযুক্তি এবং ডোপ টেস্টের জন্য আমাদের সময় প্রয়োজন। নির্বাচনী সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে ৩১ আগস্ট বিকেল ৫টা পর্যন্ত, মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে ১ থেকে ৪ এবং ৭ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর, প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে ১১ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১৫ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৬ সেপ্টেম্বর। ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একাডেমিক ভবনে ভোটগ্রহণ হবে এবং একই দিন গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
আজকালের খবর/ এমকে