
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ‘স্মার্ট লিকুইড ট্রিস ফর কার্বন ফুটপ্রিন্ট মিটিগেশন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকাল চারটায় বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বিজিই) বিভাগে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ইনডোর ও আউটডোর পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দূষণ মোকাবিলায় উদ্ভাবিত অভিনব প্রযুক্তি সম্পর্কে অংশীজনদের অবহিতকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম, আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সোহেল রানা, ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মনোয়ার হোসেন, গবেষণা উদ্ভাবন কেন্দ্রের (আরআইসি) পরিচালক অধ্যাপক মাসুম শাহরিয়ার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. ছালেহ আহাম্মদ খানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
প্রকল্পের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহেদুর রহমান অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম মঈনুদ্দিন।
তিনি বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার, বন উজাড়, শিল্প কারখানার নির্গমন এবং ঘনবসতিপূর্ণ নগরজীবন বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রাকে মানব ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যা জনজীবনের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংকট নিরসনে বায়োরিসোর্সেস টেকনোলজি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি ল্যাবের গবেষক দল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরআইসি-এর তত্ত্বাবধানে এবং সরকারের ইডিজিই প্রকল্পের আওতায় সম্পূর্ণ দেশীয় অ্যালগি ও নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে “লিকুইড ট্রি” প্রোটোটাইপ উদ্ভাবন করেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকীকরণ ও সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করার উদ্যোগ নিতে হবে। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, এই প্রকল্পকে জাতীয় পর্যায়ে মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে এর অগ্রগতি আরও জোরদার করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, এ ধরনের উদ্ভাবন শুধু দেশের জন্য নয়, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও জিরো এমিশন লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। তিনি এ গবেষণাকে শিল্পখাতের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরির আশ্বাস দেন।
সভাপতির বক্তব্যে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, এ ধরনের প্রকল্প বিভাগের গবেষণা সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ এবং এ ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে লিকুইড ট্রি প্রোটোটাইপ দু’টি প্রদর্শন করা হয় এবং অতিথিরা এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। বক্তারা গবেষণাটিকে শুধু গবেষণাগারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নে নীতিনির্ধারক, পরিকল্পনাবিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পখাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই উদ্ভাবন একটি স্বাস্থ্যকর, টেকসই ও কার্বন-সহনশীল বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
আজকালের খবর/ওআর