প্রকাশ: বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ২:০৩ পিএম

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ বাজার ফেরী ঘাটে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী সরকারি জায়গা দখল করে অগোচরে দোকান নির্মাণ করতেছেন রানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কয়েছ উদ্দিন মাস্টার। নির্মাণ কাজে বেচে নিয়েছেন সাপ্তাহিক ছুটির দিন।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের সাপ্তাহের প্রথম শুক্রবার হঠাৎ করে রানীগঞ্জ বাজার ফেরী ঘাটে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী সরকারি জায়গা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ শুরু করে বাগময়না গ্রামের ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কয়েছ উদ্দিন। এ সময় স্থানীয় তফসিল অফিস থেকে দোকান নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে ওই দখলদারকে বলা হলেও তিনি আইন অমান্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ১৫ ডিসেম্বর রবিবার জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঞা সা-আধ এর নেতৃত্বে সার্ভেয়ার অজয় কুমার দাস, পাইলগাঁও-রানীগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া, ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা মো. মহসিন আলী, অফিস সহকারী নজরুল ইসলাম নজিরসহ প্রশাসনের আরো কর্মকর্তারা সরকারি জায়গায় নির্মাণ করা দোকান ঘর ভেঙ্গে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রানীগঞ্জ বাজারে ফেরী বন্দোবস্তের আবেদনের আহবান করা হলে বাজারে তিনজন ব্যবসায়ী ফেরীঘাটের জায়গার জন্য বন্দোবস্তের আবেদন করেন। সে সময় সার্ভায়ের এই জায়গা ক্যাচম্যাপ ও করে যায়। এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রভাবশালী বিএনপি নেতা কয়েছ উদ্দিন জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণে মরিয়া হয়ে উঠে। হঠাৎ করে ইট পাতর জড়ো করে শুক্রবার সকালে কাজ শুরু করেন। পরে প্রশাসন সরকারি জায়গায় হওয়ায় দোকান ভেঙ্গে দেন। গত কয়েক মাস ধরে স্থানীয় ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়ার মাধ্যমে আবার নতুন করে দোকান নির্মাণ শুরু করেন। এই ভূমি কর্মকতার মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে শুক্রবার (১৫ আগষ্ট) সকাল থেকে ভাঙ্গা অংশে আবারও দোকানের কাজ শুরু করেন। এ নিয়ে বাজারে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের সংর্ঘষ ঘটার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কয়েছ উদ্দিনের মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে আমার জানা নাই ভাই। এটা মিথ্যা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীগঞ্জ বাজার সেক্রেটারি আবুল কাশেম বলেন, নদী চর দেওয়া জায়গায় বিএনপির কয়েছ মাস্টার কিছু সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন, এখানে সরকারি জায়গার পাশে তার নিজস্ব কিছু অংশ আছে মনে হয়।
এ ব্যাপারে পাইলগাঁও-রানীগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া বলেন, আমরা বার বার নিষেধ দেওয়ার পর তারা যদি আইন অমান্য করে আমি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে টাকা দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে এটা সমাপূর্ণ মিথ্যা। এ বিষয়ে আমি কোনো কিছু জানিনা। এর আগে এসিল্যান্ড এসে এই সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করেছেন। এর পরও বিএনপির নেতার দখলের বিষয়ে আমরা আবারো জানাবো।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বরকত উল্লাহ বলেন, সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ শুনেছি, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজকালের খবর/বিএস