প্রকাশ: সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:২০ পিএম

অবশেষে চালু হচ্ছে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন দ্বিতীয় তিস্তা সেতু। আর এতে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের দূরত্ব কমে আসবে ১৩৫ কিলোমিটার। এছাড়া সেতুটি চালুর ফলে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত সময় সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। আগামী বুধবার সেতুটি উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উদ্বোধনের দিন থেকেই যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়া হবে।
আজ সোমবার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামীম বেপারী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানিয়েছেন গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী।
তিনি বলেন, সেতুটি সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি) অর্থায়নে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। সেতুটি নির্মাণে প্রধান ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছে চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন-সিএসসিইসি’। প্রায় এক হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডারের এই সেতুটি অন্যতম বড় প্রকল্প। এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া সেতুর উভয়পাশে প্রায় ৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার নদী শাসন করা হয়েছে।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল বলেন, গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরঘাট এলাকায় সেতুটি নির্মিত হয়েছে। এর অপর প্রান্তে কুড়িগ্রামের চিলমারী ঘাট। সেতুর উভয়পাশে ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক পাকা করা হয়েছে। সংযোগ সড়কটি কুড়িগ্রামের চিলমারী, সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, বেলকাবাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, গাইবান্ধার হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্লাপুরের কামারপাড়া ও সাদুল্লাপুর হয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ধাপেরহাটে এসে শেষ হয়েছে। আর এতে যুক্ত হচ্ছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারী।
তিনি বলেন, সেতু ও সংযোগ সড়ক চালু হলে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব ১৩৫ কিলোমিটার কমে আসবে। এতে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত সময় সাশ্রয় হবে। কেবল কুড়িগ্রাম নয়, উত্তরাঞ্চলের আরও কয়েকটি জেলার ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। এর ফলে তুলনামূলক পিছিয়ে পড়া গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নও ঘটবে বলে মনে করেন এলজিইডির এই কর্মকর্তা।
গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টির লক্ষে ২০১৪ সালে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু প্রকল্পের অনুমোদন দেয় তৎকালীন সরকার। একই বছরের ২৫ জানুয়ারি সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২০২১ সালে চীনের একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু করে। চলতি বছরের ৪ জুলাই সেতুটি পরিদর্শনে যান স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। পরবর্তীতে ২ অগাস্ট উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরে তা পিছিয়ে ২৫ অগাস্ট করা হয়। তবে এবার পাঁচ দিন এগিয়ে উদ্বোধনের তারিখ ২০ আগস্ট নির্ধারণ করেছে এলজিইডি।
আজকালের খবর/ওআর