
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব থাকলে ভবিষ্যতে রাজনীতিতে তিক্ততা সৃষ্টি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দলগুলোর মধ্যে একটা ন্যূনতম বোঝাপড়া থাকা জরুরি।
তা না হলে রাজনীতিতে কাঁদা ছোড়াছুড়ি বাড়বে, গণতন্ত্রের অপব্যাখ্যা হবে, যার ফলে রাজনীতির পরিবেশ আরও কলুষিত হয়ে উঠবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার একটি নতুন সুযোগ এসেছে। আমি মনে-প্রাণে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। বিপ্লব যারা করবেন, তারা বিপ্লবী দল গড়বেন, বিপ্লবী সরকার গঠন করবেন এবং বিপ্লব সফল করবেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারে যেতে চাই। জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ কাজগুলো করার চেষ্টা করবো। জনগণ যদি আমাকে গ্রহণ করেন, তাহলে আসব, না হলে আসব না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিচারপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনমানসিকতা বদলাচ্ছে। এই পরিবর্তনের ধারায় পুরোনো কাঠামোতে রাজনীতি টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীন ও আমেরিকার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, দেশভেদে রাজনৈতিক কাঠামো ভিন্ন হলেও আমাদের প্রয়োজন মুক্ত সমাজ ও মুক্ত রাষ্ট্র গড়া।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পেলেও পরে পাকিস্তানি ও এখন অভ্যন্তরীণ নানা ‘গোলামির’ বেড়াজালে আমরা আবদ্ধ। এই মনস্তত্ত্ব থেকে বেরিয়ে বড় করে ভাবতে হবে।
গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা না হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এক বছরের বেশি সময়েও শহীদদের তালিকা করা হয়নি। যারা জীবন দিয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানে আহত সাভারের একটি শিশুর কথা উল্লেখ করে আবেগপ্রবণ কণ্ঠে বিএনপির মহাসচিব বলেন, গতকাল সাত বছরের এক শিশু এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছে, তার খুলিটা প্লাস্টিকের। এর চেয়ে বড় ত্যাগ আর কিছু হতে পারে না। আমরা যদি সঠিকভাবে দাঁড়াতে না পারি, তবে তাদের সামনে আমরা প্রতারণা করবো।
রাষ্ট্র সংস্কারে ১২টি মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যকে ‘ইতিবাচক’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে পারলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব। এতে রাজনৈতিক দ্বিধা দূর হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ প্রমুখ।
আজকালের খবর/বিএস