
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মানববন্ধনের সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের বাঁধা প্রদান ও হেনস্তা করা হয়েছে। র্যাগিংয়ে জড়িত শিক্ষার্থীদের শাস্তি মওকুফের জন্য করা মানববন্ধনে সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকরা এমন পরিস্থিতির শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম আবর্তনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযুক্ত আছে বলে জানা গেছে।
রবিবার (২০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুল কাইয়ূম চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, র্যাগিংয়ে জড়িত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ১২ জন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর পক্ষে একই শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী শহীদ আব্দুল কাইয়ুম চত্বরে একত্রিত হয়, এ সময় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাদের তুই-তুকারি করেন এবং ‘বাল পাকনা’ বলে হামলার চেষ্টা করেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক নিলয় সরকার বলেন, ‘গোলচত্ত্বরে আমরা সাংবাদিকরা নিউজ কাভারের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন ১৮তম আবর্তনের গণিত বিভাগের একজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলে তোরা লাইনে দাঁড়াস না কেন? তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় আপনি কাদের বলছেন? তিনি বললেন তোদেরকে বলছি। আমরা সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি বলেন, বলছি তো কি হইছে? তারপর উনার কাছে সব সাংবাদিক এমন আচরণের কারণ কি জানতে চাইলে ১৮তম আবর্তনের বাংলা বিভাগের ঈউনূস সাংবাদিকদের এক পর্যায়ে বলেন- বালপাকনামি করতে আসছে? তুই কে? বলে আক্রমণাত্বকভাবে মারতে আসে যা সাংবাদিকদের পেশাদারিত্বকে হুমকির মুখে ফেলে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তবে বিষয়টি অস্বীকার ইউনূস বলেন, ‘আমি আমার বন্ধুকে বাল পাকনা বলছি, সাংবাদিকদেরকে না।’
দ্যা ঢাকা ডায়েরির ক্যাম্পাস প্রতিনিধি নুুরুল হাকিম বাপ্পি বলেন, ‘হঠাৎ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাকবিতণ্ডা দেখা গেলে আমি তাদের কাছে কি হয়ছে জানতে চাই। এমন সময় তারা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। তখন আমার মনে হয়ছে তারা ওখানে ঝামেলা করতে আসছে। আমরা তাদের সিনিয়র এবং দায়িত্বরত সাংবাদিক হিসেবে তারা যে দৃষ্টিভঙ্গিতে কথা বলতেছিল, মনে হয়ছে তারা আমাদের ওপর হামলা করবে। শুরুতেই নাদিম নামের ছেলেটা তুই-তুকারি করতেছিল এবং ইউনুস আলী এসে সাংবাদিকদের ‘বাল পাকনা’ বলে গালি দিয়ে মারতে আসে। দায়িত্বরত সাংবাদিকের ওপর এমন হুমকির নিন্দা জানাচ্ছি এবং আশা করি প্রশাসন এর যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’
‘দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসে’র প্রতিনিধি আকাশ আল মামুন বলেন, ‘১৮তম আবর্তনের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিম সাংবাদিকদের বলেছেন -তোরা এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? এবং কন্টিনিউয়াসলি তুই-তুকারি করতেছিলেন। তখন সাংবাদিকেরা তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরও কয়েকজন এসে সাংবাদিকদের বাধা দেয়। নাদিম তখনও এমন আচরণ করতেছিলো যে তিনি সাংবাদিকদের মারবে। এমন সময় একই সেশনের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইউনুস এসে এমসিজে নিউজের ক্যাম্পাস সাংবাদিক নিলয়কে বলেন ‘বাল পাকনা’ এবং মারার জন্য তেরে আসতেছিলো। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
সাংবাদিকদের তুই-তুকারি করে কথা বলার কারণ জানতে চাইলে ১৮তম আবর্তনের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিম সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন- আপনি সেখানে ছিলেন কিনা? এরপর আমি ক্লাসে আছি, কথা বলতে পারবো না বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আপনাদের মৌখিক অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা খুব দ্রুতই এই ঘটনার জন্য পদক্ষেপ নিবো। আপনারা লিখিত অভিযোগ দিয়েন।’
আজকালের খবর/ওআর