
ঢাকার ধামরাইয়ের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষার্থীকে মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ভিডিও দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় মঙ্গলবার (২২ জুলাই) উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিছুদিন আগে কুশুরা ইউনিয়নের টোপের বাড়ি মিয়াপাড়া এলাকায় ১৭১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষকের এমন ঘটনায় ওই এলাকায় বইছে সমালোচনার ঝড়।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের কান্টাহাটি এলাকার নাছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমানে উপজেলার ১৭১নং টোপের বাড়ি মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ওই প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ভিডিও দেখায়। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার দাদি, পাশের বাড়ির এক চাচা ও চাচীর কাছে বলে। পরে ঘটনাটি ছড়িয়ে পরে।
এর পূর্বেও অভিযুক্ত শিক্ষক শহিদুল ইসলাম তার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে জরিমানা দিয়েছেন। ২০০৩ সালে উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের চক মহিশাষী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। এঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ওই এলাকার মেম্বার ও স্থানীয় কয়েক জনের মাধ্যমে সাড়ে চার লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়ে বিষয়টি সে-সময় ধামাচাপা দেন। এছাড়াও ২০১১ সালে বৈন্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরেক শিক্ষার্থীর সাথে এমন ঘটনা ঘটনায় এই শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। এঘনটায় ওই শিক্ষক কে বৈন্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বদলি করে ১৭১নং টোপের বাড়ি মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এখানে এসেও একই ঘটনা ঘটানোর কারণে এই শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর এক চাচা জানান, এই ঘটনার পরে আমি ওরে জিজ্ঞেস করেছি কি হয়েছে। ও শুধু বলল স্যার আমাকে আজেবাজে (আপত্তিকর) ভিডিও দেখাইছে। আমার স্ত্রীর কাছেও একই কথা বলেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
টোপের বাড়ি মিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি রিপন হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পর বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি তারা কেউ এমন কিছু বলতে পারেনি। তবে মেয়ের দাদি আমাকে বলেছে যে আমার নাতিনের প্রতি শহিদুল স্যারের আকর্ষণ রয়েছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা আগামীকালকে স্কুলে আসেন। স্কুলে কথা বলবোনে।
ধামরাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির লোকজন ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে কিনা এবিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির সভাপতি মো আসলাম হোসেন বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার কমিটির কেউ আমাকে কিছু বলে নাই।
এ বিষয়ে তদন্তের দ্বায়িত্বে থাকা ধামরাই উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার লিয়াকত জানান, আমি এই এলাকায় আসছি। তদন্ত শেষ করে আসল ঘটনা জানাতে পারবো।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোবাখখারুল ইসলাম মিজান বলেন, বিষয়টি ভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরে সহকারী শিক্ষা অফিসার লিয়াকত আলীকে দ্বায়িত্ব দিয়েছি সত্যতা যাচাই করে রিপোর্ট দিতে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজকালের খবর/বিএস