‘একজন গেলে আরেকজন আসে চাঁদা নিতে’, বন্ধ হাসপাতাল নির্মাণের কাজ
এ,এইচএম,শামিম রহমান (জন)পংশা, রাজবাড়ী
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৬ এএম
স্থানীয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা না পেয়ে বন্ধ করে দিয়েছে  কাজ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের নির্মাণ কাজ। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সেনাবাহিনী ও গণপূর্ত বিভাগ বরাবর লিখত অভিযোগ দিয়েছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। 

সম্প্রতি রাজবাড়ীর অফিসার ক্লাবে জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তারের সভাপতিত্বে উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এমন অভিযান তুলেছেন গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।

জেলা প্রশাসক হাসপাতাল নির্মাণ কাজের অগ্রগতি জানতে চাইলে রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কিছু লোক এসে হাসপাতালের লিফটের ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দিলে বিভিন্ন সময়ে তারা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এতে হাসপাতালের লিফটের কাজ শেষ করতে সময় লাগছে। একাধিকবার আমাদের নিয়োজিত ঠিকাদার চাঁদা পরিশোধ করেছেন। এক গ্রুপ চাঁদা নিয়ে যায়, আরেক গ্রুপ আসে। ঠিকাদার কতজনকে চাঁদা দেবে। এর আগে হাসাপাতালের এসির তার, আউটডোরের জিনিসপত্র খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা। 

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কিছু চাঁদাবাজ শ্রেণির লোক রয়েছে তারা বিভিন্ন সময়ে এসে হাসপাতালের নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। তারা এসে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ঠিকাদারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুনের দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ্য করা হয়, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি লিফটের কাজ চলমান থাকা অবস্থায় দুপুরে ৮ থেকে ১০ জন অস্ত্রধারী প্রকল্প সাইটে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করেন। সেইসঙ্গে মূল্যবান মালামাল নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। 

একইসঙ্গে চাঁদা দেওয়া না হলে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। আগামী দুই মাস কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ইনচার্জ, রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে।

এর একদিন পর ২১ জানুয়ারি গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ মণ্ডল, কাজের সাইটে মজুদকৃত মালামাল ও লোকবলকে ডাকাত ও সস্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপত্তার জন্য সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর আরেকটি চিঠি দিয়েছিল। চিঠিটির অনুলিপি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ আরও কয়েকটি দপ্তরে দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের নির্মাণকাজের ঠিকাদারের কাছে চাঁদাবাজির বিষয়টি উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উঠেছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

রাজবাড়ীর নাগরিক কমিটির সভাপতি জ্যোতি শঙ্কর ঝন্টু বলেন, রাষ্ট্রের সবচেয়ে মানবিক জায়গা হলো হাসপাতাল। সেখানে কাজের জন্য চাঁদা চাওয়া রাষ্ট্রের জন্যই হুমকি। রাষ্ট্রের একমাত্র দায়িত্ব হলো, নাগরিকের নিরাপত্তা প্রদান করা। সরকারের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের উচিত ছিল বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিও করেন তিনি।

উল্লেখ্য, রাজবাড়ী জেলা সদরে রোগীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ২০১৮ সালে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে ৩ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮তলা পর্যন্ত হাসপাতালের লিফট স্থাপনের কাজ চাঁদা দাবির কারণে ব্যাহত হচ্ছে। 

আজকালের খবর/ এমকে








http://ajkalerkhobor.net/ad/1751440178.gif
সর্বশেষ সংবাদ
মাইলস্টোনের দুর্ঘটনায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক
নিহত, আহত ও নিখোঁজের ‘প্রকৃত সংখ্যা’ নির্ধারণে কমিটি
দুদকের মামলায় খালাস পেলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যানি
অপরাধ করলেই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল, ভবিষ্যতে প্রবেশ নিষিদ্ধ
কুমিল্লায় এনসিপির কর্মসূচি বিকেলে
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, পূর্বেও দিয়েছেন জরিমানা
মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের পাশে জালালাবাদ এসোসিয়েশন
কোটালীপাড়ায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষিত
বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ছায়াবীথি সোসাইটি স্কুলে বিশেষ দোয়া
ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় মর্মাহত চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Follow Us
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : গোলাম মোস্তফা || সম্পাদক : ফারুক আহমেদ তালুকদার
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : হাউস নং ৩৯ (৫ম তলা), রোড নং ১৭/এ, ব্লক: ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮-০২-৪৮৮১১৮৩১-৪, বিজ্ঞাপন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৯, সার্কুলেশন : ০১৭০৯৯৯৭৪৯৮, ই-মেইল : বার্তা বিভাগ- newsajkalerkhobor@gmail.com বিজ্ঞাপন- addajkalerkhobor@gmail.com
কপিরাইট © আজকালের খবর সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft