প্রকাশ: সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলতে বারণ করায় শিক্ষকের উপর হামলা চালিয়েছে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।এমন নেক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার(২০ জুলাই) রাতে উপজেলার নৈয়ারবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে।এঘটনায় সোমবার(২১ জুলাই) সকালে শিক্ষকের উপরে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।সরেজমিনে গেলে স্হানীয়রা জানান অংকের বিএসসি শিক্ষক পীযুষ কান্তি বিশ্বাস দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে খুব সুনামের সহিত নৈয়ারবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন।তিনি তার চাকুরী জীবনে কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি কিন্তু গতকাল রবিবার রাতে বিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থী এবং তার অভিভাবকরা মিলে পীযুষ স্যারের বাসায় গিয়ে ভাত খাওয়ার সময় তার উপরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে।যাহা চরম নিন্দনীয় এবং ক্ষমার অযোগ্য।
দিণেশ সরকার বলেন গতকাল রবিবার রাত ৮ টার দিকে শিক্ষক পীযুষ কান্তি বিশ্বাস হুমকির ভয়ে আমার বাড়িতে আশ্রয় নিতে আসে।তখন বিশ্বজিৎ বাড়ৈ স্হানীয় সুধাবিন্দ বাড়ৈ ও সরজ বাড়ৈ ও উপস্থিতিতে পীযুষ স্যারকে সাহস দিয়ে আমার বাড়ি থেকে রাত ৯ টার দিকে তার ( স্যারের)বাসায় নিয়ে যান।এরপর রাত ১০ টার দিকে স্যার তার বাসায় রাতের খাবার ভাত খেতে ছিল এসময় সাবেক শিক্ষার্থী লাবনি হালদার,তার ভাই সজিব হালদার,বাবা সুভাষ হালদার ও মা মমতা হালদার স্যারের উপরে হামলা করে তাকে গুরুতর আহত করে।বিদ্যালয়ের দপ্তরি সঞ্জিত বাড়ৈ বলেন গতকাল রবিবার ২০ জুলাই রাত ১০ টার দিকে আমাদের নৈয়ারবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক পীযূষ কান্তি বিশ্বাস পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে বলেন সাবেক শিক্ষার্থী লাবনী হালদারকে তার বাসার টয়লেট এর কাছে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করায় তার পরিবারের অভিভাবক সুভাষ হালদার,ছেলে সজিব হালদার,মা মমতা হালদার ও মেয়ে লাবনী হালদার মিলে স্যারের উপরে এবং স্যারের পরিবারের উপরে হামলা করে আহত করেন।এরআগে ওই বিদ্যালয়ের ৯ ম শ্রেণীর সাবেক শিক্ষার্থী লাবনী হালদার পীযুষ কান্তি বিশ্বাস স্যারের বাসার টয়লেট এর কাছে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলে আসছিল।এবং প্রতিনিয়ত টয়লেট এর কাছে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে স্যার বাহিরে যেতে(টয়লেটে) যেতে বিব্রত বোধ করতো।এবং তাকে তার বাসার টয়লেটের কাছে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বারণ করেন।এতে লাবনী হালদার স্যারের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় তার পরিবারের এবং অন্যান্য লোকজন নিয়ে পীযুষ কান্তি বিশ্বাসকে হুমকি প্রদান করেন এবং রাতে পীযুষ কান্তি বিশ্বাস এবং তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করেন।হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে নৈয়ারবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক পীযুষ কান্তি বিশ্বাস বলেন আমাদের বিদ্যালয়ের ৯ ম শ্রণীর সাবেক শিক্ষার্থী লাবনী হালদার প্রায় সময় আমার বাসায় টয়লেট এর কাছে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলে আসছিল।
আমার টয়লেট এর কাছে বসে কথা বলার কারণে টয়লেটে যেতে আমি সংকোচ বোধ করি এবং আমি তাকে আমার বাসার টয়লেট এর কাছে বসে কথা বলতে বারণ করি এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় লাবনী হালদার তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমার বাসায় এসে আমার হাত ধরে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যেতে চায় এবং টানাটানি করে হুমকি প্রদর্শন করে। তখন আমি ভয়ে পাশের বাড়ি গিয়ে আশ্রয় গ্রহন করি।এরপর বিশ্বজিৎ বাড়ৈ আর কোন সমস্যা হবেনা বলে আমাকে সাহস দিয়ে পুণরায় বাসায় নিয়ে আসেন।এরপর রাত ১০ টার দিকে লাবনী হালদার, ভাই সজিব হালদার, বাবা সুভাষ হালদার, মা মমতা হালদার সহ কয়েকজন লোক এসে আমার ঘরের জানালা দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে আমার এবং আমার পরিবারের উপর হামলা করে।পরে আমি উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করি।নৈয়ারবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন-পীযুষ স্যার কিছুদিন আগে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে টাস খেলতে নিষেধ করে এবং নবম শ্রেণির সাবেক এক শিক্ষার্থীকে তার বাসায় টয়লেট এর কাছে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বারণ করেন এ কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে লাবনী হালদার,ভাই সজিব হালদার, বাবা সুভাষ হালদার ও মা মমতা হালদারসহ কয়েকজন লোক নিয়ে গতকাল রবিবার সন্ধ্যার দিকে তার বাসায় গিয়ে হুমকি দেয় এবং পুণরায রাত ১০ টার দিকে তার বাসায় গিয়ে ঘরের জানালা ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে তার উপর এবং তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়ে পীযুষ স্যারকে আহত করে।ঘটনাটি জানার সাথে সাথে আমি স্যারের সাথে যোগাযোগ করি এবং প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করার পরামর্শ দেই।বিষয়টি আমি তাতক্ষণিক ভাবে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে এবং সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানাই।এঘটনায় আজ সোমবার সকালে স্যারের উপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বিদ্যালয প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
আজকালের খবর/ এমকে