
সম্প্রীতির সঙ্গে পাহাড়কে এগিয়ে নিতে হবে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পাটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন,‘পাহাড়ে বৈষম্যের দেয়াল সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটেছে স্বার্থান্বেষীরা। বৈষম্যের দেয়াল দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে উন্নয়নের নামে ধান্ধাবাজি করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আর কোনো বৈষম্য-বিভাজন নয়। বৈষম্যহীন পাহাড় গড়তে চায় এনসিপি জানিয়ে এ সময় তিনি শান্তির পাহাড়ে সম্প্রীতির বিকল্প নেই’ বলে মন্তব্য করেন। সোমবার (২১ জুলাই ২০২৫) দুপুরে খাগড়াছড়িতে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পায়ে হেঁটে পদক্ষিণের পর শাপলা চত্বর মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচার, চাঁদাবাজ, লুটপাটকারীরা যেন আর মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে। মনে রাখতে হবে এদেশকে একটি সুষ্ঠ গণতন্ত্রের অধিকার বাস্তবায়নে এনসিপি কাজ করছে। এ সময় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৯৭২ সালে পাহাড়ের বহু ভাষাবাষীর সাংবিধানিক নিশ্চিত করা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতির সঙ্গে বিদ্বেষ জিইয়ে রাখা হয়েছিলো বলে তুলে ধরে পার্বত্যবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ে শান্তি সম্প্রীতি নিবাস তৈরি করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায় বলে জানান তিনি।
সমাবেশে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণ অঞ্চল) অ্যাডভোকেট মনজিলা ঝুমার সভাপতিত্বে এতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম যারা, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি, জ্যেষ্ঠ মুখ্য সমন্বয়কারী আব্দুল হান্নান মাসুদ অংশ নেন।
তিনি বলেন, পাহাড়ি-বাঙালিসহ সকল জনগোষ্ঠীকে স্বাধীনতার পর থেকে উন্নয়নের নাম ভাঙ্গিয়ে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে পার্বত্যবাসীকে নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায় বলে তিনি জানান।
একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সবার প্রত্যাশা মন্তব্য করে এদেশে সব ধর্মের, সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে বলেও তিনি নিশ্চয়তা দিয়ে গত ৫০ বছরে বিভাজন দিয়ে নানান অশান্তি জিইয়ে রেখে অন্য একটি পক্ষ বার বার সুবিধা নেওয়ার দুরভিসন্ধি করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তাই তৃতীয় পক্ষকে আর গেইম খেলার সুযোগ দেয়া হবে বলে তিনি জানিয়ে দেন।
খাগড়াছড়ির পদযাত্রা উপলক্ষে মহাসমাবেশে নাহিদ আরও বলেন, বাংলাদেশের ৭২ এর সংবিধান মুজিববাদী সংবিধান। এই সংবিধানে সব জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে এখানে অবাঙালি জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে বিবেদ তৈরি করা হয়েছিলো। সব বিভেদের ঊর্ধ্বে গিয়ে সব জনগোষ্ঠীকে মর্যাদা দিয়ে একটি নতুন সংবিধান তৈরি করতে চান বলে তিনি জানান তার বক্তব্যে।
এতে এনসিপির খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক বিপ্লব ত্রিপুরা, শাহ নেওয়াজ, আখলিমা আক্তার, সুবোধ চাকমা উপস্থিত ছিলেন। এতে খাগড়াছড়ি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত এনসিপির কর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে সমাবেশস্থল। অভিনন্দন বার্তার ব্যানার, ফেস্টুনসহ নানা আনুষ্ঠানিকতায় উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়ে উঠে পার্বত্য জনপদ খাগড়াছড়ি। পরে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য দোয়া মুনাজাত করা হয় এতে।
আজকালের খবর/ওআর