
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, বিগত দিনেও কিছু সিনিয়র নেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টির সঙ্গে বেঈমানী করেছিলো। এ কারণেই, জাতীয় পার্টি সাতবার ভেঙেছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মী সব সময় জাতীয় পার্টির সঙ্গেই ছিলো। তৃণমূল নেতাকর্মী কখনোই জাতীয় পাটির মূল স্রোতের বাইরে যায়নি।
তিনি বলেন, গত ২৫ জুন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন প্রকাশ করেছেন। সেই দিনই জাতীয় পার্টির আগামী দিনের পথচলার ফয়সালা হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করেন। কারন, ২০২১ সালে তিনি যে বক্তৃতা দিয়েছেন তা ২০২৪ সালে প্রতিফলিত হয়েছে। এখন যা বলছেন, তা আগামী দিনেও সঠিক প্রমাণিত হবে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে নব নিযুক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে ঢাকা মহানগর উত্তরের জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সবংর্ধনা দেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী আরো বলেন, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সততা ও স্বচ্ছতা জাজ্বল্যমান। ৫ বছর গুরুত্বপূর্ণ ২টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন, তার বিরুদ্ধে কেউ ১টি দুর্নীতির অভিযোগ করতে পারেনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারকে তিনি কর্তৃত্ববাদী সরকার বলতেন। আওয়ামী লীগ বারবার চেষ্টা করেও জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা করতে পারেনি। বাংলাদেশের সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৯ বছর রাষ্ট্রপতি ছিলেন, সেনাপ্রধান ছিলেন। পল্লীবন্ধু যখন ক্ষমতার শীর্ষে ছিলেন তাখন দেশের মানুষ রাষ্ট্রপতির স্নেহের ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে চিনতেন না। তিনি নিজ যোগ্যতা বলে বড় বড় পদে চাকরি করেছেন। কখনোই দুর্নীতি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। যতবার জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, ততবারই তিনি সততার শক্তিতে স্বমহিমায় ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বর্জন করেছিলেন। মন্ত্রী থেকেও বেশির ভাগ জাতীয় পার্টির ৯০ ভাগ প্রার্থীদের নিয়ে সেই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তখন সরকার জিএম কাদেরকে মন্ত্রীত্ব দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইচ্ছে করলে ২/৪ জনকে মন্ত্রী বানাতে পারতেন তিনি। কিন্তু ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে ৫টি বছর সংসদের বাইরে থেকে দেশ ও দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে অনেকেই বলেছিলেন এরশাদের মৃত্যুর পর আর জাতীয় পার্টি টিকবে না। শ্রম ও মেধা দিয়ে জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে শক্ত ভীতের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এমন বাস্তবতায় যদি কেউ কেউ বলেন, জিএম কাদের’কে অব্যাহতি দিয়ে দিবেন এটা শুধুই হাস্যকর। কারণ, জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতা-কর্মী গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর মূল শক্তি।
এমসয় ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, গতকালও একটি সংবাদ সম্মলনে বলা হয়েছে কাউন্সিলে হেরে যাবার ভয়ে নাকি জিএম কাদের কাউন্সিল করছেন না। কাউন্সিলে কারা থাকবেন? তৃণমূল নেতাকর্মীরাই তো থাকবেন। তৃণমূল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে জিএম কাদেরের পাশে আছেন। কাউন্সিলে জিএম কাদেরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতা করার মত প্রার্থী কে? নেতাকর্মীদের পাশে থেকে জাতীয় পার্টিকে আরো এগিয়ে নেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন ব্যরিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা সকল বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় যাবো। প্রত্যেকটি ইউনিটে বর্ধিত সভা করা হবে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশ ও মানুষের জীবনে উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। আগামী দিনে দেশ ও মানুষের জীবনে উন্নয়ন ঘটাবেন জাতীয় পার্টি চেয়রম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা আছে ও ২০২৪ সালে গণহত্যার ইতিহাস আছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির দেশ পরিচালনার সময়ে কোন গণহত্যার রেকর্ড নেই। তাই দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে নিরাপদ মনে করে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উন্নয়ন ও সুশাসনের কথা নিয়ে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় যাবো। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে বিমুখ করবে না।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগরের দক্ষিণের আহ্বায়ক মীর আব্দুস সবুর আসুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মো. মমতাজ উদদীন, ইঞ্জিনিয়ার মইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা নুরুল আজহার শামীম, মো. খলিলুর রহমান খলিল, মনির উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, মাননীয় চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারী খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান, দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মোড়ল জিয়াউর রহমান, সমরেশ মন্ডল মানিক।
সভায় সভাপতিত্ব করেন- জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মোঃ সামছুল হক এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম এর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা কাজী আবুল খায়ের, মোঃ আনিসউর রহমান খোকন, মাহমুদুল হাসান আলাল, মোঃ ইব্রাহিম খান, মোঃ নজরুল ইসলাম সর্দার, আক্তারুজ্জামান মাসুম, আবুল হোসেন, নাইমুল ইসলাম নয়ন, ফজলুল হক শিশির, হারুন পাটোয়ারী, আব্দুল বারেক, মো. এরশাদ, শফিকুল ইসলাম লিপন, নুরুল হক নুরু, সালেহ আহমেদ, মবিন হোসেন কিশোর।
আজকালের খবর/বিএস