ভোরের কাগজের অনলাইন এডিটর মিজানুর রহমান সোহেলকে গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও পরে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘অসত্য’ বলে দাবিকে করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেছেন, তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে ঢাকার বাসা থেকে সাংবাদিক সোহেলকে নিয়ে যাওয়ার পর ডিবি কার্যালয়ে প্রায় ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আজ সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিনের মাধ্যমে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের মন্তব্য গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো গণমাধ্যম আমার ওপর দায় চাপিয়েছে। তাদের উদ্দেশেই আমার বক্তব্য—এটা অনভিপ্রেত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজ করে। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকার অবকাশই নেই।’
ডিবির তল্লাশিতে নেওয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠে। এসব প্রকাশনার পরই তিনি তার অবস্থান পরিষ্কার করেন।
এদিকে, সোহেলের সঙ্গে নিজের কোনো ব্যক্তিগত বা পেশাগত সম্পর্ক নেই জানিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থেই আমরা এনইআইআর বাস্তবায়ন করছি। অবৈধ হ্যান্ডসেটের লাগাম টানতে সংক্ষুব্ধ পক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি বৈঠকও করেছে।’
দেশে অনিবন্ধিত মুঠোফোন ঠেকানো ও নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর ব্যবস্থাটি চালু হওয়ার কথা। এ ব্যবস্থা কার্যকর হলে আমদানি অননুমোদিত, নিবন্ধনবিহীন বা চুরি হওয়া ফোন নেটওয়ার্কে ব্যবহার বন্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ডিবিতে জিজ্ঞাসাবাদকে কেন্দ্র করে এনইআইআর বাস্তবায়নের সঙ্গে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে যুক্ত করে ‘সত্যের অপলাপ’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তাদের ভাষায়, এমন ‘প্রোপাগান্ডা’ মুক্তমত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করছে এবং ‘এ ধরনের অসত্য তথ্য প্রচার জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে’। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘তাই আশা করি, এরপর আর কেউ এ ধরনের লেখায় বিভ্রান্ত হবেন না।’
এদিকে, ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় ফেরার পর মিজানুর রহমান সোহেল ফেসবুকে দাবি করেন, সরকারের একজন উপদেষ্টার ইশারায় মাত্র ৯ জন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার জন্যই তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, এই ৯ জনের একজন ওই উপদেষ্টার স্কুল-বন্ধু।
তিনি আরও দাবি করেন, মাত্র ৯ জন ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে সারাদেশে ২৫ হাজার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে পথে বসানোর গভীর চক্রান্ত চলছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ, প্রবাসীসহ অনেকেই বিপদে পড়বেন। একটা চেইন ভেঙ্গে পড়বে। অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে যাবে।