প্রকাশ: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:২৬ পিএম
রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেটের পাশে সিটি করপোরেশনের বাজারের ভেতরের অংশে দুইটি ব্যক্তি মালিকানাধীন মার্কেট রয়েছে। যার একটি নাম পূবালী শপিং সেন্টার। এই মার্কেট সাড়ে ৩৪ শতাংশ জমিতে ১৭৬টি দোকান নিয়ে ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। দ্বিতীয়টি উত্তরা মার্কেট যা সাড়ে ১৬ শতাংশ জমিতে ৬৪ দোকান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। দুইটি মার্কেটে আলাদা আলাদা কমিটি ও ব্যবসায়ী সমিতি রয়েছে। এ দুইটি মার্কেটে অসংখ্য ব্যবসায়ী ও বিক্রয়কর্মী দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে ব্যবসা ও চাকরি করে জীবন নির্বাহ করছেন।
এদিকে ইতোমধ্যে ওই মার্কেট দখলে নেওয়ার জন্য একটি কুচক্র সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্টি পুরো মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, মো. শাহজালাল। রাজনীতি করতেন আওয়ামী লীগের। প্রকাশ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। অথচ পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর এখন হয়ে গেছেন বিএনপির সক্রিয় কর্মী। আওয়ামী শাসনামলে যা মন চাইতো তাই করতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন তিনি বিএনপি সেজেছেন। এখনো তিনি যা ইচ্ছা তাই করছেন, যা চাচ্ছেন তাই হচ্ছে। নিয়ম কানুন এমনকি প্রশাসনের নির্দেশনাকেও বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রভাব খাটাচ্ছেন। মূলত তার দৌড়-ঝাপেই একটি মার্কেটের সকল ব্যবসায়ী বিপাকে পড়েছেন।
আওয়ামী লীগের সময়ে শাহজালাল কখনো ব্যরিস্টার তাপস আবার কখনো বাহাউদ্দিন নাসিম; এমনকি জাহাঙ্গীর কবির নানকদের সঙ্গে মিছিল মিটিং করেছেন, ছবি তুলেছেন এবং নানারকম কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। ওইসব ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে নিয়েছেন নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দক্ষিণ খিলগাঁও পূবালী মার্কেট ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হেনস্থা করেছেন। সেখানকার বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন।
এমনকি মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও একজন পরিচালককে হাত করে মেয়র তাপসকে ম্যানেজ করে মার্কেটটি ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র করেন। মার্কেটটি এক পর্যায়ে ভেঙেও ফেলে। এরপর সেখানে ১০ তলা মার্কেট করে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যায়। মার্কেটের ৯৮ ভাগ জায়গা ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়া সত্ত্বেও মেয়র তাপস তা অবৈধ ঘোষণা দিয়ে মার্কেট ভাঙতে শুরু করেন। কিন্তু ৫ আগস্ট ঘটে যাওয়ায় সবার আশায় গুড়েবালি তৈরি হয়। পিছিয়ে যায় মার্কেট ভাঙার কাজ। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ীরা মার্কেট পুনরায় নির্মাণ শুরু করলে শাহজালাল ও তার তিন সহযোগী আতাউর ও বাচ্চু মুন্সিরা মিলে মার্কেটের পাশ দিয়ে চলাচলের রাস্তা সরকারি খাস জমি দখলে নিয়ে নতুন করে কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন।
এরইমধ্যে শাহজালাল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নেন। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিয়ে নিজেকে বিএনপির একনিষ্ট কর্মী প্রমাণের চেষ্টায় লিপ্ত আছেন। এখন তিনি নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবী করে কয়েকজন নেতার রেফারেন্স দিয়ে এসিল্যান্ড (রমনা) অফিস, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়-ঝাপ করছেন। সেখানে বলার চেষ্টা করছেন এই অতিরিক্ত মার্কেট বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ীরাই করছেন। কিন্তু সত্য হলো, মার্কেটের অতিরিক্ত রাস্তা বন্ধ করে মার্কেট নির্মাণকাজ ব্যবসায়ীদের কেউই চাচ্ছেন না। এ নিয়ে গণমাধ্যম অবৈধ মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করা হোক মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হলে শাহজালাল ওইসব মিডিয়া হাউজে গিয়ে তদবির করছেন। বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি টাকার প্রলোভনও দেখাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে শাহজালালকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি তা না ধরায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আজকালের খবর/এসআই