
নদী পথে আবারও হুঁইসেল বাজিয়ে দাঁপিয়ে বেড়াবে কমলা রকেটখ্যাত শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদ। ইতিমধ্যে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করে পুনরায় চলাচল উপযোগী করা হয়েছে জাহাজটিকে, শুক্রবার নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম শাখাওয়াতের উপস্থিতিতে এই পরীক্ষা চালানো হয়।
প্রাথমিকভাবে রাজধানীর সদরঘাট থেকে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটে ‘পিএস মাহসুদ’-এর পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু হয়।
এ সময় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদ।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘স্টিমারটি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ট্রায়াল ট্রিপের মাধ্যমে যান্ত্রিক ও নেভিগেশন সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বর জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে পিএস মাহসুদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এরপর এটি নিয়মিত পর্যটন সার্ভিস হিসেবে চলাচল শুরু করবে।’
উপদেষ্টা জানান, পিএস মাহসুদের পাশাপাশি পিএস অস্ট্রিচ, পিএস লেপচা ও পিএস টার্নসহ আরো কয়েকটি পুরনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। লক্ষ্য হলো নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনাকে বিস্তৃত করা। একসময় নদী ছিল বাঙালির জীবনরেখা। আমরা চাই, মানুষ আবার নদীর সঙ্গে সেই সম্পর্ক নতুনভাবে আবিষ্কার করুক। পিএস মাহসুদ সেই সম্পর্কেরই প্রতীক হয়ে ফিরছে।
বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ জানিয়েছেন, স্টিমারটি প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে বরিশাল ও শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে চলবে। এটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় মূল কাঠামো ও ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ন রেখে ইঞ্জিন, নিরাপত্তা ও ফায়ার সেফটি সিস্টেম সম্পূর্ণ নবায়ন করা হয়েছে। এতে রয়েছে আধুনিক কেবিন, পর্যটকবান্ধব ডেক এবং ডিজিটাল নেভিগেশন ব্যবস্থা।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে এতে সংযোজন করা হয়েছে জানিয়ে চেয়ারম্যান উপস্থিত গণমাধ্যমকে জানান, আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, লাইফ বোট, ফায়ার সেফটি ও জিপিএস ব্যবস্থা। ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়েছে কম ধোঁয়া নির্গমনকারী প্রযুক্তি, যা নদীপথে দূষণ হ্রাসে সহায়ক হবে। স্টিমার পরিচালনায় থাকবেন ২৫ জন প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও নাবিক।
এদিকে, পিএস মাহসুদকে সংষ্কার করে পুনরায় চলাচল উপযোগী করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ। এটি সংস্কার করতে খরচের পরিমাণ এদিন উল্লেখ না করলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিসির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাহসুদকে সংস্কার করতে তিন কোটি টাকার কিছু বেশি খরচ হয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে এই সংষ্কার কার্যক্রম কাজে আসবে না, সেজন্য বিআইডব্লিউটিসির স্বচ্ছ্বতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে এদিন অন্যান্যদের মাঝে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
আজকালের খবর/আতে