প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫:৩৮ পিএম

ঢাকায় দুই যুবকের মধ্যে মারামারির জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আমীর আলী (৪০) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার দাঁতমন্ডল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আমীর আলী উপজেলার দাঁতমন্ডল গ্রামের মো. রফিজ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, ঢাকার কেরানীগঞ্জে দাঁতমন্ডল গ্রামের মহিদ আলীর ছেলে সুজন মিয়ার একটি ব্যাগের কারখানা আছে। গত ১ সপ্তাহ আগে সেখানে যান দাঁতমন্ডল গ্রামের মো. লাফিলুদ্দির ছেলে মো. সাকিল। সে সময় সাকিল কারখানায় সুজনের এক কর্মচারীকে লাঞ্চিত করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুজন ও সাকিলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সুজনকে মারধর করা হয়। এ ঘটনার কিছুদিন পর ঢাকা থেকে দুজনই নিজ বাড়ি নাসিরনগর উপজেলা দাঁতমন্ডলে আসেন। ঢাকার মারামারিকে কেন্দ্র করে গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় সম্প্রতি থানায় একটি মামলা হয়। গতকাল বুধবার সকালে মামলা ও মারধরের বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করতে উভয়পক্ষ শালিসে বসেন। কিন্তু, সালিশে বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। এ ঘটনার জের ধরে বুধবার বিকেলে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে দুইপক্ষের লোকজন ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় সুজনের পক্ষের আমীর আলী নামে এক যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে আমীর আলীর মৃত্যুর খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের সাকিলের পক্ষের লোকজন গ্রামের জালাল উদ্দিনের বাড়িসহ ১০টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। জালাল উদ্দিনের মেয়ে সুলতানা আক্তার জানান, ‘আমির আলী নিহত হওয়ার পর প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করে। বাড়ি থেকে ৮টি গরু, ৪টি ছাগল ও নগদ ২ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। আমরা আতঙ্কে আছি, বাড়িঘরে থাকতে পারতেছি না।’
নিহত আমির আলীর চাচাতো ভাই সুজন বলেন, আমরা লাশ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কে বা কারা লুটপাট ভাঙচুর করেছে তা আমরা জানি না।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তানভীর আহমেদ বলেন, ঢাকায় একটি মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন মারা যাওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। তবে কিভাবে মারা গেছে ময়নাতদন্ত ছাড়া কিছুই বলা যবে না। আমরা নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি।
তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
আজকালের খবর/ওআর