মো. জায়েদ হোসেন,দশমিনা (পটুয়াখালী)
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

পটুয়াখালীর দশমিনায় শিক্ষক দম্পতিকে লাঞ্চিতের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইরতিজা হাসানের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ অপসারণের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধন ও সড়কে অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি বিদ্যালয়টির প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ মাঠে এসে অবস্থান নেয়। সেখানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে সড়ক অবরোধ করে রাখায় দুপাশে দূরপাল্লার পরিবহনসহ অসংখ্য যানবাহন আটকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ছোট ছোট যানবাহনগুলো বিকল্প সড়কে চলতে পারলেও আটকে যায় বড় বড় বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও ট্রাক।
জানা যায়, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. এহসানুল হক ও তার স্ত্রী দশমিনা বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মাজেদা বেগমকে তাদের বাড়ির জায়গা ও অফিসার্স ক্লাবের জায়গার সীমানা বিরোধ সংক্রান্তে নিজ অফিসে ডেকে নিয়ে অশ্লীল ও অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে লাঞ্চিত করেন ইউএনও ইরতিজা হাসান।
এসময় ইউএনও ওই শিক্ষক দম্পতিকে গ্রেফতার ও তাদের বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে নিজের মোবাইল ফোন টেবিলের ওপর ছুড়ে মারেন। পাশে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিঠুন চন্দ্র মিন্টু এসময় ওই শিক্ষকদ্বয়ের সাথে তর্কবিতর্ক করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে রাতেই ওই স্কুল দুইটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়াতে ইউএনও'র বিরুদ্ধে বিভিন্ন পোস্ট দিতে থাকেন। পরে গভীর রাতে ওই শিক্ষক দম্পতির বাসভবনে অফিসের কর্মচারী পাঠিয়ে বিষয়টি সুরাহা করা হয়েছে মর্মে তাদের বিবৃতি প্রদানের ভিডিও ধারন করে তা স্থানীয় ফেসবুক পেজ দশমিনা প্রতিদিনে প্রকাশ করা হয়।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সুধীজনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বুধবার সকাল ১১ টা থেকে এসব কর্মসূচি পালন করেন।
ইউএনও ইরতিজা হাসানকে প্রকাশ্যে ওই দুই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং অনতিবিলম্বে দশমিনা থেকে থেকে প্রত্যাহার করতে হবে এমন দাবী করে বিক্ষোভকারীরা বলেন, আমাদের দাবী অতি শীঘ্রই মানা না হলে আগামীকাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, এর আগেও ইউএনও ইরতিজা হাসান দুই শিক্ষকের সঙ্গে যথেষ্ট দুর্ব্যবহার করে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর হুমকি দিয়েছে।
এসময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, ইউএনও ইরতিজা হাসান পার্সেন্টেজ ছাড়া কোনো কাজ করেনা। নিয়মিত অফিস করেনা।
এ ব্যাপারে জানতে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সরকারি মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আজকালের খবর/ এমকে