চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের মূলহোতা ভারতীয় নাগরিককে যৌথ অভিযানে আটক করেছে কোস্ট গার্ড ও সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার ১২ আগস্ট ২০২৫ তারিখ বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন শেখেরখীল এলাকার একটি গোডাউনে ফিশিং বোটের নিষিদ্ধ ‘আর্টিসনাল ট্রলিং সরঞ্জাম’ তৈরির কাজ চলছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আজ ১২ আগস্ট ২০২৫ তারিখ মঙ্গলবার মধ্যরাত সাড়ে ১২ টায় কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট বাঁশখালী ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে উক্ত এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন একটি গোডাউনে তল্লাশী চালিয়ে নিষিদ্ধ ট্রলিং জাল তৈরির সময় প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ৭ টি অবৈধ ট্রলিং জাল, ১৭ হাজার টাকা মূল্যের ৩৪ পিস ইয়াবা, ৩০০ টাকা মূল্যের ১০ গ্রাম গাঁজা ও নগদ ৭৩ হাজার ২৩০ টাকাসহ ৩ জন বাংলাদেশী কারিগর এবং নিষিদ্ধ ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের মূলহোতা ১ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তিরা অমল চন্দ্র (৪৫) -বরগুনার, নাথন বিশ্বাস (৬০) -মোংলা ও আকাশ বিশ্বাস (৩৫) সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা। এছাড়া পণ্ডিত বিশ্বাস (৩৮) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়।
আটককৃত ভারতীয় নাগরিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত গোডাউনের মালিক মান্নান মিয়ার বাড়িতে তল্লাশী করে উক্ত ব্যক্তির একটি ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটককৃত পণ্ডিত বিশ্বাস বাংলাদেশে দীর্ঘদিন যাবৎ ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ‘আর্টিসনাল ট্রলিং’ সরঞ্জাম স্থাপন করে আসছিলো। উক্ত ব্যক্তি গত ১৯ অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে নিয়মিত বাংলাদেশে যাতায়াত করতো। সর্বশেষ গত ২ মে ২০২৫ তারিখ পূনরায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে প্রথমে বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় এবং পরবর্তীতে গত ২৫ জুলাই ২০২৫ তারিখ হতে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিভিন্ন ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ করছে। তাঁর বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, কাঠের তৈরি ফিশিং বোটে অবৈধভাবে ট্রলিং সরঞ্জাম ও ছোট ফাঁসের ‘বেহুন্দি জাল’ স্থাপন করে যান্ত্রিক ‘ট্রলিং ট্রলারে’ রূপান্তর করা হয়। যার ফলে প্রবাল, সামুদ্রিক গাছপালা ও পোনামাছ ধ্বংস হয়ে ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শূন্যতার আশঙ্কা তৈরি করছে।
জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত আসামীদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশীল করার লক্ষ্যে সমুদ্র, উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
আজকালের খবর/ এমকে