তিন বছর পর ওমান থেকে দেশে আসেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন। তাকে আনতে পরিবারের ১২ সদস্য মাইক্রোবাসযোগে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাস খালে পড়ে পরিবারটির সাত সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন।
আজ বুধবার ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাজার এলাকায় লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে খালে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে বাহারকে আনার জন্য মাইক্রোবাসযোগে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে যান।
বেঁচে ফেরা প্রবাসী বাহার উদ্দিন ও আব্দুর রহিম জানান, ঘুম চোখে নিয়ে মাইক্রোবাস চালাচ্ছিল চালক রাসেল। বারবার বলা সত্ত্বেও গাড়ি থামিয়ে সামান্যও বিশ্রাম নেননি তিনি। এর আগে কুমিল্লায় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে আসে। তিনি আরো বলেন, বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার আগে চালক গাড়িটি সড়কের পাশে খালে ফেলে দেন। তখন চালককে গাড়ির লক খুলতে বললেও খুলে দেননি। তবে তিনি নিজে গাড়ির কাচ নামিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যান। একপর্যায়ে গাড়ি থেকে প্রবাসী বাহার, তার বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবি সুইটি ও শ্যালক রিয়াজ বের হয়ে আসেন। তবে বাঁচতে পারেননি বাহারের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা কবিতা (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)। নিহতরা সবাই লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির বাসিন্দা। আহত পাঁচজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আসেন।
এদিকে, বেলা ১০টার দিকে নিহত সাতজনের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছলে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্বজনরা। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। তবে বেঁচে যাওয়া বাহার উদ্দিন, তার বাবা আবদুর রহিম ও শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও সাতজন ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান। মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। চালককে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পাশাপাশি পুরো ঘটনাটি তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজকালের খবর/ওআর